1. [email protected] : শেয়ারবার্তা প্রতিবেদক : শেয়ারবার্তা প্রতিবেদক
  2. [email protected] : শেয়ারবার্তা : nayan শেয়ারবার্তা
  3. [email protected] : news uploder : news uploder
ঋণ জালিয়াতির পর বন্ড সুবিধার অপব্যবহার
বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৫ পিএম

ঋণ জালিয়াতির পর বন্ড সুবিধার অপব্যবহার

  • আপডেট সময় : বৃহস্পতিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২০
Anontex

জালিয়াতি করে ঋণ নিয়ে বেকায়দায় অ্যাননটেক্স গ্রুপ। জালিয়াতির রেশ এখনও কাটেনি। এরই মধ্যে সুপ্রভ কম্পোজিট নিট লিমিটেড নামে গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বন্ড সুবিধার অপব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। তৈরি পোশাক খাতের প্রতিষ্ঠানটি শুল্কমুক্ত সুবিধার বিপুল পরিমাণ কাঁচামাল খোলাবাজারে বিক্রি করে দিয়েছে।

শুল্ককর ফাঁকি দিতেই প্রতিষ্ঠানটি চোরাপথে এসব কাঁচামাল বিক্রি করে দিয়ে আসছে। সম্প্রতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) পরিদর্শনে ফাঁকির বিষয়টি উঠে এসেছে। প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স স্থগিত ও বিআইএন লক করা হয়েছে। লাইসেন্স কেন বাতিল করা হবে না, সে বিষয়ে কারণ দর্শানোর নোটিস জারি করা হয়েছে।

এনবিআর তথ্যমতে, ২০১২ সালে বন্ড লাইসেন্স পায় সুপ্রভ কম্পোজিট নিট লিমিটেড। গাজীপুরের ভাদাম, নিশাতনগর ও টঙ্গী এলাকায় অ্যাননটেক্স গ্রুপের প্রতিষ্ঠানটি অবস্থিত। বন্ড লাইসেন্স পাওয়ার পর থেকে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে বন্ড সুবিধার অপব্যবহারের অভিযোগ ওঠে। এনবিআরের নির্দেশে গত ৮ ডিসেম্বর ঢাকা কাস্টমস বন্ড কমিশনারেটের একটি টিম (নিবারক দল) প্রতিষ্ঠানটি পরিদর্শন করে। পরিদর্শনে প্রতিষ্ঠানে বন্ড সুবিধায় আমদানি করা ৮৫ লাখ ১০ হাজার ৮১৫ কেজি বিভিন্ন ধরনের কাঁচামাল কম পাওয়া যায়। এসব কাঁচামাল ২০১৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০১৯ সালের ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করা হয়েছে। এসব কাঁচামাল প্রতিষ্ঠানটি অপসারণ করে চোরাপথে খোলাবাজারে বিক্রি করে দিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সূত্র আরও জানায়, এসব কাঁচামালের শুল্কায়নযোগ্য মূল্য প্রায় ৭৬ কোটি ৮৪ লাখ ৫৫ হাজার টাকা। এর ওপর প্রযোজ্য শুল্ককর প্রায় ৩৫ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। অবৈধভাবে কাঁচামাল অপসারণ করে প্রতিষ্ঠানটি কাস্টমস আইন, ১৯৬৯ এবং বন্ডেড ওয়্যারহাউস লাইসেন্সি বিধিমালা, ২০০৮ লঙ্ঘন করেছে। সে অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটিকে দণ্ডারোপসহ প্রযোজ্য শুল্ককর আদায়যোগ্য। বন্ড সুবিধার অপব্যবহার করায় আইন অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটির লাইসেন্স স্থগিত (সাসপেন্ড) এবং বিআইএন (বিজনেস আইডেন্টিফিকেশন নাম্বার) লক করা হয়েছে। একই সঙ্গে লাইসেন্স কেন চূড়ান্তভাবে বাতিল করা হবে না, তার কারণ ব্যাখ্যা করতে প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে ২১ জানুয়ারি নোটিস দেওয়া হয়েছে। আগামী ১ মার্চ শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।

বন্ড কমিশনারের সূত্র জানায়, প্রতিষ্ঠানটি প্রায়ই কাঁচামাল আমদানি করে তা দিয়ে পণ্য তৈরি না করে সরাসরি খোলা বাজারে বিক্রি করে আসছে। প্রতিষ্ঠানটি একই কায়দায় কাঁচামাল অপসারণ করে শুল্ককর ফাঁকি দিয়েছে কি না, সেজন্য প্রতিষ্ঠানের বন্ডিং কার্যক্রম খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে এর আগেও প্রায় ৪৫ কোটি ৯৩ লাখ টাকার শুল্ককর ফাঁকি উদ্ঘাটন করেছে বন্ড কমিশনারেট। সুপ্রভ কম্পোজিট নিট মূলত টি-শার্ট তৈরি ও বাজারজাত করে। এছাড়া পলো টি-শার্ট, ট্যাঙ্ক টপ, জার্সি শর্টস, সুইম শর্টস, হোড জার্সি প্রভৃতি তৈরি করে।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে অ্যাননটেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ইউনুস বাদলের ব্যক্তিগত মোবাইলে ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। খুদে বার্তা পাঠালেও তিনি জবাব দেননি।

প্রাপ্ত তথ্যমতে, আলোচিত অ্যাননটেক্স গ্রুপ নামে-বেনামে ২২টি প্রতিষ্ঠানের নামে রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংক থেকে পাঁচ হাজার ৬০০ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। ঋণ মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার পরই তা পরিশোধে তালবাহানা শুরু করে। ২২টির মধ্যে ১৮টি ঋণের কথাই অস্বীকার করেন অ্যাননটেক্স গ্রুপের মো. ইউনুস বাদল। তিনি মাত্র চারটি প্রতিষ্ঠানের মালিক বলে জানিয়েছেন। ঋণ থেকে বাঁচতে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। কিন্তু আদালত জানিয়ে দিয়েছেন, ২২টি ঋণ তাকেই পরিশোধ করতে হবে। এর পরও তিনি ঋণ পরিশোধে আগ্রহী নন। ইউনুছ বাদলের সরাসরি সম্পৃক্ততা রয়েছে গ্যালাক্সি সোয়েটার্স অ্যান্ড ইয়ার্ন ডায়িং, সুপ্রভ কম্পোজিট নিট, সিমরান কম্পোজিট এবং লামিসা স্পিনিংয়ে। এই প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে ব্যাংকের পাওনা দুই হাজার ২৮১ কোটি টাকা। বাকি প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকানায় বাদলের বাবা, স্ত্রী, ভাই, ভাবিসহ পরিবারের অন্যদের নাম রয়েছে, যদিও সব প্রতিষ্ঠানের সুবিধাভোগী ইউনুছ বাদল।

শেয়ারবার্তা/ সাইফুল

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:

ভালো লাগলে শেয়ার করবেন...

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ