দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক খাত হিসাবে পরিচিত বীমা খাত। কিন্তু দেশের প্রেক্ষাপটে বীমার প্রতি জনগণের আস্থা তেমন নেই। তাই বীমার ব্যাপ্তি বৃদ্ধির লক্ষ্যে ও জনমনে বীমা সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা তৈরির উদ্দেশ্যে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। এ কার্যক্রমকে আরও বেগবান করতে ১ মার্চকে ‘জাতীয় বীমা দিবস’ ঘোষণা করা হয়েছে।
বীমা খাত জনমনে সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা তৈরির লক্ষ্যে যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতীয় বীমা দিবস উদযাপন জন্য সংশ্লিষ্টদের নিয়ে প্রস্তুতিমূলক সভা করেছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব আসাদুল ইসলাম। গত ২৮ জানুয়ারি অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বেশকিছু সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় বলে সভার কার্যপত্র সূত্রে জনা গেছে।
সভার শুরুতেই জানানো হয়, বীমা দেশের একটি সম্ভাবনাময় গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক খাত। বীমার ব্যাপ্তি বৃদ্ধির লক্ষ্যে ও জনমনে বীমা সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা তৈরির উদ্দেশ্যে সরকার কর্তৃক বিভিন্ন পদক্ষেপ যেমন- বীমা মেলা, দেশব্যাপী বীমা সম্পর্কিত সভা, সেমিনার, শোভাযাত্রা, বীমা দাবি পরিশোধের জন্য অনুষ্ঠান ইত্যাদি নিয়মিত আয়োজন করা হয়ে থাকে। এ কার্যক্রমকে আরও বেগবান, বিশেষত করে তৃণমূল পর্যায়ে বীমার বিস্তৃতি, জনসম্পৃক্ততা তথা জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ‘জাতীয় বীমা নীতি, ২০১৪’-এ জাতীয় বীমা দিবস চালুর কথা বলা হয়েছে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬০ সালের ১ মার্চ তৎকালীন আলফা ইস্যুরেন্স কোম্পানিতে যোগদান করেছিলেন। বীমা কোম্পানিতে জাতির পিতার যোগদানের এই তারিখকে স্মরণীয় করে রাখার উদ্দেশ্যে ১ মার্চকে ‘জাতীয় বীমা দিবস’ ঘোষণা করা হয়েছে এবং তা প্রতিবছর ‘খ’ ক্যাটাগরিতে পালনের জন্য গত ৮ জানুয়ারি মন্ত্রিপরিষদ অনুমোদন প্রদান করে। এ প্রেক্ষাপটে প্রথমবারের মতো এ বছরে দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের লক্ষ্যে কার্যকর প্রস্তুতি গ্রহণ করতে এ সভার আয়োজন করা হয়। পরে আলোচ্যসূচি অনুযায়ী আলোচনা শেষে বেশকিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
সিদ্ধান্তগুলো হচ্ছে- ‘বীমা দিবসে শপথ করি নিরাপদ জীবন গড়ি’- এ বছরের বীমা দিবসের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে। এ বিষয়টি জানাতে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) একটি প্রস্তুতিমূলক ব্রিফিং চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ে আয়োজন করবে এবং বীমা দিবসের কয়েক দিন আগে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ আরেকটি প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করবে।
আরও সিদ্ধান্ত হয়, বীমা বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে টকশো আয়োজনসহ অন্যান্য ডিজিটাল মিডিয়া ক্যাম্পেইনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এছাড়া টেলিভিশনে স্ক্রল প্রদানের ব্যবস্থাও নেয়া যেতে পারে। বীমা দিবস উপলক্ষে মানসম্মত লেখা ও আলোকচিত্র সম্বলিত একটি উন্নতমানের স্যুভেনির প্রকাশ করতে হবে।
দিবসটি উদযাপনের জন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিবের স্বাক্ষরে একটি ডিও পত্র প্রেরণ করতে হবে এবং জেলা ও উপজেলা প্রশাসনকে সহযোগিতা প্রদানের নির্দেশনা প্রদানের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে পত্র পাঠাতে হবে।
‘বিভাগ, জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে দিবসটি উদযাপনের জন্য আইডিআরএ কর্তৃক জীবন বীমা করপোরেশন (জীবীক), সাধারণ বীমা করপোরেশন (সাবীক), বাংলাদেশ ইনস্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশন (বিআইএ), বাংলাদেশ ইনোভেশন ফোরামকে (বিআইএফ) পত্র পাঠাতে হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ব্যানার, ফেস্টুন, প্রচারপত্র তৈরি করে তা ঢাকাসহ সকল বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা হেডকোয়ার্টারে পৌঁছাতে হবে। সড়ক দ্বীপ ও পাবলিক প্লেসে বিলবোর্ড স্থাপন করা হবে।’
‘বীমা দিবসের মূল অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচারসহ ব্যাপক প্রচারণার লক্ষ্যে মিডিয়া পার্টনার নির্বাচনসহ দিবসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরে ব্যাপক প্রচারণার কার্যক্রম গ্রহণের জন্য তথ্য মন্ত্রণালয় এবং প্রিন্ট মিডিয়া ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
শেয়ারবার্তা / মিলন