পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত দেশের সবচেয়ে বড় মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোন বলছে, তাদের হাতে যে পরিমাণ সিম আছে, তা নিয়ে সপ্তাহ দুয়েক চলবে। খুচরা পর্যায়ে যে সিম আছে, তা দিয়ে আরও কয়েক সপ্তাহ চলবে। মোট ছয় সপ্তাহ পর তারা সিম–সংকটের আশঙ্কা করছে। তাদের ভাষায় এটা পেঁয়াজের মতো হতে পারে।
রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় জিপি হাউসে আয়োজিত আজ (সোমবার) এক মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিম–সংকটের কথা জানান গ্রামীণফোনের নতুন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইয়াসির আজমান। তিনি বলেন, গ্রামীণফোন বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) কাছ থেকে গ্রাহকের অব্যবহৃত পুরোনো সিম বিক্রির অনুমোদন পাচ্ছে না। বিটিআরসির কাছে প্রায় ৩০ লাখ সিমের অনুমোদন আটকে আছে। তাঁদের হাতে থাকা সিমও শেষ দিকে।
গ্রামীণফোনের সিইও আরও বলেন, তাঁদের দিনে প্রায় ৫০ হাজার নতুন সিম দরকার। হাতে থাকা সিম ফুরিয়ে যাওয়ার পর প্রায় চার লাখ খুচরা বিক্রেতার কাছে থাকা সিম বিক্রি হবে। সিমের দাম বেড়ে যেতে পারে। সব মিলিয়ে একটা খারাপ পরিস্থিতি আসছে।
১২ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা পাওনা আদায়ের পদক্ষেপ হিসেবে গ্রামীণফোনকে সরঞ্জাম আমদানি ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনাপত্তিপত্র (এনওসি) দেওয়া বন্ধ রেখেছে বিটিআরসি। এ নিয়ে রিট সর্বোচ্চ আদালতে বিচারাধীন। অনাপত্তি ছাড়া বন্ধ থাকা সিম বিক্রি করতে পারে না কোনো অপারেটর। নিয়ম অনুযায়ী, একাধারে ১৫ মাস সিম বন্ধ থাকার পর সেটি বিক্রি করতে পারে অপারেটর।
২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে গ্রামীণফোন ০১৩ সিরিজের ২ কোটি নম্বর বরাদ্দ পায়। বিটিআরসির সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, গত ডিসেম্বরে গ্রামীণফোনের গ্রাহকসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭ কোটি ৬৪ লাখ ৬২ হাজার।
ইয়াসির আজমান জানান, বিটিআরসির নিষেধাজ্ঞা কাটাতে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে তারা যে রিভিউ আবেদন করেছে, তার শুনানির দিন এখনো ঠিক হয়নি। গত ২৬ জানুয়ারি গ্রামীণফোন ৫৭৫ কোটি টাকা ১২টি কিস্তিতে দেওয়ার সুযোগ চেয়ে রিভিউ আবেদনটি করে।
এর আগে গত ২৪ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ এক রায়ে গ্রামীণফোনকে ২ হাজার কোটি টাকা জমা দিতে বলেছিলেন। এতে বলা হয়েছিল, গ্রামীণফোন তিন মাসের মধ্যে ওই টাকা জমা দিলে সরঞ্জাম আমদানি ও প্যাকেজ অনুমোদনে বিটিআরসির নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করে হাইকোর্টের যে নির্দেশ রয়েছে, তা বহাল থাকবে। এর মানে হলো, গ্রামীণফোন সরঞ্জাম আমদানি করতে পারবে।
ইয়াসির আজমান আশা প্রকাশ করেন, বিষয়টি দ্রুতই সুরাহা হবে।
ইতিমধ্যে আরেক অপারেটর রবি উচ্চ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী কিস্তি দিয়ে নিষেধাজ্ঞা কাটিয়েছে।
শেয়ারবার্তা / আনিস