অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ‘আগামী পাঁচ বছরে দেশের ভেতরে এবং বাইরে মোট ১০.৫ মিলিয়ন তথা প্রায় ১ কোটি কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। এ সময়ের মধ্যে মেগা প্রজেক্টগুলো বাস্তবায়নের মাধ্যমে এ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হবে। ব্যবসা, ম্যানুফ্যাকচারিং ও রফতানিবান্ধব ট্যাক্স-রেজিম সৃষ্টি করা হবে।’
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে দুই দিনব্যাপী এক বৈঠকের সমাপনী অনুষ্ঠান শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘সরকারি বিনিয়োগে দেশীয় অর্থায়ন নিশ্চিত করার জন্য মোট রাজস্ব-জিডিপি অনুপাত ১৫ শতাংশে উন্নীত করা হবে। আমরা ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি করছি। এগুলো থেকে নানারকম সুবিধা দেয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ এমন একটি দেশ যেখানে বিনিয়োগ করে কেউ লস করবে না। এ সুযোগ গ্রহণ করা উচিত।’
মুস্তফা কামাল বলেন, ‘দুদিনের বৈঠকে অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নে উন্নয়নসহযোগীদের সহায়তা চাওয়া হয়েছে। আমাদের অর্থের খুব বেশি সমস্যা হবে না। যেসব সম্ভাবনাময় জায়গা আমাদের রয়েছে সেগুলো উন্মুক্ত করা গেলে সম্পদের সমস্যা হবে না। আমরাদের রাজস্ব আয় কম। কিন্তু যতটা কম বলা হয় ততটা কমও নয়।’
তিনি বলেন, ‘বিশ্বের এমন কোনো দেশ নেই, যে দেশ বাংলাদেশের মতো বিভিন্ন শিল্পে এত কর ছাড় দেয়। সেসব খাতে প্রণোদনা বা ছাড় দেয়া হচ্ছে আগামীতে সেগুলোর একটা হিসেব করা হবে। অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার কাঁচামাল সংগ্রহের জন্য এ বিডিএফ বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে। পৃথিবী ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) বাস্তবায়নের বিকল্প নেই। এটি শুধু মানুষের জন্য নয়, পৃথিবীর জন্য এবং আগামী প্রজন্মের জন্য এসডিজি বাস্তবায়ন গুরুত্বপূর্ণ।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বেরিয়ে গেলে কিছুটা চাপ হলেও নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে। সবসময় গরিব থাকলে চলবে না। কিছু পেতে হলে কিছু দিতে হয়। গত ১০ বছরে প্রবৃদ্ধি অর্জনে বিশ্বের অনেক দেশের চেয়ে আমরা এগিয়ে রয়েছি। ২০২৪ সালে বাংলাদেশ সিঙ্গাপুর, হংকং ও মালয়েশিয়াসহ অনেক দেশকে ছাড়িয়ে যাবে।’
বাংলাদেশ উন্নয়ন ফোরামের (বিডিএফ) বৈঠকের সমাপনী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন- অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোনেম, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান এবং জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী মিয়া সেপ্পো। অধিবেশন পরিচালনা করেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব মনোয়ার আহমেদ।
ড. মসিউর রহমান বলেন, ‘এসডিজি বাস্তবায়নে আমরা এমডিজির মতোই সাফল্য নিয়ে আসব। জাতিসংঘের পরামর্শ অনুযায়ী এগিয়ে যাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে কাজ চলছে। পাবলিক প্রাইভেট-পাটনারশিপ আমাদের বড় ইনোভেশন। একে কাজে লাগাতে হবে। রফতানি নির্ভর প্রবৃদ্ধির দিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।’
মিয়া সেপ্পো বলেন, ‘বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। এজন্য যা যা করনীয় করতে হবে। এসডিজি বাস্তবায়নে উন্নয়নসহযোগীদের সহায়তা অব্যাহত থাকবে।’
শেয়ারবার্তা / মিলন