দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে দুজনকে নিয়োগের জন্য গত সপ্তাহে অনুমোদন দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। বিএসইসির অনুমোদনের পর স্টক এক্সচেঞ্জগুলো তাদের নিয়োগের সব ধরনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে। এখন শুধু যোগদানের পালা। ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে তাদের যোগদানের সম্ভাবনা রয়েছে বলে ডিএসই এবং সিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
ইতিমধ্যে ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে কাজী সানাউল হক কে নিয়োগপত্র দিয়েছে ডিএসই। তবে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে বিএসইসির অনুমোদন পাওয়া মামুন উর রশিদ এখনো নিয়োগপত্র নেয়নি।
ডিএসইর পরিচালক রকিবুর রহমান বলেন, সব ধরনের প্রক্রিয়া যথাযথভাবে সম্পন্ন করে কাজী সানাউল হক কে নিয়োগপত্র প্রদান করেছেন ডিএসই। তিনি কবে যোগদান করবেন তা এখনো জানায়নি। তবে আশা করা যাচ্ছে তিনি শিগগিরই যোগদান করবেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিএসই একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, নিয়োগপত্র এখনো হাতে না পেলেও ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে যেকোনো দিন এমডি যোগদান করবেন।
উভয় স্টক এক্সচেঞ্জে এমডি পদে আলোচিত দুজনের যোগদানের মাধ্যমে দীর্ঘ দিনের শূণ্যতা পূরন হবে। এর আগে গত বছরের ৩১ মে সিএসইর এবং ১১ জুলাই ডিএসইর এমডির মেয়াদ শেষ হয়েছে। এরপর থেকে ভারপ্রাপ্তদের দিয়েছে চলে দুই স্টক এক্সচেঞ্জ। মেয়াদ শেষ হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে এমডি পদে নিয়োগ দেয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিয়োগ দিতে ব্যর্থ হয়ে একাধিকবার সময় বাড়ানোর আবেদন করে স্টক এক্সচেঞ্জগুলো। সর্বশেষ গত ১২ জানুয়ারীর মধ্যে ডিএসই তে এমডি নিয়োগে সময় নির্ধারণ করে দেয় নিয়ন্ত্রক বিএসইসি। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এমডি নিয়োগ দিতে ব্যর্থ হলে স্টক এক্সচেঞ্জে প্রশাসক বসানোর কথাও চিন্তা করেছিল কমিশন। তবে এর মধ্যে ডিএসই এমডি নিয়োগের বিষয়টি চূড়ান্ত করে বিএসইসির অনুমোদন নিয়েছে।
এমডি নিয়োগে যোগ্য লোকের খোঁজে ডিএসই তিনবার পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়েছে। এমডি নিয়োগে কয়েকটি বিষয়ের উপর জোর দিয়েছিল ডিএসই। এগুলোর মধ্যে প্রার্থীর ব্যবস্থাপনা, সেলস, মার্কেটিং, পাবলিক রিলেশন, প্রডাক্ট ডেভেলাপমেন্ট, শিক্ষাগত যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা, কর্মদক্ষতা থাকতে হবে। এর মধ্যে শিক্ষাগত যোগ্যতার বিষয়ে বলা হয়েছে- প্রার্থীকে ব্যবস্থাপনায় ১০ বছরের অভিজ্ঞতাসহ অর্থনীতি, পরিসংখ্যান, গণিত বা আইনের স্নাতক হতে হবে। এছাড়া সিএফএ, সিএ, সিএমএ, সিএস,সিপিএ এর মতো পেশাগত ডিগ্রি থাকতে হবে। তবে পুঁজিবাজারের উপর আন্তর্জাতিক কোনো ডিগ্রি বা অভিজ্ঞতা থাকলে প্রার্থীকে অগ্রাধিকার দেয়ার কথা বলা হয়। সর্বশেষ এমডি পদে যোগ্য লোকের সন্ধান করতে গিয়ে ডিএসই পরিচালকদের মধ্যে মতভেদও দেখা দেয়। অবশেষে গত ৯ জানুয়ারি কাজী সানাউল হকের নাম চূড়ান্ত করে বিএসইসিতে প্রস্তাব পাঠায় ডিএসই। আর গত ২২ জানুয়ারি তা অনুমোদন করে কমিশন।
স্টক এক্সচেঞ্জ ডি-মিউচ্যুয়ালাইজেশন আইন অনুযায়ী, স্টক এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের মেয়াদ তিন বছর। তবে কমিশনের অনুমোদনক্রমে তিনি আরো এক মেয়াদে ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে থাকতে পারবেন। কিন্তু ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাবেক এমডি মাজেদুর রহমান এর মেয়াদ এক বছর বাড়ানোর আবেদন করলেও বিএসইসি তা অনুমোদন করেনি।
শেয়ারবার্তা/ সাইফুল