তড়িঘড়ি করে মাত্র ১০ মিনিটের মাথায় বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) সম্পন্ন করেছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রকৌশল খাতের কোম্পানি আনোয়ার গ্যালভানাইজিং লিমিটেড।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) রাজধানীর মতিঝিলে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশনের (বিসিআইসি) অডিটোরিয়ামে কোম্পানিটির ২৫তম এজিএমে এমন ঘটনা ঘটেছে।
সকাল সাড়ে দশটায় কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে কোম্পানিটির এজিএম শুরু হয়। কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা আনোয়ার হোসেনের সুস্বাস্থ্য কামনা এবং কোম্পানির সার্বিক উন্নতির জন্য সকলের কাছে দোয়া চাওয়া হয়। এরপর সচিব তাওহিদুল ইসলাম কোম্পানির দেওয়া এজেন্ডাগুলো উপস্থাপন করেন, যা সর্বসম্মতিক্রমে পাস দেন সভায় উপস্থিত একদল বিনিয়োগকারী। পরবর্তীতে সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে কোম্পানির চেয়ারম্যান মোনোয়ার হোসেন সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন। এই নিয়ে সভা সম্পন্ন করতে ১০ মিনিটের কাছাকাছি সময় নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
তবে এই অল্প সময়ে সভা সম্পন্ন করা নিয়ে ক্ষুব্ধ হয়েছেন উপস্থিত বিনিয়োগকারীরা। সভা শেষে এক বিনিয়োগকারী বলেন, সভায় কোম্পানির চেয়ারম্যান বললেন এজিএম উপলক্ষ্যে আজ সারাদিনের জন্য বিসিআইসি অডিটোরিয়াম ভাড়া নেওয়া হয়েছে। যদি তাই নেওয়া হয়, তাহলে এত দ্রুত এজিএম শেষ করার মানে কি? বছরে একদিন কোম্পানির সাথে বিনিয়োগকারীদের খোলামেলা আলোচনার সুযোগ হয়। সেখানেও এত ব্যস্ততা কেন?
তিনি বলেন, কোম্পানিগুলোর এজিএম অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সিকিউটিরিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) অথবা দুই স্টক এক্সচেঞ্জ ডিএসই ও সিএসই’র কোন প্রতিনিধি থাকে না। তাই তাঁরা জানতেও পারেন না, কোম্পানির এজিএমগুলোতে কি হচ্ছে। আগে এজিএম অনুষ্ঠানে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য উপহার এবং চা-নাস্তার ব্যবস্থা থাকতো, যা বর্তমানে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এজিএমে এ সকল অনিয়ম বন্ধে তাদের কোন উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক বিনিয়োগকারী বলেন, এখন কিন্তু ওপেন সিক্রেট একটি বিষয় হল, কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা নিজেদের সুবিধামত এজেন্ডা পাশ করিয়ে নেওয়ার জন্য এজিএম পার্টির সাথে আর্থিক সমঝোতায় যায়। প্রতিষ্ঠানগুলো ধরেই নিয়েছে, এজিএম পার্টির সাথে হাত মেলানো ছাড়া এজেন্ডা পাশ করানো সম্ভব না। যে কারণে, এজিএম পার্টি ক্রমেই আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। ফলে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ বিনিয়োগকারীর স্বার্থরক্ষা।
প্রতিবছরই আনোয়ার গ্যাল্ভানাইজিং এরকম তড়িঘড়ি করে এজিএম শেষ করে জানিয়ে তিনি বলেন, বছরে একদিনই যেহেতু কাছ থেকে সকল শেয়ারহোল্ডার একসাথে আলোচনার সুযোগ পায়, আমাদের প্রত্যাশা হল, কোম্পানির চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক যেন কোম্পানির ভালমন্দ সময় নিয়ে খোলামেলাভাবে আমাদের জানায় এবং আমাদের দু’চারটা কথাও শুনে।
তালিকাভুক্ত কোম্পানিতে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় বিএসইসি ও স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃক নানা পদক্ষেপ নেওয়ার পাশাপাশি সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ণভাবে সাধারণ সভা পরিচালনার বিষয়ে নীতিমালা প্রণয়ন করা জরুরি বলে জানিয়েছেন শেয়ারহোল্ডাররা।
শেয়ারবার্তা / আনিস