পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত রাষ্ট্রায়াত্ব কোম্পানি তিতাস গ্যাসের কর্মচারী ইউনিয়ন (সিবিএ) নেতাদের চিঠি পেয়ে আটকে দিল কোম্পানিটির কর্মকর্তাদের দুই সংগঠনের নির্বাচন। সংগঠন দুটি হলো—‘তিতাস গ্যাস অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’ ও ‘তিতাস ক্লাব কাযনির্বাহী পরিষদ’। কর্মকর্তাদের অভিযোগ, সিবিএ নেতাদের হস্তক্ষেপে তাদের দুটি সংগঠনের নির্বাচন আটকে গেছে। আর সিবিএ নেতারা বলছেন, কোম্পানির সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশ বজায়র রাখার স্বার্থে সাময়িকভাবে এই নির্বাচন স্থগিতের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেছেন তারা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিতাসের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘আমাদের জিম্মি করে শ্রমিক নেতারা নির্বাচন স্থগিত রাখতে বাধ্য করছেন।’
প্রসঙ্গত, গত ৫ ডিসেম্বর তিতাসের তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তফা কামালকে দেওয়ার সিবিএ সভাপতি কাজিম উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে কোম্পানির কর্মকর্তাদের নির্বাচন স্থগিত রাখতে বলা হয়। কর্মকর্তাদের অভিযোগ, ‘তিতাস গ্যাস অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের কার্যনির্বাহী পরিষদ নির্বাচন-২০১৯’ অনুষ্ঠানের জন্য ২৯ ডিসেম্বর ভোটগ্রহণের তারিখ ঘোষণার পরও সিবিএ নেতাদের হস্তক্ষেপের কারণে তারা শেষপর্যন্ত নির্বাচন করতে পারেননি। এই নির্বাচন ঠেকাতে সিবিএ-এর পক্ষ থেকে তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে চিঠি দিলে তারা আর নির্বাচন করার সাহস করেননি।
চিঠিতে সিবিএ নেতারা বলেন, ‘আমরা চাই দীর্ঘ ১০ বছর পর যে নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, তা সবার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মাধ্যমে আনন্দঘন পরিবেশে অনুষ্ঠিত হোক। কিন্তু ইতোমধ্যে নির্বাচন সংক্রান্ত কিছু অনিয়মের অভিযোগ চিঠির মাধ্যমে ও মৌখিকভাবে আমাদের জানানো হয়েছে। যে কারণে একটি বৃহৎ অংশ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে না। এই বড় অংশটি অংশ না নিলে নির্বাচনে সংঘাতের আশঙ্কা রয়েছে।’
তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে দেওয়া সিবিএ নেতাদের চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘গঠনতন্ত্র সংশোধনের আগে সাংগঠনিক পদ বাড়ানোর বিষয়টিও নিয়মতান্ত্রিকভাবে হয়নি বলে কর্মকর্তাদের একাংশ জানিয়েছে। এ ধরনের নানা বিষয় নিয়ে কর্মকর্তাদের মধ্যে ইতোমধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। যা এক সময় চরম আকার ধারণ করে যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।’
কর্মচারীদের চিঠিতে বলা হয়েছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে নির্বাচন সাময়িকভাবে স্থগিত করে আলোচনার মাধ্যমে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে নির্বাচনের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’ একই ধরনের একটি চিঠি দিয়ে তিতাস ক্লাব কার্যনির্বাহী পরিষদের নির্বাচনও স্থগিত করতে বলেন সিবিএ নেতারা।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিতাস সিবিএ সভাপতি কাজিম উদ্দিনের কাছে বলেন, ‘মনে নেই। খোঁজ নিয়ে দেখছি।’ যদিও চিঠির নিচে কাজিম উদ্দিনের স্বাক্ষরই রয়েছে।
আর তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আল মামুন বলেন, ‘এই ঘটনা আমি আসার আগের।’ তবে, সিবিএ নেতাদের এসব বিষয়ে কথা বলা উচিত নয় বলেও তিনি মনে করেন।
শেয়ারবার্তা / হামিদ