অবশেষে বিনিয়োগকারীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী উদ্যোগী হওয়ায় পুঁজিবাজার গতিশীল হয়ে উঠেছে। গত ১৬ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বিএসইসির বৈঠকে পুঁজিবাজার ঠিক করতে বেশকিছু ইতিবাচক নির্দেশনা দেন তিনি।
বাজারে তারল্য সংকট কাটাতে সরকারি চার ব্যাংকের বিনিয়োগ বৃদ্ধি, মার্চেন্ট ব্যাংক ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের সহজ শর্তে ঋণ সুবিধা প্রদান, সরকারি বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান আইসিবি’র বিনিয়োগ সক্ষমতা বৃদ্ধি, বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা, দেশীয় বাজারে আস্থা সৃষ্টির জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং মানসম্পন্ন আইপিও আনতে বহুজাতিক ও সরকারি মালিকানাধীন লাভজনক কোম্পানিগুলোকে তালিকভুক্তিকরণের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ প্রয়োজন।
এছাড়া পুঁজিবাজারে অর্থ সংকট কাটাতে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংক অ্যাসোসিয়েশনের প্রস্তাব করা ১০ কোটি টাকার ফান্ডের বিষয়েও কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করে। এতে করে গত বৃহস্পতিবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ৮১ পয়েন্ট বাড়লেও গতকাল এক দিনে বেড়েছে ২৩২ পয়েন্ট। অর্থাৎ গত দুই কার্যদিবসে ডিএসইএক্স সূচক ৩১৩ পয়েন্ট বেড়েছে। এতে বাজারসংশ্লিষ্টসহ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরলেও আশঙ্কা কাটেনি, কারণ কয়েক মাস ধরে বাজারে অস্বাভাবিক পতনের পরে গত দু’দিনের উত্থানকে অস্বাভাবিকই বলা যায়। তাই কৃত্রিমভাবে সূচক না বাড়িয়ে পুঁজিবাজার দীর্ঘমেয়াদে স্থিতিশীল হোক, এটাই সবার প্রত্যাশা।
গতকাল লেনদেন হওয়া ৩৫৬ কোম্পানির মধ্যে ৩৪৬টি কোম্পানির দর বেড়েছে, কমেছে ছয়টির দর। অপরিবর্তিত ছিল চারটির দর। গতকাল টপ টেন লুজার বা পতনের শীর্ষ দশের তালিকা সম্পূর্ণ করা যায়নি মাত্র ছয় কোম্পানির দরপতন হওয়ায়। দুর্ভাগা এই ছয় কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ড হলো এসএস স্টিল, ইবিএল এনআরবি মিউচুয়াল ফান্ড, স্ট্যান্ডার্ড সিরামিক, জুট স্পিনার্স, এলআর গ্লোবাল মিউচুয়াল ফান্ড ওয়ান ও প্রগ্রেসিভ লাইফ।
প্রায় ১৭ শতাংশ লেনদেন হয়ে শীর্ষে ছিল প্রকৌশল খাত। এ খাতের সিঙ্গার বিডির ১৭ কোটি ১৭ লাখ টাকা লেনদেন হয়। দর বেড়েছে আট টাকা ৭০ পয়সা। এক টাকা দরপতনে থাকা এসএস স্টিলের ১০ কোটি ৪১ লাখ টাকা লেনদেন হয়।
দরবৃদ্ধির শীর্ষ দশের মধ্যে উঠে আসে আজিজ পাইপস ও বিডি ল্যাম্পস। ওষুধ ও রসায়ন খাত এবং ব্যাংক খাতে লেনদেন হয় ১৩ শতাংশ হারে। ওষুধ খাতের স্কয়ার ফার্মার ১৯ কোটি ১৪ লাখ টাকা লেনদেন হয়। দর বেড়েছে সাড়ে ১৫ টাকা। ১০ শতাংশ বেড়ে বেক্সিমকো ফার্মা দরবৃদ্ধির শীর্ষে উঠে আসে। এনসিসি ব্যাংকের ছয় কোটি ৮৯ লাখ টাকা ও ব্যাংক এশিয়ার ছয় কোটি ৩৮ লাখ টাকা লেনদেন হয়।
বস্ত্র খাতে লেনদেন হয় ১১ শতাংশ। এ খাতের রিং শাইনের সাড়ে ছয় কোটি টাকা লেনদেন হয়ে দর বেড়েছে ৫০ পয়সা। প্রায় ১০ শতাংশ বেড়ে স্টাইল ক্রাফট দরবৃদ্ধিতে তৃতীয় এবং দেশ গার্মেন্টস পঞ্চম অবস্থানে ছিল। টেলিযোগাযোগ খাতের গ্রামীণফোনের ৯ কোটি ৩৪ লাখ টাকা লেনদেন হয়। দর বেড়েছে ২১ টাকা ১০ পয়সা।
শেয়ারবার্তা/ সাইফুল