দেশের সরকারি-বেসরকারি সব বহুতল ভবন বীমার আওতায় আনা হবে। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে ইতোমধ্যে কাজও শুরু করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এটি দেশের সাধারণ কোম্পানিগুলোর জন্য বড় সুখবর। কারণ এতে সাধারণ কোম্পানিগুলোর কার্য পরিধি যেমন অনেক বিস্তৃত হবে, অন্যদিকে কোম্পানিগুলোর মুনাফায়ও বড় প্রভাব পড়বে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের যুগ্ম সচিব মো. হুমায়ুন কবিরের সভাপতিত্বে সম্প্রতি একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সিদ্ধান্ত হয় যে, দেশের বহুতল ভবনগুলোকে বীমার আওতায় আনার লক্ষ্যে প্রাথমিকভাবে পাইলট প্রকল্প চালু করা হবে।
এছাড়া বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের (অংশীজন) নিয়ে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির মধ্যে একটি ওয়ার্কশপ বা সেমিনার আয়োজন করে সুনির্দিষ্ট সুপারিশমালা প্রণয়ন করা হবে।
আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার কার্যপত্র থেকে জানা যায়, সভায় বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) পরিচালক কামরুল হক জানান, দেশে প্রচুর বহুতল ভবন রয়েছে, যেগুলো কখনও বীমার আওতায় আনা হয় না। ট্যারিফ বেশি হওয়ায় মূলত অনেকে বীমা করে না। এটি বাস্তবায়নে আইনগতভাবে তাদের বাধ্য করতে হবে।
বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স ফোরামের প্রতিনিধি মো. ইমাম শাহীন জানান, দেশের বহুতল ভবনগুলো বীমার আওতায় আনতে হলে আইনগত বাধ্যবাধকতা থাকতে হবে। দেশে বর্তমানে প্রিমিয়াম রেট প্রতি বর্গফুট শূন্য দশমিক ৭৫ টাকা। এটি দেশব্যাপী চালু করতে হলে প্রিমিয়াম রেট কমাতে হবে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স ফোরাম মিলে বাস্তবায়নযোগ্য একটি রেট নির্ধারণ করতে পারে।
তিনি আরও জানান, সিটি করপোরেশনের বার্ষিক নিবন্ধন ফি নবায়নের সময় ভবনগুলোর বীমা আছে কি-না, তা সিটি করপোরেশন দেখভাল করতে পারে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের প্রতিনিধি জানান, দেশে সাধারণত ষষ্ঠ থেকে ১০ তলা পর্যন্ত অনেক ভবন রয়েছে। ১৮ তলার ওপরে ভবন করতে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-কে অতিরিক্ত ফি জমা দিতে হয়। ভবনগুলো বীমার আওতায় আনতে রাজউক ও জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলা যেতে পারে এবং এক্ষেত্রে যদি আইন করার প্রয়োজন হয় তাহলে অবশ্যই তা করতে হবে। এ বিষয়ে আইডিআরএ-সংশ্লিষ্ট সব স্টেকহোল্ডারকে নিয়ে একটি ওয়ার্কশপ বা সেমিনারের আয়োজন করা যেতে পারে।
সভায় সুরক্ষা সেবা বিভাগের প্রতিনিধি জানান, শুরুতেই বহুতল ভবনগুলো অগ্নি-বীমা পলিসির মধ্যে আনতে হবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে হলে তা কতটুকু বাস্তবসম্মত, তা বিবেচনায় আনতে হবে। তবে প্রাথমিকভাবে পাইলটিং ব্যবস্থায় ভবনগুলো বীমার আওতায় আনলে ভালো হয়। ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে যে আইনগুলো আছে সেগুলো যাতে বাস্তবায়ন করা যায় সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে। এলাকাভিত্তিক আলোচনা করে পাইলটিং কাজ শুরু করা যেতে পারে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি জানান, বিদ্যমান আইনগুলো পর্যালোচনা করা উচিত। সার্বিকভাবে বিবেচনা করে তা বাস্তবায়ন করা যেতে পারে। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে পাইলটিং ভিত্তিতে কাজ শুরু করা যেতে পারে।
শেয়ারবার্তা / আনিস