শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ১১ আর্থিক কোম্পানির প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ডিসেম্বর মাসে সমান্য কমেছে। এ সময় সাধারণ বিনিয়োগকারীরা এসব প্রতিষ্ঠানে তাদের বিনিয়োগ বাড়িয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) হালনাগাদ তথ্য পর্যালোচনায় এ তথ্য জানা গেছে।
দেশের শেয়ারবাজারে নন ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২৩ টি। গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ডিসেম্বর মাসের শেয়ারধারণ সংক্রান্ত ১৫ টি কোম্পানির হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করেছে ডিএসই। এর মধ্যে ১১ প্রতিষ্ঠানের প্রাতিষ্ঠান বিনিয়োগ সমান্য কমেছে, ২ টির বিনিয়োগ বেড়ছে এবং ২ টি কোম্পানিতে বিনিয়োগ অপরিবর্তিত রয়েছে। বিপরীত দিকে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা নন ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ারে বিনিয়োগ বাড়িয়েছে।
কোম্পানিগুলোর মধ্যে ইসলামিক ফাইন্যান্সে ডিসেম্বর শেষে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা ৩১ দশমিক ৯১ শতাংশ শেয়ার ধারন করেছে, আগের মাসে কোম্পানির ৩৪ দশমিক ৭৪ শতাংশ শেয়ার তাদের কাছে ছিল। এক মাসের ব্যবধানে কোম্পানিটির প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ কমেছে ২ দশমিক ৮৩ শতাংশ। গত ডিসেম্বর শেষে বে লিজিংয়ের ৩৭ দশমিক ২৮ শতাংশ শেয়ারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ রয়েছে, আগের মাসে যার পরিমাণ ছিল ৩৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ। ডিসেম্বর শেষে ফাস ফাইন্যান্সের ২১ দশমিক ২৪ শতাংশ শেয়ার প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে আছে, আগের মাসে যার পরিমাণ ছিল ২২ দশমিক ৩২ শতাংশ।
মাসের ব্যবধানে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা কোম্পানিটির ১ দশমিক শূণ্য ৮ শতাংশ শেয়ার ছেড়ে দিয়েছে। ডিসেম্বর শেষে বিডি ফাইন্যান্সের প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ দাঁড়িয়েছে ১৪ দশমিক ৩৭ শতাংশ,আগের মাসে বিনিয়োগ ছিল কোম্পানির ১৫ দশমিক ২২ শতাংশ শেয়ারে।
গত মাস শেষে ইউনিয়ন ক্যাপিটালে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছিল ২১ দশমিক ৮৬ শতাংশ শেয়ারে, আগের মাসে তাদের কাছে ছিল ২২ দশমিক ৪৮ শতাংশ শেয়ার। ডিসেম্বর শেষে ন্যাশনাল হাউজিংয়ের ১০ দশমিক ৩০ শতাংশ শেয়ার প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে, আগের মাসে তাদের কাছে ছিল ১১ দশমিক শূণ্য ৮ শতাংশ শেয়ারে। প্রিমিয়ার লিজিংয়ের ২৫ দশমিক ৭৪ শতাংশ শেয়ার প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের নিকট আছে,
আগের মাসে তাদের নিকট কোম্পানির ২৬ দশমিক ১৭ শতাংশ শেয়ার ছিল। গত মাসে আইপিডিসি’র ২৬ দশমিক ৬১ শতাংশ শেয়ারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ রয়েছে, আগের মাসে ছিল ২৬ দশমিক ৭৪ শতাংশ। এছাড়া যেসব কোম্পানির শেয়ারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ কমেছে সেগুলো হচ্ছে- বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স, আইডিএলসি ফাইন্যান্স, ফারইস্ট ফাইন্যান্স।
সংশ্লিস্টরা বলছেন, নন ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সুশাসনের অভাব রয়েছে। এ কারণে তালিকাভুক্ত একটি কোম্পানি অবসায়নে প্রক্রিয়া চলছে। আলোচিত এই কোম্পানির অবসায়নের খবরে পুরো আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের শেয়ারে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। আতঙ্কে অনেকের হাতে থাকা শেয়ার ছেড়ে বেরিয়ে গেছে। এখাতের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থার সংকট দেখা দিয়েছে। তবে সুশাসন নিশ্চিতের মাধ্যমে এ খাতে শৃঙ্খলা ফিরে আসলে বিনিয়োগকারীরা তালিকাভুক্ত কোম্পানিরগুলোর শেয়ারে বিনিয়োগের জন্য আস্থা পাবে। যা পুরো শেয়ারবাজার কে ইতিবাচক ধারায় ফেরাতে সহায়তা করবে।
এ সম্পর্কে অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে সুশাসনের নিশ্চিত করতে হবে। তাছাড়া এ খাতের শেয়ারে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়বে না।
গত ডিসেম্বর শেষে যেসব কোম্পানিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বেড়েছে সেগুলো হচ্ছে- ডেল্ট্রা ব্রাক হাউজিং ফাইন্যান্স, ফার্স্ট ফাইন্যান্স। ইন্টারন্যাশনাল লিজিং এবং উত্তরা ফাইন্যান্সে গত ডিসেম্বর মাসে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ অপরিবর্তিত রয়েছে।
শেয়ারবার্তা/ সাইফুল