খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দেওয়া ‘গণছাড়’ সুবিধা ব্যাপকভাবে প্রয়োগ করছে সরকারি ব্যাংকগুলো। এখন আদালতের স্থগিতাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে যেসব খেলাপি ঋণ নিয়মিত দেখানো হচ্ছে, ওই সব ঋণের ক্ষেত্রেও এ সুবিধা দাবি করেছে সরকারি ব্যাংকগুলো। এ ছাড়া অবলোপনকৃত ঋণগুলোকে এ সুবিধা দেওয়ার দাবি করা হয়েছে। বুধবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠকে এ প্রস্তাব তুলে ধরা হয়।
সূত্র জানায়, বুধবার বিকালে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ সংক্রান্ত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সরকারি কয়েকটি ব্যাংকের এমডিসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, খেলাপি ঋণ হলেও বিশেষ পুনর্তফসিল সুবিধা দেওয়া যাবে। গ্রাহকদের রিটের পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত খেলাপি ঋণের ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছেন। সেগুলো আর ব্যাংকের খেলাপি খাতায় নেই। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে সেগুলোও খেলাপি ঋণ। তাই স্থগিতাদেশে নিয়মিত থাকা ঋণগুলোও যেন পুনর্তফসিল করা যায়, সেই সুযোগ চেয়েছে ব্যাংকগুলো।
বৈঠকে সরকারি ব্যাংকগুলো অবলোপনকৃত ঋণও পুনর্তফসিল করার দাবি জানায়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, অবলোপনকৃত ঋণ পুনর্তফসিল করে প্রধান হিসেবে নিয়ে এসে ওই গ্রাহকদের নতুন করে ঋণ দেওয়ার সুযোগ নেই। তবে আলাদা ব্যালান্সশিটে তাদের ঋণ পরিশোধসূচি নির্ধারণের সুযোগ পাবে ব্যাংকগুলো।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ সুবিধা দেওয়া যায় কিনা, আইনগত মতামত নেওয়ার পর কেন্দ্রীয় ব্যাংক চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।
অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. শামস উল ইসলাম বলেন, ২ শতাংশ ডাউনপেমেন্টে বিশেষ পুনর্তফসিল কার্যকর করতে গিয়ে কিছু সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এ বিষয়গুলোয় আইনগত সমাধানের জন্য ওই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে অবলোপনকৃত ঋণের ক্ষেত্রে এ সুবিধা দেওয়া যাবে বলে জানানো হয়েছে। তবে রিটের পরিপ্রেক্ষিতে স্থগিতাদেশপ্রাপ্ত ঋণ এ সুবিধা পাবে কিনা, সেটি কেন্দ্রীয় ব্যাংক পরে জানাবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত হিসাবে যেসব ঋণ মন্দমানে খেলাপি ছিল, সেই সব ঋণ ২ শতাংশ ডাউনপেমেন্ট দিয়ে ১০ বছরে ৯ শতাংশ সুদে পুনর্তফসিল করা যাচ্ছে। গত বছরের মে মাসে এ গণছাড় সুবিধা দিয়ে সার্কুলার জারি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। একাধিকবার সময় বাড়িয়ে এ সুবিধা গ্রহণের জন্য ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আবেদন করা যাবে। গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৩ হাজার ৩৩৮ জন খেলাপি আবেদন করেছেন। ইতোমধ্যে ৬ হাজার ৬৩২ ঋণখেলাপি সুবিধা নিয়েছেন। আর সরকারি ব্যাংকগুলোই সুবিধা দিয়েছেন ৪ হাজার ৯২ জন খেলাপিকে।
শেয়ারবার্তা / হামিদ