সম্প্রতি প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) সম্পন্ন করা কোম্পানি বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) মালিকানাধীন আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানি লিমিটেডের নন-কনভার্টেবল বন্ডের লেনদেনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। বন্ডটি আগামীকাল ১৬ জানুয়ারি, বৃহস্পতিবার পুঁজিবাজারে ’এন’ ক্যাটাগরিতে লেনদেন শুরু করবে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, এই বন্ডের ট্রেডিং কোড হবে “APSCLBOND”। আর কোম্পানি কোড হবে ২৬০০৪। এর আগে কোম্পানিটির আইপিও লাটারি ছাড়াই বন্ড বিনিয়োগকারীদের দেয়া হয়েছে। আবেদনকৃত বিনিয়োগকারীদের সংখ্যা ১০০ শতাংশের কিছুটা বেশি হওয়ায় আইপিও এর লটারি করা হয়নি। আবেদনকৃতদের মধ্যে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের আগে দিয়ে পরে যোগ্য আবেদনকারীদের সমানভাবে ভাগ করে দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ, দ্বিতীয় দফায় সময় বাড়ানোর পর কোম্পানিটির বন্ড ইস্যুর সাবস্ক্রিপশন ১০০ শতাংশের কিছুটা বেশি হয়। এর মধ্যে ৯২ শতাংশ বা ৯২ কোটি টাকার আবেদন করেছে যোগ্য বিনিয়োগকরীরা (ইলিজিবল ইনভেস্টর)। সাড়ে ৮ কোটি টাকা বা ৮ দশমিক ৫০ শতাংশ আবেদন করেছ সাধারণ বিনিয়োগকারী (জেনারেল ইনভেস্টর)। এজন্য লটারির প্রয়োজন নেই বলে মনে করেছেন কোম্পানির সংশ্লিষ্টরা।
গত ১৮ নভেম্বর দ্বিতীয় দফায় কোম্পানির বন্ড ইস্যুর আবেদন জমা নেয়া শেষ হয়। বিএসইসির ৭০১তম কমিশন সভায় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন পাবলিক ইস্যু রুলস ২০১৫ এর সংশ্লিষ্ট তিনটি আইন পরিপালন থেকে অব্যাহতি প্রদান করে এসময় বাড়ানো হয়েছে।
এর আগে গত ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে কোম্পানিটির আবেদন গ্রহণ শুরু হয়েছিল। এবং ৬ অক্টোবর রোববার আইপিও আবেদন গ্রহণের সময় শেষ হয়েছিল।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানি লিমিটেড (এপিএসসিএল) বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে ৬শ কোটি টাকার তহবিল সংগ্রহ করবে পুঁজিবাজার থেকে। এর মধ্যে প্লেসমেন্টের মাধ্যমে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর কাছে বন্ড বিক্রি করে ৫শ কোটি টাকা সংগ্রহ করা হবে। আর প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে বিক্রি করা হবে ১শ কোটি টাকার বন্ড।
এরআগে গত ২ জুলাই ১৯ (মঙ্গলবার) এ প্রস্তাবের অনুমোদন করেছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন বিএসইসি। বিএসইসির ৬৯২তম সভায় এ সিদ্ধান্ত দেয়া হয়।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানি লিমিটেডের বন্ডের প্রতি ইউনিটের অভিহিত মূল্য ৫ হাজার টাকা। একটি ইউনিট নিয়ে এই বন্ডের মার্কেট লট।
আলোচিত বন্ডটির বৈশিষ্ট্য হচ্ছে-এটি একটি নন কনভার্টেবল ( Non-Convertible), ফুললি রেডিমেবল (Fully Redeemable), কুপন বেয়ারিং (Coupon Bearing) বন্ড প্রাথমিক গণ প্রস্তাব (আইপিও) এর মাধ্যমে ইস্যু করবে। অর্থাৎ এই বন্ডের কোনো অংশ শেয়ারে রূপান্তরিত হবে না, মেয়াদ শেষে সম্পূর্ণভাবে শেষ হয়ে যাবে এবং বন্ডের সঙ্গে কুপন থাকবে, নির্দিষ্ট সময় পর পর যার ভিত্তিতে বন্ডহোল্ডার সুদ ও আসলের অর্থ পাবেন।
বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে শতভাগ সরকারী মালিকানাধীন পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিটি ১০০ কোটি টাকা তহবিল সংগ্রহ করে ভূমি উন্নয়ন ও সিভিল ওয়ার্ক, প্রাথমিক জ্বালানী, যানবাহন ক্রয়, প্রকৌশলী ও পরামর্শক সেবা, চলতি মূলধন এবং প্রাথমিক গণ প্রস্তাবের খরচ খাতে ব্যয় করবে।
কোম্পানিটির ৩০ জুন ২০১৭ তারিখে সমাপ্ত বৎসরের নিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণী অনুযায়ী নীট সম্পদ মূল্য ২৬৫ টাকা ৯৬ পয়সা এবং বিগত ৫ টি আর্থিক বিবরণী অনুযায়ী ভারিত গড় হারে শেয়ার প্রতি আয় ১০ টাকা ৬৩ পয়সা। ০৭ বছর মেয়াদী বস্তুটির বার্ষিক কুপন সুদহার হবে ১৮২ দিন মেয়াদী ট্রেজারী বিলের সুদ হারের সাথে ৪ শতাংশ মার্জিন যুক্ত হার (যা সর্বনিম্ন ৮ দশমিক ৫ শতাংশ ও সর্বোচ্চ ১০ দশমিক ৫০ শতাংশ) এবং অর্ধবার্ষিক মেয়াদে প্রদেয়।
বিনিয়োগকারীদের মুলধন ফেরত দেয়া হবে ৭ বছরে। তবে প্রথম ৩ বছরে কোন মুলধন ফেরত পাবে না বিনিয়োগকারীরা। শেষের ৪ বছরে প্রতিবছর ২৫ শতাংশ করে মুলধন ফেরত দেয়া হবে।
উল্লেখ্য, কোম্পানিটির ইস্যু ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছে আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড এবং ব্রাক ইপিএল ইনভেস্টমেন্টস লিমিটেড। এছাড়াও ট্রাস্টি হিসেবে নিয়োজিত রয়েছে আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড।
শেয়ারবার্তা/ সাইফুল