ভারতের জাতীয় পরিসংখ্যান অধিদফতর ২০১৯-২০ অর্থবছরে তাদের আগাম প্রকৃত জাতীয় গড় উৎপাদন (জিডিপি) প্রকাশ করেছে। বলা হচ্ছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ভারতের জিডিপি হবে ৪.৯৮ শতাংশ। যা দেশটির গত ১১ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
২০০৮-০৯ অর্থবছরে যখন বিশ্বব্যাপী আর্থিক মন্দা দেখা দিয়েছিল তখনও ভারতের এত খারাপ অবস্থা হয়নি। সে বছর এর হার ছিল ৩.৮৯ শতাংশ। এদিকে ২০১৯-২০ সালে জিডিপি বৃদ্ধির হার গত ১১ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন হবে শুধু এমন আশঙ্কা করা হচ্ছে, তা নয়। একই সঙ্গে মুদ্রাস্ফীতি, অর্থাৎ অর্থনীতিতে উৎপাদিত পণ্য ও পরিষেবার মূল্যবৃদ্ধির হারও মাত্র ২.৬ শতাংশ।
গৃহস্থালি বা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের তরফ থেকে সাধারণত বিষয়টিকে ওপর ওপর দেখা হয়। ভারতের মত দেশে, যেখানে প্রতিবছর ন্যূনতম জিডিপি বৃদ্ধির হার বছরের পর বছর ৫.৬ শতাংশ থেকে গেছে এবং একই হারে মুদ্রাস্ফীতি ঘটেছে। সেখানে জিডিপি বৃদ্ধির হার যখন এক অঙ্কে এসে দাঁড়ায় তখন তা অস্বাভাবিক ঠেকে।
কর্পোরেট ও সরকারের ক্ষেত্রেও এর প্রভাব
ভারতে তালিকাভুক্ত কোম্পানির আয় পাঁচ বছরে দ্বিগুণ হতো। যার অর্থ প্রতিবছর ১৪ থেকে ১৫ শতাংশ নামমাত্র বৃদ্ধির হার থাকতো। তবে সেই বৃদ্ধির হার যদি এবার ৭ থকে ৮ শতাংশে নেমে আসে, তাহলে দ্বিগুণ বৃদ্ধিতে ফিরতে সময় লাগবে আরও ৯-১০ বছর। আর এতে কর্মীদের বেতন বাড়ার হার মন্থর হয়ে পড়তে পারে।
সরকারের ক্ষেত্রে বিষয়টি আরও বেশি গুরুতর। ২০১৯-২০ বাজেটে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ জিডিপি বৃদ্ধির হার ১২ শতাংশ অর্থাৎ ২১১.০১ লাখ কোটি হবে বলে জানিয়েছেন। তবে জাতীয় পরিসংখ্যান দফতর বলছে, ২০১৯-২০ সালে নমিনাল জিডিপি হবে মাত্র ২০৪.৪২ লাখ কোটি টাকা, যা বাজেট অনুমানের চেয়ে ৬৫৮,৩৭৪ কোটি টাকা কম।
ভারতে পর পর তিন বছর জিডিপি বৃদ্ধির হার এক অঙ্কে নেমে যাওয়ার ঘটনা রয়েছে। ২০০০-০১ থেকে ২০০২-০৩ সালে অটল বিহারী বাজপেয়ী সরকারের সময় তিন বছরে নমিনাল বৃদ্ধির হার ছিল যথাক্রমে ৭.৬২, ৮.২ ও ৭.৬৬ শতাংশ।
দেশটিতে বর্তমান প্রকৃত জিডিপি বৃদ্ধির হার ৪.৯৮ শতাংশ, যা ওই তিন বছরের প্রকৃত জিডিপি বৃদ্ধির হার (যথাক্রমে ৩.৮ শতাংশ, ৪.৮ শতাংশ ও ৩.৮ শতাংশ) থেকে বেশি।
শেয়ারবার্তা / আনিস