শেয়ারবাজারে এত লম্বা সময় ধরে যে মন্দাবস্থা চলছে, সেটি মূলত সুশাসনের বড় ঘাটতির কারণেই। দীর্ঘ সময় ধরে দায়িত্বে থাকার পরও বর্তমান নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাজারে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থ হয়েছে। সুশাসনের অভাবে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে চরম আস্থাহীনতা দেখা দিয়েছে। বাজারে এক বছর ধরে যে দরপতন চলছে, তাতে বাজার ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার ওপর বিনিয়োগকারীদের আস্থা খুব বেশি অবশিষ্ট আছে বলে মনে হচ্ছে না। এ কারণে সরকার বা নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষ থেকে নানা পদক্ষেপ নেওয়ার পরও তার কোনো সুফল বাজারে মিলছে না। বিনিয়োগকারীরা এখন ধরেই নিয়েছেন, শেয়ার বিক্রি করলেই লাভ বেশি। কারণ, প্রতিদিনই দাম কমছে। তাই লোকসান কমাতে যে যেভাবে পারছেন, বাছবিচার ছাড়া হাতের শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন।
এ ছাড়া ব্যাংক খাতের তারল্যসংকট, গ্রামীণফোনের সঙ্গে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির দ্বন্দ্বের নেতিবাচক প্রভাবও বাজারে পড়েছে। আমরা দেখছি, ব্যাংক খাত যেকোনো সময়ের চেয়ে অত্যন্ত দুর্বল অবস্থায় রয়েছে। খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়েই চলেছে। পাশাপাশি ব্যাংক খাত থেকে সরকারের ঋণের পরিমাণও অনেক বেড়ে গেছে। কমেছে বেসরকারি ঋণের প্রবাহ। এমন এক পরিস্থিতিতে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের মতো উদ্বৃত্ত তারল্য নেই ব্যাংক খাতে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের চরম আস্থাহীনতা। দুইয়ে মিলে বাজারে বিনিয়োগ আসছে না।
বাজার যে পর্যায়ে গেছে, তাতে আমি মনে করি, আস্থার সংকট দূর করতে হলে সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে সবার আগে। সেটিকে দৃশ্যমানও করতে হবে বিনিয়োগকারীদের কাছে। তা না হলে এই বাজারে নতুন বিনিয়োগ আসবে না।
ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী, সাবেক চেয়ারম্যান, বিএসইসি