ভারতের পুঁজিবাজার থেকে বিদেশি বিনিয়োগ চলে যাওয়ার প্রবনতা নিয়ে বেশ কিছুদিন থেকেই ব্যপক আলোচনা হচ্ছে। এবার জানা যাচ্ছে, চীনের পুঁজিবাজার থেকেও বিদেশি বিনিয়োগ চলে যাচ্ছে। দেশটির সরকারি পরিসংখ্যানই বলছে, নভেম্বর মাসে চীনের পুঁজিবাজার থেকে ৪৫ দশমিক ৭ বিলিয়ন বা ৪ হাজার ৫৭০ কোটি ডলার বিনিয়োগ চলে গেছে।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) ব্রিটেন ভিত্তিক বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নভেম্বর মাসে চীনের পুঁজিবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে ১৮৮ দশমিক ৯ বিলিয়ন বা ১৮ হাজার ৮৯০ কোটি ডলার; একই সময়ে বিনিয়োগকারীরা লভ্যাংশ নিয়ে গেছেন ২৩৪ দশমিক ৬ বিলিয়ন বা ২৩ হাজার ৪৬০ কোটি ডলার। সোমবার চীনের বিদেশি মুদ্রা নিয়ন্ত্রণসংক্রান্ত দপ্তর থেকে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
শুধু পুঁজিবাজারসহ চীনের অর্থনীতির অন্যান্য ক্ষেত্রেও একই চিত্র দেখা গেছে। ফলে দেশটি কমেছে উৎপাদনেশীলতা, যা উদিয়মান অর্থনীতির দেশটির জন্য অসনিসংকেত হিসাবে দেখা হচ্ছে। দেশটির অর্থনীতির নীতিনির্ধারকদের ব্যপক উদ্বিগ্ন করে তুলেছে।
চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক গত সোমবার বলেছে, শুধু নভেম্বর মাসেই নয়, এ নিয়ে টানা তিন মাস চীনের পুঁজিবাজার থেকে বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে। আরেক হিসাবে ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স দেখিয়েছে, গত মাসে চীনের বন্ড ও স্টক উভয় বাজার থেকেই বিনিয়োগ সরে গেছে।
সংস্থাটি বলেছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার মার্কিন ডলারের দর বেড়েছে, সেই সঙ্গে দাম বাড়ছে বিটকয়েনের, এসব কারণে উন্নয়নশীল দেশের পুঁজিবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ কমছে।
চীনের অর্থনীতি গতি হারিয়েছে। অনেক চেষ্টাচরিত্র করেও দেশটির কমিউনিস্ট সরকার অর্থনীতিতে গতি আনতে পারছে না। বিদেশি বিনিয়োগ চলে যাওয়ার এটাই মূল কারণ।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফের সংবাদে বলা হয়েছে, চলতি বছরের দ্বিতীয় অর্থাৎ এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা সামগ্রিকভাবে চীন থেকে ১৪ দশমিক ৮ বিলিয়ন বা ১ হাজার ৪৮০ কোটি ডলার প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
১৯৯৮ সাল থেকে বিদেশি বিনিয়োগের রেকর্ড সংরক্ষণ শুরু হওয়ার পর এ নিয়ে দ্বিতীয়বার এমন হলো যে বিদেশিরা যত অর্থ বিনিয়োগ করেছেন, তার চেয়ে বেশি অর্থ তুলে নিলেন। বছরের প্রথম অর্থাৎ জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে চীনে ১০ বিলিয়ন বা ১ হাজার কোটি ডলার বিদেশি বিনিয়োগ এসেছিল।