পুঁজিবাজারে বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে অতিমূল্যায়িত হয়ে তালিকাভুক্ত হওয়া কোম্পানিগুলোর প্রায় শতভাগ এরইমধ্যে কাট-অফ প্রাইসের নিচে চলে এসেছে। এ অবস্থার মধ্যেই অতিমূল্যায়িত হয়ে আরেক কোম্পানি এডিএন টেলিকমের শেয়ার আজ সোমবার বাজারে লেনদেন হতে যাচ্ছে। নিলামে অংশ নিয়ে শেয়ার কেনার কারণে নিশ্চুপ রয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই), চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ, ডিএসই ব্রোকার্স এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশসহ (ডিবিএ) অন্যান্য স্টেক হোল্ডাররা।
ডিএসইর পর্ষদ সাম্প্রতিক আইপিও ইস্যুতে বেশ সোচ্চার ভূমিকা পালন করছে। এছাড়া পেছনে থেকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে ডিবিএ। উভয় প্রতিষ্ঠানই আইপিওতে আসা কোম্পানিগুলোর নানা দুর্বলতা তুলে ধরার চেষ্টা করছে। এরই ধারাবাহিকতায় কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজ ইস্যুতে শক্ত ভূমিকা পালনের মাধ্যমে প্রশংসা পায় ডিএসই। কোম্পানির প্রসপ্রেক্টাস যাচাই বাছাইয়ের জন্য একটি আইপিও রিভিউ টিম রয়েছে ডিএসইর। কিন্তু সেই ডিএসইর পর্ষদ এডিএন টেলিকমের ক্ষেত্রে পুরো নিশ্চুপ। কোম্পানিটি অতিমূল্যায়িত দরে লেনদেন শুরু হওয়ার পথে থাকলেও তাদের কোন পদক্ষেপ নেই।
জানা গেছে, এডিএন টেলিকম পুঁজিবাজারে আসার প্রক্রিয়া শুরুর আগে ২০১৭ সালের ৭ জুন প্লেসমেন্টে প্রতিটি শেয়ার ১৫ টাকা করে ইস্যু করেছে। যে কোম্পানিটি বুক বিল্ডিং পদ্ধতির নিলামে প্রতিটি শেয়ার সর্বোচ্চ ১৭ টাকা দরে ইস্যু করার যোগ্যতা রাখে। তবে নিলামে যোগ্য বিনিয়োগকারীরা সেটাকে ৩০ টাকায় মূল্যায়ন করেছে। এক্ষেত্রে কোম্পানিটি শুরুতেই ৭৬ শতাংশ অতিমূল্যায়ন নিয়ে পুঁজিবাজারে লেনদেনে নামবে। এই অতিমূল্যায়নের কারণে আগের কোম্পানিগুলো এখন কাট-অফ প্রাইস থেকে অনেক নিচে অবস্থান করছে।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, পৃথিবীর অন্যান্য দেশে বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে যোগ্য বিনিয়োগকারীরা একটি কোম্পানির শেয়ারের যোগ্য দর মূল্যায়ন করে। আর আমাদের দেশে যোগ্য বিনিয়োগকারীরা করে অতিমূল্যায়ন। যাদের আমরা যোগ্য বিনিয়োগকারী বলি, প্রকৃতপক্ষে তারা অযোগ্য। পুঁজিবাজারের স্বার্থে বুক বিল্ডিং পদ্ধতি ২০১৬ সালের শুরু থেকে চালু করা হলেও এরইমধ্যে তার অপব্যবহার পদ্ধতিটিতে কয়েক দফায় সংশোধনী আনা হয়েছে।
সর্বশেষ গত ১৬ জুলাই কমিশনের এক সভায় বিডারকে প্রস্তাবিত দরেই শেয়ার কেনা বাধ্যতামূলক করে সংশোধনীর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে যেকোন কোম্পানির শেয়ার দর বিবেচনায় ‘হিস্ট্রোরিকাল আর্নিংস বেজড ভ্যালু পার শেয়ার’ পদ্ধতিকে সর্বোচ্চ বিবেচনায় নেয়া হয়। এক্ষেত্রে প্রথমে কোম্পানির শেষ ৫ বছরের ওয়েটেড শেয়ারপ্রতি মুনাফাকে (ইপিএস) মূল্য-আয় অনুপাত (পিই রেশিও) ১০ দিয়ে গুণ করা হয়। এরপরে শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ (এনএভিপিএস) যোগ করার পরে ২ দিয়ে ভাগ করে এই দর নির্ধারণ করা হয়।
শেয়ারবার্তা / হামিদ