সরকারি গ্যারান্টির বিপরীতে বাংলাদেশ ব্যাংক রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশেকে (আইসিবি)দেওয়া তিন হাজার কোটি টাকা ঋণ প্রদানের খবরে চাঙ্গা হয়েছিল শেয়ারবাজার। তবে প্রতিষ্ঠানটিকে দেওয়া ঋণের উচ্চ সুদ নির্ধারণ করার খবরে ফের চাপে দেশের শেয়ারবাজার।
শেয়ারবাজারে অব্যাহত পতন ঠেকাতে রাষ্ট্রীয় মালিকাধীন বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশকে (আইসিবি) সভরেন গ্যারান্টির বিপরীতে ৩ হাজার কোটি টাকা ঋণ প্রদানের অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। গত মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর আইসিবিকে সভরেন গ্যারান্টির বিপরীতে ৩ হাজার কোটি টাকা ঋণ প্রদানের অনুমোদন দিয়েছে।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) আইসিবির ঋণ প্রাপ্তির খবরে দেশের শেয়ারবাজার চাঙ্গা হয়ে উঠে। এদিন শেয়ারবাজারের বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দর বাড়ে। মুনাফা হয় বিনিয়োগকারীদের। এই মুনাফা তোলার চাপে বৃহস্পতিবার শেয়ারবাজারে পতন হয়। তবে আইসিবিকে দেওয়া ঋণের জন্য ১০ শতাংশ সুদ নির্ধারণ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। বিষয়টিতে আপত্তি তুলেছে আইসিবি। এ জন্য ঋণের সুদ কমাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণরকে চিঠি দিয়েছে আইসিবি। পাশাপাশি বিষয়টিতে অর্থ উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ চেয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। সংস্থাটির শীর্ষ কর্মকর্তাদের অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে রোববার বৈঠক করার কথাও রয়েছে।স্টক ব্রোকারেজ
আইসিবিকে দেওয়া ৩ হাজার কোটি টাকা ঋণের জন্য ১০ শতাংশ সুদ নির্ধারণের খবর শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। এতে বিনিয়োগকারীদের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের প্রতি আগ্রহ কমে যায়। যার কারণে এদিন সূচকের উত্থানে শুরু হয় লেনদেন। কিছুক্ষণ পর সূচক পতনে নেমে যায় সূচক। আবার উত্থানে উঠে আসে। এভাবে উত্থান আবার পতনে লেনদেন চলতে থাকে। শেষ পর্যন্ত আইসিবির ঋণে উচ্চ সুদ হারের খবরে দাঁড়াতে পারেনি শেয়ারবাজার।
তবে বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, ইতিমধ্যে আইসিবির পক্ষ থেকে এই ঋণের সুদ হার কমানোর জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংককে চিঠি দেওয়া হয়েছে। রোববার এ বিষয়ে একটি বৈঠকও হাওয়ার করা রয়েছে। আশার করা যায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই ঋণের সুদ হার কমাবে। আর ঋণের সুদ হার কমালে প্রতিষ্ঠানটি এই ঋণের অর্থ শেয়ারবাজারে বিনিয়োগে আসার সুযোগ রয়েছে। এতে করে শেয়ারবাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থাও বাড়বে। ফলে শেয়ারবাজারে স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে।
রোববারের বাজার পর্যালোচনা
আজ ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৭.৫৪ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ১৮৫ পয়েন্টে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে‘ডিএসইএস’ ১.৩৫ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ১৬৫ পয়েন্ট এবং ‘ডিএস-৩০’ সূচক ৫.১৯ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৯১১ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
এদিন ডিএসইতে ৩৯৭ কোটি ৩২ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৪৭৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। আজ লেনদেন কমেছে ৭৬ কোটি ৪৩ লাখ টাকার বা ১৬ শতাংশ।
ডিএসইতে লেনদেন আজ হওয়া ৩৯৫টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে ১৪৮টির বা ৩৭.৪৬ শতাংশের, কমেছে ১৭৫টির বা ৪৪.৩০ শতাংশের এবং দর পরিবর্তন হয়নি ৭২টির বা ১৮.২২ শতাংশের।
অপর শেয়ারবাজার সিএসইতে আজ ৫ কোটি ৮৪ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
এদিন সিএসইতে লেনদেন হওয়া ২০২ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে ৯৫টির, কমেছে ৮৪টির এবং পরিবর্তন হয়নি ২৩টির।
এদিন সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ২ পয়েন্ট বেড়ে দাঁডিয়েছে ১৪ হাজার ৫৩৪ পয়েন্টে।