1. [email protected] : শেয়ারবার্তা প্রতিবেদক : শেয়ারবার্তা প্রতিবেদক
  2. [email protected] : শেয়ারবার্তা : nayan শেয়ারবার্তা
  3. [email protected] : news uploder : news uploder
তিন ব্যাংকের কাছে সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকা দাবি কেয়া কসমেটিকসের
বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৩৫ পিএম

তিন ব্যাংকের কাছে সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকা দাবি কেয়া কসমেটিকসের

  • আপডেট সময় : সোমবার, ২৮ অক্টোবর, ২০২৪
Keya

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত রসায়ন খাতের কোম্পানি কেয়া কসমেটিকসে অ্যাকাউন্টে ৪৯ কোটি ডলার বা ৫ হাজার ৮৮০ কোটি টাকা (বৈদেশিক মুদ্রায় পরিচালিত ব্যাংক হিসাবে) জমা না করার কারণ খতিয়ে দেখছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বেসরকারি পূবালী, সাউথ ইস্ট ও ন্যাশনাল ব্যাংকের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ এনে সম্প্রতি তদন্তের আহ্বান জানায় ক্ষতিগ্রস্ত কোম্পানিটি। অর্থ উপদেষ্টা এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরকে পৃথক চিঠির মাধ্যমে এ অনুরোধ জানানো হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনার কারণ জানাতে তিন ব্যাংককে নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

যদিও সরকারের তালিকায় কেয়া কসমেটিকস একটি ঋণখেলাপি প্রতিষ্ঠান। তবে প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান আবদুল খালেক পাঠান সংবাদ মাধ্যমকে জানান, ব্যাংকের ভুল হিসাবের কারণে খেলাপির খাতায় নাম উঠেছে তার প্রতিষ্ঠানের। অথচ তিনটি ব্যাংকের কাছে আমার পাওনা পাঁচ হাজার কোটি টাকার বেশি। খেলাপি হিসাবে কেয়া কসমেটিকস লিমিটেডের কাছে ব্যাংকের পাওনা হচ্ছে ১ হাজার ৩৫২ কোটি টাকা।

কোম্পানিটির ব্যাংক অ্যাকাউন্টে রপ্তানি আয় মার্কিন ডলার স্থানান্তর না হওয়া প্রসঙ্গে অভিযোগ জমা পড়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন এবং ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিলে (এফআরসি)।

কেয়া কসমেটিকসের এ অভিযোগ নিষ্পত্তি করতে ইতোমধ্যে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশনের পক্ষ থেকে তিনটি অডিট ফার্ম নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ঘটনার এখনো কোনো নিষ্পত্তি হয়নি।

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর নতুন করে বিষয়টি সামনে আসে। কেয়া কসমেটিকসের পক্ষ থেকে অর্থ উপদেষ্টা এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে দেওয়া চিঠিতে বলা হয়, প্রতিষ্ঠানের নিট শিপিং অ্যান্ড ইয়ার্ন বিভাগ থেকে বিদেশে পণ্য রপ্তানির পর সে আয় দেশে আসে। এরমধ্যে ১৬ কোটি ৭১ লাখ (১৬৭.১৪ মিলিয়ন) মার্কিন ডলার পূবালী ব্যাংক আদায় করেছে। ২০০৭ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে বৈদেশিক মুদ্রায় এ অর্থ আদায় করলেও ওই ব্যাংকে প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা বৈদেশিক মুদ্রায় পরিচালিত অ্যাকাউন্টে ডলার স্থানান্তর করা হয়নি।

একইভাবে রপ্তানির বিপরীতে ১১১ কোটি ১৮ লাখ (১১১১.৮৬ মিলিয়ন) মার্কিন ডলার প্রতিষ্ঠানের পক্ষে আদায় করেছে সাউথইস্ট ব্যাংক। বিপরীতে ব্যাংকে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বৈদেশিক মুদ্রায় পরিচালিত ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর করেছে মাত্র ৮৪ কোটি ৫৪ লাখ ডলার (৮৫৪.৩৯ মিলিয়ন) ডলার। কিন্তু ২৬ কোটি ৬৪ লাখ টাকা স্থানান্তর করা হয়নি।

চিঠিতে আরও বলা হয়, ২০১২ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত এই সময়ে ৮ কোটি ৮৪ লাখ মার্কিন ডলার রপ্তানি আয় আদায় করেছে ন্যাশনাল ব্যাংক। কিন্তু ব্যাংকের পক্ষ থেকে কোনো ডলার কেয়া কসমেটিকসের হিসাবে স্থানান্তর করা হয়নি। এ বিষয়ে কেয়া কসমেটিকসের চেয়ারম্যান আবদুল খালেক পাঠান জানান, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরকে এ বিষয়ে তদন্তের জন্য চিঠি দিয়েছি। গভর্নর দপ্তর থেকে ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি অ্যান্ড কাস্টমার্স সার্ভিস বিভাগে তদন্তের জন্য দিয়েছে। সেখান থেকে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোর কাছে জবাব চাওয়া হয়েছে।

আবদুল খালেক পাঠান আরও বলেন, পূবালী ব্যাংক আমার ১৬ কোটি ডলার আদায় করেছে। ব্যাংক ঋণের টাকা আমার কাছে পাওনা থাকলে সেটি অবশ্য পরিশোধ করব। কিন্তু এর আগেই আমার রপ্তানি আয়ের ডলার আমার ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর করা হয়নি।

তিনি আরও বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ড্যাশবোর্ডে এখনও আমার কাছ থেকে নেওয়া ১৩ কোটি ডলার দৃশ্যমান আছে। তিনি অভিযোগ করেন, আমি এই টাকা দাবি করলে বিএনপি করার অভিযোগ এনে ২০১২ সালে আমার ব্যবসা বন্ধ করে দেয় ব্যাংক। আমার বৈদেশিক মুদ্রা পর্যাপ্ত থাকার পর ব্যাংক ফোর্স ঋণ করে সেটিকে টার্ম লোনে ফেলে দিয়ে ঋণগ্রহীতা বানিয়ে দেয়। এরপর খেলাপি বানিয়ে দেয় আমাকে। আমি ব্যাংকের বিরুদ্ধে মামলাও দিয়েছিলাম।

পূবালী ব্যাংক ছাড়াও সাউথইস্ট ব্যাংকের কাছে বৈদেশিক মুদ্রার হিসাব চেয়ে ২০১৯ সালে অভিযোগ করেছিল কেয়া কসমেটিকস কোম্পানি। ওই সময় হিসাব চূড়ান্ত করতে উভয় পক্ষ (ব্যাংক ও কোম্পানি) সম্মত হয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মনোনীত একটি অডিট ফার্ম নিয়োগের ব্যাপারে। ব্যাংকের পক্ষ থেকে ‘হুদাভাসি চৌধুরী অ্যান্ড কোং’ নামে নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি হওয়ায় হুদাভাসি চৌধুরী অ্যান্ড কোম্পানি অনেক আগেই কেয়া কসমেটিকস এবং সাউথইস্ট ব্যাংকের অর্থাৎ উভয় প্রতিষ্ঠানের অডিট করেছিল। ফলে এই প্রতিষ্ঠানের অডিট কার্যক্রমের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে বলে আপত্তি দেয় কেয়া কসমেটিকস। পরে ব্যাংকের পক্ষ থেকে হুদাভাসি প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে একটি অডিট সম্পন্ন করে। পরে ইসলাম আফতাবুল কামরুল অ্যান্ড কোং নামে অপর একটি প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দেয় কেয়া কসমেটিকস। সেটি পরে চিঠির মাধ্যমে ব্যাংককে অবহিত করা হয়। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে ইসলাম আফতাবুল কামরুল অ্যান্ড কোং নিরীক্ষা রিপোর্ট ব্যাংকের বিপক্ষে চলে গেলে তা গ্রহণ করেনি। পরে আফতাবুলের রিপোর্ট না নেওয়া এবং হুদাভাসির রিপোর্ট চাওয়ার পরও না দেওয়া এসব বিষয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের কাছে অভিযোগ করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

এছাড়া অর্থ মন্ত্রণালয়ের ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিলের (এফআরসি) কাছে এ নিয়ে অভিযোগ করা হয়। পরবর্তীতে হুদাভাসি ও আফতাব এ দুটি প্রতিষ্ঠানের রিপোর্ট ফের নিরীক্ষার জন্য তৃতীয় অডিটর প্রতিষ্ঠান নিয়োগের প্রস্তাব দেওয়া হয় বাংলাদেশ সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে। বর্তমান আজিজ হালিম খায়ের চৌধুরী নামে একটি প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ দিয়েছে সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন। কিন্তু অডিট করতে নির্দিষ্ট অফিসার ও হিসাব ব্যাংকগুলোর পক্ষ থেকে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।

প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের খেলাপি ঋণের তালিকায় নাম রয়েছে কেয়া কসমেটিকসের। ব্যাংকের দাবি, কেয়া কসমেটিকস লিমিটেডের খেলাপি ঋণের অঙ্ক দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৩৫২ কোটি টাকা।

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:

ভালো লাগলে শেয়ার করবেন...

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ