1. [email protected] : শেয়ারবার্তা প্রতিবেদক : শেয়ারবার্তা প্রতিবেদক
  2. [email protected] : শেয়ারবার্তা : nayan শেয়ারবার্তা
  3. [email protected] : news uploder : news uploder
ছাগল-কাণ্ডের মতিউরের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩২ এএম

ছাগল-কাণ্ডের মতিউরের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

  • আপডেট সময় : মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর, ২০২৪

ছাগল-কাণ্ডে আলোচিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক কর্মকর্তা মতিউর রহমান, তার স্ত্রী লায়লা কানিজ ও ছেলে আহমেদ তৌফিকুর রহমান অর্ণবের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।

সোমবার (২১ অক্টোবর) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেনের আদালত এ আদেশ দেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দিয়েছেন আদালত।

মতিউরের বিরুদ্ধে ঘুষ-দুর্নীতি ও শেয়ারবাজারে কারসাজির মাধ্যমে অবৈধভাবে বিপুল সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। প্রাথমিক অনুসন্ধানে এসব অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে দুদক। এরই প্রেক্ষিতে সোমবার দুদকের উপ-পরিচালক আনোয়ার হোসেন আবারও তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন। আবেদনে বলা হয়, মতিউর রহমান, তার স্ত্রী লায়লা কামিজ ও ছেলে তৌফিকুর রহমান অর্ণবের দাখিল করা সম্পদ বিবরণী যাচাইয়ের জন্য ছয় সদস্য বিশিষ্ট অনুসন্ধান টিম গঠন করা হয়েছে।

গত ১৮ আগস্ট কমিশনের পূর্বানুমোদনক্রমে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত। মো. মতিউর রহমান ও তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা দেশ ত্যাগের চেষ্টা করছেন। তাই সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তাদের দেশ ত্যাগ ঠেকানোর জন্য পুনরায় আদেশ দেওয়া আবশ্যক।

এনবিআরের সাবেক কর্মকর্তা মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ অনেক পুরনো। তার বিলাসী জীবনযাপন এবং নামে-বেনামে বিপুল সম্পত্তি অর্জনের খবরের পরও পতিত আওয়ামীলীগ সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সাথে সম্পর্কের জোরে বার বার পার পেয়ে গেছেন তিনি। শাস্তির বদলে একের পর এক বাগিয়ে নিয়েছেন প্রমোশন। হয়েছিলেন বড় প্রাতিষ্ঠানিক করদাতাদের ইউনিট এলটিইউ’র কমিশনার। সবশেষে তিনি সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।

শুধু রাজস্ব সংক্রান্ত অনিয়ম-দুর্নীতি নয়, মতিউর জড়িয়ে পড়েছিলেন শেয়ারবাজারের প্লেসমেন্ট বাণিজ্যে। অভিযোগ রয়েছে, শাহজালাল ইক্যুইটি নামে একটি মার্চেন্ট ব্যাংকের অলিখিত অ্যাডভাইজারের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাথে সখ্যতার দোহাই দিয়ে এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কর্তা ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগসাজশের মাধ্যমে দূর্বল ও বন্ধ হওয়ার পথে থাকা অসংখ্য কোম্পানিকে বাজারে নিয়ে এসেছেন। আর প্রতিটি কোম্পানিতে মতিউর, তার পরিবারের সদস্যবৃন্দ এবং তার সিন্ডিকেটের সদস্যদের জন্য প্লেসমেন্টে বরাদ্দ রাখা হয় বিপুল সংখ্যক শেয়ার। আইপিওর মাধ্যমে কোম্পানিগুলো তালিকাভুক্ত হওয়ার পর উচ্চ মূল্যে এসব শেয়ার বিক্রি করে হাতিয়ে নিয়েছেন বিপুল পরিমাণ অর্থ। পরবর্তীতে এসব কোম্পানির আসল চিত্র বের হয়ে এসেছে। কমে গেছে শেয়ারের দাম। তাতে বিপুল লোকসানের মুখে পড়েছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।

মতিউরের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুদক কমপক্ষে দুই দফায় অনুসন্ধান করে। কিন্তু চতুর মতিউর প্রতিবারই দুদককে ম্যানেজ করে পার পেয়ে যায়। সর্বশেষ গত কোরবানির ঈদে মতিউরের দ্বিতীয় পক্ষের সন্তান ইফাত ১৫ লাখ টাকায় একটি ছাগল কিনে সারাদেশে আলোড়ন সৃষ্টি করলে মতিউরের দুর্নীতির বিষয়টি নতুন করে সবার নজরে আসে। এ অবস্থায় সরকার তাকে ওএসডি করে। পরবর্তীতে তিনি স্বেচ্ছায় অবসরে যান।

তালিকাভুক্ত ১৫টি কোম্পানির তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এসব কোম্পানি থেকে সেখানে মতিউর ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে কমপক্ষে নয় কোটি ৮০ লাখ টাকার প্লেসমেন্ট শেয়ার কেনা হয়েছে।

এসব শেয়ারের মালিকদের মধ্যে রয়েছেন মতিউরের প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজ লাকী, দ্বিতীয় স্ত্রী শাম্মী আক্তার শিবলী, ছেলে আহমেদ তৌফিকুর রহমান অর্ণব ও মেয়ে ফারজানা রহমান ইপশিতা। আরও আছের মতিউরের বোন হাওয়া নূর বেগম, ভাই এমএ কাইয়ুম হাওলাদার ও মো নুরুল হুদা, শ্যালিকা শারমিন আক্তার লাভলী এবং ভায়রা মোহাম্মদ নাসার উদ্দিন।

অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থে মতিউর তার দুই স্ত্রীর নামে রাজধানীতে কিনেছেন অসংখ্য ফ্ল্যাট, গড়েছেন শুটিং কমপ্লেক্সসহ বিনোদন কেন্দ্র, প্রথম স্ত্রী লাকীর নামে নরসিংদীতে গড়েছেন বিশাল পার্ক। সাভারসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় কিনেছেন শত শত একর জমি। এক সময়ের গার্মেন্টস কর্মী ভাইকে মালিক সাজিয়ে প্রতিষ্ঠা করেছেন গ্লোবাল সুজ ও এসকে ট্রিমসসহ একাধিক ইন্ডাস্ট্রি। শুধু তাই নয়, তার বিরুদ্ধে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচারেরও অভিযোগ আছে। তার প্রথম পক্ষের কন্যা পিতার পাঠানো অবৈধ অর্থে কানাডায় বিলাসী জীবনযাপন করেন। ছাগল-কাণ্ডের পর তার দ্বিতীয় স্ত্রী সন্তানসহ মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমিয়েছেন বলে অভিযোগ আছে। সেখানে সেকেন্ড হোম প্রকল্পের আওতায় তাদের গাড়ি-বাড়ি করে দিয়েছেন।

বিপুল দুর্নীতির পরও মতিউর এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। রাজনৈতিক পরিবর্তনের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে আবারও এত অপরাধ সত্ত্বেও পার পেয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ আছে।

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:

ভালো লাগলে শেয়ার করবেন...

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ