শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত জীবন বীমা কোম্পানি পপুলার লাইফ ইন্সুরেন্স নানা রকম অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে আর্থিকভাবে প্রায় পযুর্দস্ত। কোম্পানিটির বীমা গ্রাহকদের পলিসির মেয়াদ পূর্তির পরও অনেক বীমার দাবির অর্থ পরিশোধ করতে পারছে না।
এমন অবস্থায় কোম্পানিটি প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে শেয়ারবাজারে আসার প্রক্রিয়ায় থাকা ৬ কোম্পানিতে ১৪ কোটি ৭৫ লাখ টাকার প্লেসমেন্ট শেয়ারে বিনিয়োগে করে ফেঁসে গেছে।
দুর্বল ও আর্থিক অনিয়মের কারণে কোম্পানিগুলোর আইপিও আবেদন বাতিল করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এই কারণে কোম্পানিগুলো থেকে বিনিয়োগ ফেরত নিয়ে তৈরী হয়েছে শঙ্কা। কোম্পানিগুলো থেকে বিনিয়োগ ফেরত পেতে বাধ্য হয়ে মামলা করেছে পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স কর্তৃপক্ষ।
কোম্পানিটির নিরীক্ষক জানিয়েছেন, কয়েক বছর আগে প্লেসমেন্ট শেয়ারে বিনিয়োগ করেছে পপুলার লাইফ ইন্সুরেন্স। কিন্তু কোম্পানিগুলো আইপিওতে যেতে পারেনি। যেসব কোম্পানি থেকে বিনিয়োগ ফেরত বা ওইসব কোম্পানির আর্থিক অবস্থা জানা যায়নি।
তবে পপুলার লাইফ কর্তৃপক্ষ বিনিয়োগকৃত ১৪ কোটি ৭৫ লাখ টাকার মধ্যে ১৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা আদায়ে ৫ কোম্পানির বিরুদ্ধে ২০২৩ সালের ২৭ আগস্ট মামলা করেছে।
পপুলার লাইফ থেকে আমুলেট ফার্মায় ৬ কোটি টাকা, বি.ব্রাদার্স গার্মেন্টসে ৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা, বেকা গার্মেন্টসে ২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা, ক্রিডেন্স অ্যাসেট ম্যাংয়ে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা, আলবি টেক্সটাইল মিলসে ১ কোটি ২০ লাখ টাকা ও দেশ ডেনিমে ২৫ লাখ টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে।
এরমধ্যে শুধুমাত্র ক্রিডেন্স অ্যাসেট ম্যাং ছাড়া বাকি ৫ কোম্পানি থেকে ১৩ কোটি ৫০ লাখ টাকার বিনিয়োগ আদায়ে মামলা করা হয়েছে।
কোম্পানিটির নিরীক্ষক জানিয়েছেন, ২০০৬ সালের শ্রম আইনের ২৩২ ধারা অনুযায়ি, ওয়ার্কার্স প্রফিট পার্টিসিপেশন ফান্ড (ডব্লিউপিপিএফ) গঠন করা এবং তা পরবর্তী ৯ মাসের কর্মীদের মধ্যে বিতরণ করা বাধ্যতামূলক। কিন্তু পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স কর্তৃপক্ষ ২০২৩ সালের ব্যবসায় তা না করে কর্মীদেরকে ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছেন।
এছাড়া, পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স কর্তৃপক্ষ এজেন্টদেরকে চেক ও নগদে কমিশন দেন বলে নিরীক্ষায় উঠে এসেছে। কিন্তু নগদ প্রদান নিয়ম বর্হিভূত।
২০০৫ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্সের পরিশোধিত মূলধন ৬০ কোটি ৪৩ লাখ টাকা এবং মোট শেয়ার ৬০ কোটি ৪ লাখ ২৮ হাজার ৩৫৮টি।
মোট শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে রয়েছে ২৩.৭০ শতাংশ শেয়ার। বাকি শেয়ারের মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ১৮.৬৮ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে ৫৭.৬২ শতাংশ শেয়ার।