শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান পদে আরও চার বছরের জন্য পূনর্নিয়োগ পাওয়ায় অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামকে অভিনন্দন জানিয়েছে ডিএসই।
মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) ডিএসই’র পরিচালনা পর্ষদের পক্ষে চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবু পুনঃনিয়োগপ্রাপ্ত বিএসইসি’র চেয়ারম্যানকে ফুল দিয়ে অভিনন্দন জানান।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন ডিএসই’র পরিচালনা পর্ষদের সদস্য অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ, মো. আফজাল হোসেন, রুবাবা দৌলা, মো. শহীদুল ইসলাম, কাওসার আহমেদ, মো. শাকিল রিজভী, মোহাম্মদ শাহজাহান, শরিফ আনোয়ার হোসেন, রিচার্ড ডি রোজারিও এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. এটিএম তারিকুজ্জামান সহ ডিএসই’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
অভিনন্দন বার্তায় ডিএসই’র চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবু বলেন, উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অক্ষুন্ন রাখতে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের সর্বোচ্চ মর্যাদাপূর্ণ পদে চেয়ারম্যান হিসেবে অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম এর পুনঃনিয়োগ ছিল পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টদের সময়ের দাবী। আপনার দক্ষতা নিয়ে সরকারের যে আস্থা রয়েছে তারই বহিঃপ্রকাশ আপনার পুনঃনিয়োগ।
তিনি আরো বলেন, বিগত মেয়াদের অভিজ্ঞতার আলোকে আপনার নেতৃত্ব, প্রজ্ঞা এবং দিক নির্দেশনায় পুঁজিবাজার আগামীতে আরও বেশি সফলতা অর্জন করবে। আপনার করপোরেট জগতের বহুমূখী পেশাদারিত্ব অভিজ্ঞতায় ও গতিশীল নেতৃত্বে বর্তমান শেয়ারবাজার সকল প্রতিকূলতা অতিক্রম করে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাবে এবং গড়ে গঠবে উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট শেয়ারবাজার।
একই সাথে দেশের শিল্পায়নে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের জন্য শেয়ারবাজারে অংশীদারিত্ব হিসেবে কাজ করবে, যা দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগে আরও বেশি উত্সাহিত করবে। বিএসইসি’র চেয়ারম্যান হিসেবে আপনার সহযোগিতার মাধ্যমে আগামীতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ আরও সুন্দরভাবে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে বলে আমি দৃঢ়ভাবে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
ডিএসই’র চেয়ারম্যান আরও বলেন, ২০২০ সালের ১৭ মে দেশের এক সংকটময় সময়ে আপনি বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। আপনার দায়িত্বকালিন বেশীরভাগ সময়জুড়েই ছিল বৈশ্বিক অনাকাঙ্কিত বেশ কিছু ঘটনা। দুই বছরেরও অধিক সময় করোনা মহামারির ফলে দেশ এক মহাবিপর্যয়ে পড়ে৷ করোনা যেতে না যেতেই শুরু হয় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ।
সারা বিশ্বের মতো দেশের অর্থনীতিতেও যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে৷ এক বছরের অধিক সময় ধরে চলে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক মহলে উওেজনা-উওাপ৷ পুরো সময়টায় কাজের বৈরী পরিস্থিতি সত্ত্বেও শেয়ারবাজারে যুক্ত করেছেন এসএমই মার্কেট, বন্ড মার্কেট, অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ড (এটিবি), কাজ শুরু করেছেন কমোডেটি এক্সচেঞ্জ ও ডেরিভেটিভ মার্কেট চালু করার৷
এছাড়াও প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) প্রক্রিয়ায় আনেন ব্যাপক পরিবর্তন৷ সাথে বন্ধ করেন প্লেসমেন্ট বাণিজ্য, লটারিতে আনেন পরিবর্তন। মিউচ্যুয়াল ফান্ড ও বন্ড মার্কেটকে শক্তিশালী করার চেষ্টা, পাশাপাশি সরকারি বন্ডকে সেকেন্ডারি মার্কেটে লেনদেনের উপযোগী করে তোলাসহ বহুবিদ কর্মপরিকল্পনা৷
এছাড়াও আপনি দেশের শেয়ারবাজারকে বিশ্বমানের শেয়ারবাজারে পরিণত করতে এবং শেয়ারবাজারে বিদেশী বিনিয়োগ আনতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রোড-শোর মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারকে তুলে ধরেছেন৷ আপনার শেয়ারবাজার বিষয়ক বহুবিধ কর্মপরিকল্পনা ও উদ্ভাবনী চিন্তা চেতনা বিশ্বদরবারে নজর কেড়েছে৷
এরই প্রেক্ষিতে আপনি বিশ্বের শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অব সিকিউরিটিজ কমিশন’স এর এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন৷ যা প্রথমবারের মতো গৌরব অর্জন করে দেশের পুঁজিবাজার৷
শেয়ারবাজারের বর্তমান বহুবিধ প্রতিকূলতাকে চ্যালেজ্ঞ হিসেবে নিয়ে এর সকল সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে বিএসইসি চেয়ারম্যানের উদ্ভাবনী চিন্তা ধারায় সকল সুযোগ সুবিধাগুলো গ্রহণ করে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার দক্ষতা রয়েছে বলে মনে করে ডিএসই৷
আর্থিক খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে আপনার দ্বিতীয় মেয়াদে যোগদানে দেশের শেয়ারবাজার নতুন রূপে এবং নতুন আঙ্গীকে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের অন্যতম একটি আকর্ষণীয় শেয়ারবাজারে পরিণত করবে বলেও বিশ্বাস করেন বলে উল্লেখ করেছেন ডিএসই চেয়ারম্যান।