বিদায়ী সপ্তাহজুড়ে দেশের শেয়ারবাজারে পতন প্রবণতা থাকলেও শেয়ারের দাম বাড়ার ক্ষেত্রে মহাদাপট দেখিয়েছে দুর্বল বা ‘জেড’ গ্রুপের কোম্পানি। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দাম বাড়ার শীর্ষ ১০টি স্থানের মধ্যে আটটিই দখল করেছে ‘জেড’ গ্রুপের প্রতিষ্ঠান। এছাড়া দাম বাড়ার শীর্ষ ১০-এ থাকা বাকি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একটি রয়েছে ‘বি’ গ্রুপের প্রতিষ্ঠান। আর ভালো কোম্পানি বা ‘এ’ গ্রুপের প্রতিষ্ঠান আছে মাত্র একটি।
সপ্তাহজুড়ে পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের কাছে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে চাহিদার শীর্ষে ছিল ‘জেড’ গ্রুপের প্রতিষ্ঠান মেঘনা কনডেন্সড মিল্ক। ফলে সপ্তাহজুড়ে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে এই কোম্পানিটির শেয়ার দামে বড় ধরনের উত্থান ঘটেছে।
মূল্যে বড় ধরনের উত্থান হওয়ার পরও বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ কোম্পানিটির শেয়ার বিক্রি করতে রাজি হননি। ফলে সপ্তাহজুড়ে লেনদেন হয়েছে মাত্র ৩০ লাখ ৫২ হাজার টাকা। আর প্রতি কার্যদিবসে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৭ লাখ ৬৩ হাজার টাকা।
এদিকে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম সপ্তাহজুড়ে বেড়েছে ৩৬ দশমিক ৪৬ শতাংশ। টাকার অংকে বেড়েছে ৩ টাকা ৫০ পয়সা। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম দাঁড়িয়েছে ১৩ টাকা ১০ পয়সা, যা আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৯ টাকা ৬০ পয়সা।
শেয়ারের এমন দাম বাড়লেও ২০০১ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া কোম্পানিটির লভ্যাংশের ইতিহাস ভালো না। কোম্পানিটি শেষ কবে শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ দিয়েছে সে বিষয়ে ডিএসই কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি। তবে কয়েক বছর ধরে শেয়ারহোল্ডাদের কোনো লভ্যাংশ না দেয়ার কারণে কোম্পানিটির বর্তমান স্থান ‘জেড’ গ্রুপে।
ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, কোম্পানিটির মোট শেয়ারের ৫০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের হাতে। বাকি ৫০ শতাংশ আছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে।
দাম বাড়ার শীর্ষ স্থানের পাশাপাশি পরের দুটি স্থানও রয়েছে ‘জেড’ গ্রুপের প্রতিষ্ঠানের দখলে। মেঘনা কনডেন্সড মিল্কের পরেই গত সপ্তাহে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহে ছিল শ্যামপুর সুগার মিল। সপ্তাহজুড়ে এই কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বেড়েছে ৩২ দশমিক ৯৭ শতাংশ। এর পরেই রয়েছে মেঘনা পেট ইন্ডাস্ট্রিজ। সপ্তাহজুড়ে এ কোম্পানিটির শেয়ার দাম বেড়েছে ২৩ দশমিক ১৭ শতাংশ।
দাম বাড়ার তালিকায় এর পরে রয়েছে ‘বি’ গ্রুপের প্রতিষ্ঠান আনলিমা ইয়ার্ন ডাইং। প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩ দশমিক ১৭ শতাংশ। ২০১৫ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ১০ শতাংশ করে নগদ লভ্যাংশ দিয়ে এ কোম্পানিটি ‘এ’ গ্রুপে স্থান দখল করে। তবে ২০১৯ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত বছরে মাত্র ৫ শতাংশ লভ্যাংশ দেয়ায় প্রতিষ্ঠানটি ‘বি’ গ্রুপে নেমে এসেছে।
সপ্তাহজুড়ে দাম বাড়ার শীর্ষ তালিকায় পঞ্চম স্থান দখল করেছে ‘জেড’ গ্রুপের প্রতিষ্ঠান ইমাম বাটন। কোম্পানিটির শেয়ার দাম বেড়েছে ১৮ দশমিক ১০ শতাংশ। এর পরে রয়েছে জেড গ্রুপের আর এক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ওয়াল্ডিং। এ কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বেড়েছে ১৫ দশমিক ২২ শতাংশ।
এছাড়া গত সপ্তাহে দাম বাড়ার শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় থাকা ‘জেড’ গ্রুপের প্রতিষ্ঠান জিল বাংলা সুগার মিলের ১৩ দশমিক ৫২ শতাংশ, ‘এ’ গ্রুপের প্রতিষ্ঠান এইচ আর টেক্সটাইলের ১২ দশমিক ৮৩ শতাংশ, ‘জেড’ গ্রুপের প্রতিষ্ঠান প্রাইম ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের ১১ দশমিক ৯৪ শতাংশ এবং সাইনলাইফ ইন্স্যুরেন্সের ১১ দশমিক ৫৪ শতাংশ দাম বেড়েছে।
শেয়ারবার্তা / আনিস