শেয়ারবাজারের টানা পতন থামাতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন অংশীজনদের নিয়ে গতকাল সোমবার বৈঠকে বসে। বৈঠকে শেয়ারবাজারের অংশীজনদের প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে বাজার ইতিবাচক রাখার জন্য তিন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। কিন্তু সিদ্ধান্ত গ্রহণের পরের দিন আজ মঙ্গলবার বাজারে বড় পতন হয়েছে।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বৈঠকে অংশীজনরা বাজার ইতিবাচক রাখার প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবে তাদের ইতিবাচক কোনো ভূমিকা দেখা যায়নি।বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন,বিএসইসির কর্মকর্তারা মেয়াদ পুর্তির দ্বারপ্রান্তে। যে কারণে নিয়ন্ত্রক সংস্থা কর্তাব্যক্তিদের কথা মার্চেন্ট ব্যাংক, ব্রোকারেজ হাউজ, মিউচ্যুয়াল ফান্ড ব্যবস্থাপকরা এখন আর আমলে নিতে চায় না।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত ১১ ফেব্রুয়ারি প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ছিল ৬ হাজার ৪৪৭ পয়েন্ট। এরপর থেকেই চলছে ধারাবাহিক পতন। একদিন বাজার ইতিবাচক থাকলে তিন দিন থাকে নেতিবাচক। সর্বশেষ রোববার (২১ এপ্রিল) সূচক ৭৯৪ পয়েন্ট হারিয়ে ৫ হাজার ৬৫৩ পয়েন্টে নেমে যায়।
বাজারের এমন লাগামহীন পতনে অবশেষে নড়েচড়ে বসে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন-বিএসইসি। প্রতিষ্ঠানটির কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ ব্রোকারেজ হাউজ অ্যাসোসিয়েশন, মার্চেন্ট ব্যাংক অ্যাসোসিয়েশন, অ্যাসেট মেনেজম্যান্ট ব্যবস্থাপক এবং শীর্ষ ব্রোকারেজ হাউজের কর্মকর্তাদের লাগামহীন পতনের কারণ জানতে এবং পতন ঠেকাতে করণীয় বিষয় নির্ধারণ করতে বৈঠকে বসেন। বৈঠকের খবরে গতকাল সোমবার বাজার ইতিবাচক প্রবণতায় ফিরেছে। এদিন ডিএসইর সূচক বেড়েছিল ২১ পয়েন্টে।
মঙ্গলবারের বাজার পর্যালোচনা
সপ্তাহের তৃতীয় কর্মদিবস আজ মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) ডিএসই’র প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৪১.২৫ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৬৩৩ পয়েন্টে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরীয়াহ সূচক ৭.৩৬ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ২৩৫ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৩.৪৮ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ৯৮০ পয়েন্টে।
আজ ডিএসইতে ৫৭৯ কোটি ৫৬লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কর্মদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৫৭৪ কোটি ৯২ লাখ টাকার। আগের দিনের চেয়ে লেনদেন কমেছে ৪ কোটি ৬৪ লাখ টাকা।
আজ ডিএসইতে ৩৯৬টি প্রতিষ্ঠানের ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৫০টির, কমেছে ৩১০টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৬টির।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) আজ ১৫ কোটি ৬৯ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১১ কোটি ৪৫ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট।
আজ সিএসইতে ২১৫টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৪৩টির, কমেছে ১৪৫টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৭টি প্রতিষ্ঠানের।
আগের দিন সিএসইতে ১৯৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। যার মধ্যে দর বেড়েছিল ৯১টির, কমেছিল ৮১টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ২৭টি প্রতিষ্ঠানের।