সম্প্রতি দেশে অ্যানেস্থেসিয়ায় কিছু রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে অভিযানের পর এবার দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে অস্ত্রোপচারে ব্যবহৃত ওষুধ পরিবর্তনের নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রণালয়। বুধবার (২৭ মার্চ) স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ এ বিষয়ক এক সরকারি আদেশ জারি করেছে।
মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব জসীম উদ্দীন হায়দার স্বাক্ষরিত এই অফিস আদেশে অ্যানেস্থেসিয়াজনিত মৃত্যু ও এর অপপ্রয়োগ রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
আদেশে বলা হয়েছে, সম্প্রতি অ্যানেস্থেসিয়ার কারণে কতিপয় রোগীর মৃত্যু ও আকস্মিক জটিলতা প্রতিরোধে এবং অ্যানেস্থেসিয়ায় ব্যবহৃত ওষুধের গুণগত মান নিশ্চিতকল্পে অ্যানেস্থেসিয়াতে হ্যালোজেন ব্যবহার ও এর বিকল্প নির্ধারণ এবং অ্যানেস্থেসিয়াজনিত মৃত্যু ও এর অপপ্রয়োগ রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
এতে বলা হয়েছে, দেশের সকল সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে অপারেশন থিয়েটারে ইনহেলেশনাল অ্যানেস্থেটিক হিসেবে হ্যালোথেনের পরিবর্তে আইসোফ্লুরেন/ সেভোফ্লুরেন ব্যবহার করতে হবে। দেশের সকল সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে হ্যালোথেন/আইসোফ্লুরেন/সেভোফ্লুরেন ভেপোরাইজারের সংখ্যা এবং বিদ্যমান হ্যালোথেন ভেপোরাইজার পরিবর্তন করে আইসোফ্লুরেন/সেভোফ্লুরেন ভেপোরাইজার প্রতিস্থাপন করতে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দের প্রাক্কলন করতে হবে।
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের অনুমোদন ছাড়া হ্যালোজেন ক্রয়-বিক্রয় ও ব্যবহার রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। দেশের সব সরকারি, বেসরকারি অ্যানেস্থেসিওলজিস্টদের নিয়ে হ্যালোথেনের পরিবর্তে আইসোফ্লুরেন ব্যবহার সংক্রান্ত নির্দেশনা বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। সব সরকারি হাসপাতাল থেকে বর্তমানে ব্যবহৃত হ্যালোথেন ভেপোরাইজারের পরিবর্তে আইসোফ্লুরেন ভেপোরাইজার প্রতিস্থাপনের জন্যে চাহিদা অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে।
আরও বলা হয়, নতুন অ্যানেস্থেসিয়া মেশিন কেনার ক্ষেত্রে স্পেসিফিকেশন নির্ধারণে স্পষ্টভাবে আইসোফ্লুরেন, সেভোফ্লুরেন ভেপোরাইজারের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে হবে।
সম্প্রতি ঢাকার ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে শিশু আয়ান আহমদ ও মালিবাগের জেএস ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আহনাফ তাহমীদ আলম আয়হাম নামে দুই শিশুকে খতনা করানোর জন্য অজ্ঞান করা হয়।
এরপর দুই শিশুর মৃত্যু হয়। এ ছাড়া ধানমন্ডির ল্যাবএইড হাসপাতালে অ্যান্ডোসকপি করার জন্য অ্যানেস্থেসিয়া ব্যবহারে রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। এসব ঘটনার পর সঠিক পদ্ধতিতে অ্যানেস্থেসিয়া দেওয়া হচ্ছে কি না, সে প্রশ্ন সামনে আসে।