যক্ষ্মা বা টিবি রোগের নাম শুনলে সবাই ভয়ে আঁতকে ওঠেন। টিউবারকিউলোসিস বা টিবিতে প্রতিবছর লাখ লাখ মানুষ আক্রান্ত হন। এমনকি এই রোগে মৃত্যুর সংখ্যাও অনেকটাই। তবে এই রোগের মোকাবিলায় একটি নতুন লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। ২০৩০ সালের মধ্যে টিবি রোগের প্রকোপ কমানোর লক্ষ্য নিয়ে বিশ্বের দেশগুলো।
যক্ষ্মা আসলে কী?
টিবি হলো ব্যাকটেরিয়াঘটিত। এই রোগের ব্যকটেরিয়া হলো মাইকোব্যাকটেরিয়াম টিউবারকিউলোসিস। প্রাথমিকভাবে টিবি রোগ ফুসফুসে একটি সংক্রমণের আকারে থাকে। সেই সংক্রমণ বাড়তে বাড়তেই রোগের আকার নেয়।
তবে নতুন এক গবেষণায় জানা গেছে, এই সুপ্ত টিবি সংক্রমণ থেকে রোগ হতে পারে কি না তা বোঝা যাবে নতুন এক পরীক্ষায়। সেটি বোঝা গেলে নির্দিষ্ট সময় থেকেই রোগীর চিকিৎসা শুরু করতে পারবেন চিকিৎসকরা।
ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব হেলথ অ্যান্ড কেয়ার রিসার্চ, ইউনিভার্সিটি অব লেসেস্টার ও বায়োমেডিকাল রিসার্চ সেন্টারের গবেষকরা মিলে এই নতুন পদ্ধতি খুঁজে বের করেছেন। এই গবেষণার মুখ্য গবেষক প্রণবাশিষ হালদার সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, বর্তমানে যে ধরনের পরীক্ষাগুলো বাজারে উপলব্ধ, সেগুলো মূলত ত্বক বা রক্তের পরীক্ষা।
এই পরীক্ষায় কাদের টিবি হওয়ার ঝুঁকি আছে, তা বোঝা যায়। তবে কাদের মধ্যে এই রোগের ঝুঁকি বেশি আর কাদের মধ্যে কম, সে পার্থক্য করা যায় না। নতুন পদ্ধতিতে কাদের ঝুঁকি বেশি তা বুঝতে সুবিধা হবে।
তার মতে, টিবি রোগের হার কমাতে হলে টার্গেটেড ট্রিটমেন্ট বেশি দরকার। আর রোগের ঝুঁকি কাদের বেশি তা জানা গেলে কাদের চিকিৎসা দরকার তা বোঝা সহজ হয়।
কী সেই পরীক্ষা?
সাধারণত পিইটি-সিটি ও রক্তপরীক্ষা করে টিবি রোগ শনাক্ত করা হয়। তবে এই নয়া পদ্ধতিতে অ্যাক্টিফাজ নামের একটি বিশেষ পরীক্ষা করা হয়েছে। অ্যাক্টিফাজ আসলে এক ধরনের ব্যাকটেরিয়োফাজ অ্যাসে পরীক্ষা।
ব্যাকটেরিয়োফাজ খুঁজে খুঁজে ব্যাকটেরিয়াকেই আক্রমণ করে। এর ফলে টিবি ব্যাকটেরিয়ার ডিএনএকে শনাক্ত করা সহজ হয়ে যায়। যা অন্য পদ্ধতিতে করা মুশকিল।
কোন কোন লক্ষণে সতর্ক হবেন?
যক্ষার লক্ষণ কী কী?
গুরুতর কাশি (২ সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হয়)
পরিবারে টিবির রোগী থাকলে
কাশির সঙ্গে রক্ত ওঠা
ক্লান্তি
ক্ষুধা কমে যাওয়া
ওজন কমে যাওয়া
শরীরে ঠান্ডা লাগা
জ্বর
রাতে ঘাম হওয়া ইত্যাদি।
আজ বিশ্ব যক্ষ্মা দিবস। প্রতিবছর ২৪ শে মার্চ পালিত হয় দিবসটি। ১৮৮২ সালের এই দিনেই ডা. রবার্ট কোচ যক্ষ্মা সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া (টিবি) আবিষ্কার করেন।
সূত্র: পিটিআই