1. [email protected] : শেয়ারবার্তা প্রতিবেদক : শেয়ারবার্তা প্রতিবেদক
  2. [email protected] : শেয়ারবার্তা : nayan শেয়ারবার্তা
  3. [email protected] : news uploder : news uploder
জানুয়ারি থেকে উৎপাদনমুখী শিল্পে সুদহার সিঙ্গেল ডিজিট
শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৪ পিএম

জানুয়ারি থেকে উৎপাদনমুখী শিল্পে সুদহার সিঙ্গেল ডিজিট

  • আপডেট সময় : বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৯
taka

আগামী ১ জানুয়ারি থেকে উৎপাদনশীল খাতে ব্যাংকগুলোকে ৯ শতাংশ সুদ কার্যকর করতে হবে। উৎপাদনশীল সব ধরনের শিল্পের মেয়াদি ও চলতি মূলধন ঋণে এর বেশি সুদ নেওয়া যাবে না। শিল্পঋণের সেবা খাত এ সুবিধা পাবে না। এ ছাড়া একবার সুদহার কমার পর কেউ খেলাপি হলে তার সুদহার বেড়ে ১১ শতাংশ হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের গতকালের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শিগগিরই এ বিষয়ে সার্কুলার জারি করে ব্যাংকগুলোতে পাঠানো হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সভাকক্ষে গভর্নর ফজলে কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে পরিচালনা পর্ষদের অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। বিকেল ৫টায় শুরু হয়ে বৈঠক শেষ হয় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার পর।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, বৈশ্বিক অর্থনীতিতে ধীরগতি, কাঙ্ক্ষিত জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন এবং খেলাপি ঋণ কমানোর লক্ষ্যে ব্যাংকগুলোর ওপর সিঙ্গেল ডিজিট সুদহার কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক মনে করে শুরুতে ব্যাংকগুলোর কিছুটা অসুবিধা হলেও ধীরে ধীরে তা কাটিয়ে উঠবে। ঋণের সুদ কমানোর প্রেক্ষাপটে ব্যাংকগুলো আমানতে কম সুদ নেওয়া শুরু করবে। এ ছাড়া সামগ্রিকভাবে ব্যাংক খাতের মুনাফা কমলেও সামগ্রিক অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।

জানা গেছে, ব্যাংক খাতে বর্তমানে প্রায় ১২ লাখ কোটি টাকা আমানত রয়েছে। ঋণ রয়েছে ১০ লাখ কোটি টাকার মতো। এসব ঋণের মধ্যে ২৫ শতাংশের বেশি রয়েছে উৎপাদনশীল শিল্পঋণ। এসব ঋণে বর্তমানে যে পরিমাণ সুদই থাকুক ১ জানুয়ারি থেকে তা ৯ শতাংশে নামিয়ে আনতে হবে। নতুন করে যেসব ঋণ দেওয়া হবে সেখানেও ৯ শতাংশের বেশি সুদ নেওয়া যাবে না। এর বাইরে আগে থেকেই কৃষিঋণে ৯ শতাংশ সুদহার নির্ধারিত আছে। এ ছাড়া প্রি-শিপমেন্ট রপ্তানি ঋণে সর্বোচ্চ ৭ শতাংশ সুদহার নির্ধারিত আছে। বর্তমানে কৃষি খাতে ব্যাংকগুলোর ঋণ রয়েছে প্রায় ৪৩ হাজার কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কুটির, ক্ষুদ্র ও মাঝারিশিল্প তথা সিএমএসএমই খাতে ব্যাংকগুলোর ঋণ স্থিতি রয়েছে দুই লাখ ৫ হাজার ৪৯১ কোটি টাকা। এর মধ্যে মেয়াদি ঋণ রয়েছে ৭৯ হাজার ৪৮০ কোটি টাকা। ব্যবসা তথা ট্রেডিংয়ে রয়েছে ৮৫ হাজার ২৬৩ কোটি টাকা। সেবা খাতের আওতায় রয়েছে ৪০ হাজার ৭৪৮ কোটি টাকা। আর গত জুন পর্যন্ত শিল্প খাতে মোট ঋণ ছিল তিন লাখ ৯৯ হাজার ৮৫৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে চলতি মূলধন ঋণ ছিল তিন লাখ ১৯ হাজার ৭ কোটি টাকা। মেয়াদি ঋণ ছিল ৮০ হাজার ৮৫০ কোটি টাকা। বর্তমানে সরকারি খাতের ব্যাংকগুলো সব ধরনের শিল্পঋণ বিতরণ করছে ৯ শতাংশ সুদে। বেসরকারি খাতের অধিকাংশ ব্যাংক ৯ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত সুদহারের সীমা আরোপ করে রেখেছে। গ্রাহক বিবেচনায় কম-বেশি সুদ নেওয়ার জন্য এভাবে নির্ধারণ করা আছে।

২০১৮ সালের ১ জুলাই থেকে সিঙ্গেল ডিজিট সুদহার বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছে ব্যাংকের উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিএবি। যদিও ওই ঘোষণার পর থেকে সুদহার না কমে বাড়ছে। তবে কর্মসংস্থান বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সুদহার কমানোর লক্ষ্যে অর্থমন্ত্রীর পরামর্শে গত ১ ডিসেম্বর ৭ সদস্যের কমিটি গঠন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস এম মনিরুজ্জানের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি শিল্পঋণের এক অঙ্ক সুদহার বেঁধে দেওয়ার সুপারিশসহ গত ১২ ডিসেম্বর প্রতিবেদন দেয়। তবে সিঙ্গেল ডিজিট সুদহার কার্যকরের জন্য সরকারি তহবিলের ৫০ শতাংশ বেসরকারি ব্যাংকে রাখা বাধ্যতামূলক করার সুপারিশ করা হয়। এ অর্থ মেয়াদি আমানতে নয়, রাখতে হবে কম সুদের চলতি ও এসএনডি হিসাবে। এ সুপারিশ কার্যকরের বিষয়টি সরকারকে দেখতে হবে।

স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশে নিয়ন্ত্রিত সুদহার ব্যবস্থা চালু ছিল। অর্থাৎ কোন খাতে কী পরিমাণ সুদ নেওয়া যাবে তা ঠিক করে দিত কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে মুক্তবাজার অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় ১৯৮৯ সাল সুদহার নির্ধারণের ক্ষমতা ব্যাংকগুলোর হাতে ছেড়ে দেওয়া হয়। অবশ্য বৈশ্বিক মন্দা-পরবর্তী ২০০৯ সালে আবার অধিকাংশ খাতে সুদহারের সীমা বেঁধে দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পরবর্তী সময়ে প্রি-শিপমেন্ট রপ্তানি ঋণে ৭ শতাংশ ও কৃষিতে ৯ শতাংশ রেখে বাকি সব খাতে সুদহারের ঊর্ধ্বসীমা তুলে দেওয়া হয়। বাজারে ব্যাপক তারল্য থাকায় ২০১৬ সালের পুরো সময় এবং ২০১৭ সালের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ব্যাংকগুলো অধিকাংশ খাতে সিঙ্গেল ডিজিট সুদে ঋণ দিচ্ছিল। তবে টাকার টানাটানির কারণে সুদ বাড়িয়ে শিল্প খাতেই এখন ১৫ শতাংশ পর্যন্ত সুদ নিচ্ছে অনেক ব্যাংক। এরকম বাস্তবতায় গত বছরের জুলাই থেকে এক অঙ্ক সুদহার নির্ধারণের নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছে ব্যাংকগুলোর উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস। অর্থমন্ত্রী নিজেও এ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে কথা বললেও কাজের কাজ কিছু হয়নি। এরকম বাস্তবতায় সুদহারের ঊর্ধ্বসীমা বেঁধে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

শেয়ারবার্তা / আনিস

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:

ভালো লাগলে শেয়ার করবেন...

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ