আ হ ম মুস্তফা কামাল অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দায়িত্ব নেয়ার পর ব্যাংকের উদ্যোক্তা পরিচালক ও ব্যবস্থাপকদের সঙ্গে প্রথম আলোচনায় ঘোষণা দিয়েছিলেন, খেলাপি এক টাকাও বাড়বে না। কিন্তু অর্থমন্ত্রীর হুঙ্কারের পর ঘটেছে তার উল্টো। খেলাপি ঋণ নিয়ে বছরজুড়ে আলোচনা-সমালোচনায় থাকে ব্যাংক খাতে।
ব্যাংক খাত ছাড়াও বেসরকারি ঋণ আশানুরূপ না বাড়া, ব্যাংকের সুদের হার এক অঙ্কে নামিয়ে আনার ব্যর্থতা, ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকারের ঋণের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া, একের পর এক ব্যর্থতার পর নতুন করে তিন ব্যাংকের অনুমোদনসহ রফতানি আয়ের নিম্নগতির প্রভাবে বৈদেশিক বাণিজ্যে ঘাটতির খবর বেশ আলোচিত হয় শেষ হতে চলা বছরে। তবে বছরটিতে আশাজাগানিয়া খবর ছিল ‘রেমিট্যান্সের পালে হাওয়া’।
খালাপি ঋণ : অর্থমন্ত্রীর ‘খেলাপি ঋণ এক টাকাও বাড়বে না’- এমন হুঁশিয়ারির পর গত নয় মাসে খেলাপি ঋণ না কমে উল্টো বেড়েছে ২২ হাজার কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান বলছে, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংক খাতে বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে নয় লাখ ৬৯ হাজার ৮৮২ কোটি টাকা। এর মধ্যে অবলোপন বাদে খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে প্রায় এক লাখ ১৬ হাজার ২৮৮ কোটি টাকা। যা মোট ঋণের ১১ দশমিক ৯৯ শতাংশ। অবলোপনসহ খেলাপি ঋণের পরিমাণ দেড় লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।
২০১৮ সালের ডিসেম্বর শেষে খেলাপি ঋণ ছিল ৯৩ হাজার ৯৯১ কোটি টাকা। এ হিসাবে গত নয় মাসে দেশে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২২ হাজার নয় কোটি টাকা।
বেসরকারি ঋণ : নানা উদ্যোগের পরও আশানুরূপ বাড়ছে না বেসরকারি ঋণ। গত কয়েক মাস ধরে ঋণ প্রবৃদ্ধির হার ধারাবাহিক কমছে। চলতি অর্থবছরের অক্টোবরে ঋণ প্রবৃদ্ধির ১০ দশমিক ০৪ শতাংশ হয়েছে। আগের মাস সেপ্টেম্বর ছিল ১০ দশমিক ৬৬ শতাংশে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, খেলাপি ঋণ লাগামহীনভাবে বাড়ছে। এ কারণে ব্যাংকগুলোতে বাড়তি নিরাপত্তা সঞ্চিতি (প্রভিশন) রাখতে হচ্ছে। অন্যদিকে আশানুরূপ আমানত পাচ্ছে না ব্যাংকগুলো। ফলে ব্যাংকগুলোর কাছে এখন পর্যাপ্ত নগদ অর্থ নেই। বেসরকারি বিনিয়োগ কমে যাওয়ার এটি একটি অন্যতম কারণ। এছাড়া আর্থিক খাতের নানা কেলেঙ্কারি ও সঞ্চয়পত্রে সুদ বেশি হওয়ায় ব্যাংকে আমানত প্রবৃদ্ধি কমে গেছে। ফলে একদিকে চাহিদা থাকা সত্ত্বেও ঋণ দিতে পারছে না ব্যাংকগুলো। অন্যদিকে উচ্চ সুদহারের কারণে ঋণ নিতেও আগ্রহ দেখাচ্ছেন না উদ্যোক্তা ব্যবসায়ীরা। সব মিলিয়ে বেসরকারি ঋণ কাঙ্ক্ষিত হারে বাড়ছে না। যে হারে বাড়ছে তা মুদ্রানীতির লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক কম। এত কম হারে বাড়লে কাঙ্ক্ষিত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হবে না- বলছেন অর্থনীতিবিদরা।
চলতি (২০১৯-২০) অর্থবছরের ঘোষিত মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন কমিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। মুদ্রানীতিতে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহ ধরা হয়েছে ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ। এর মধ্যে ডিসেম্বর ২০১৯ পর্যন্ত লক্ষ্য ঠিক করা হয় ১৩ দশমিক ২ শতাংশ। যা গেল অর্থবছরের জুন পর্যন্ত ছিল ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ। অন্যদিকে চলতি অর্থবছরের (জুলাই-জুন) পর্যন্ত সরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধির প্রক্ষেপণ করা হয় ২৪ দশমিক ৩ শতাংশ। অভ্যন্তরীণ ঋণ প্রবৃদ্ধি ধরা হয় ১৫ দশমিক ৯০ শতাংশ।
বেসরকারি খাতে ঋণের বিষয়ে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন অনিয়মের কারণে ব্যাংকগুলোর ওপর মানুষের আস্থা কমেছে। ফলে প্রত্যাশা অনুযায়ী আমানত আসছে না। অর্থ সংকটে পড়ছে ব্যাংকগুলো। এছাড়া অবকাঠামোগত সমস্যা, ঋণের উচ্চ সুদহারসহ বিভিন্ন কারণে অনেক উদ্যোক্তা ঝুঁকি নিয়ে ঋণও নিতে চাচ্ছেন না। এসব কারণে বেসরকারি খাতে ঋণ কমে গেছে।
তিনি বলেন, কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধির জন্য বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। এজন্য সরকারকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে। সুশাসন নিশ্চিত করে আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে। উদ্যোক্তাদের মধ্যে আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। তাহলে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগের পাশাপাশি ঋণের চাহিদাও বাড়বে।
এদিকে বেসরকারি ঋণের প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়া এবং খেলাপি ঋণ বাড়ার অন্যতম কারণ হিসাবে উচ্চ ঋণের সুদহারকে দায়ী করছেন সরকার। ঋণের সুদহার সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনতে গত ১ ডিসেম্বর (রোববার) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের নির্দেশনায় সাত সদস্যের কমিটি গঠন করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। ১০ ডিসেম্বর সাত কার্যদিবস শেষে হয়েছে। কমিটি উৎপাদনশীল খাত তথা শিল্প ঋণে সুদহার সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনার সুপারিশসহ প্রতিবেদন দাখিল করেছে।
প্রতিবেদন দাখিলের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৮ ডিসেম্বর অর্থমন্ত্রী ঘোষণা দেন, আগামী ১ জানুয়ারি থেকে ব্যাংকগুলোতে সুদের হার এক অঙ্ক (১০ শতাংশের নিচে) কার্যকর হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে এবং শিগগিরই প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।
সরকারের ঋণ বাড়ছে : বেসরকারি ঋণ কমলেও হু-হু করে বাড়ছে সরকারি ঋণ। চলতি অর্থবছরের ১ জুলাই থেকে ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত প্রায় পাঁচ মাসে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকার ঋণ নিয়েছে ৪৩ হাজার ৮৬৬ কোটি টাকা, যা লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৯২ শতাংশ। বাজেট ঘাটতি মেটাতে চলতি অর্থবছরে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ৪৭ হাজার ৩৬৪ কোটি টাকা ঋণ বা ধার নেয়ার লক্ষ্য ধরে সরকার।
ব্যাংক-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কাঙ্ক্ষিত হারে রাজস্ব আদায় হচ্ছে না। আবার সঞ্চয়পত্রে টিআইএন বাধ্যতামূলক করায় সঞ্চয়পত্র থেকেও আগের মতো ঋণ পাচ্ছে না সরকার। ফলে ব্যাংক ঋণে ঝুঁকছে সরকার।
কমছে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ : করের হার বৃদ্ধি এবং বিক্রিতে কড়াকড়ি আরোপ করায় চলতি অর্থবছর থেকে কমছে ‘নিরাপদ বিনিয়োগ’ হিসেবে পরিচিত সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ। ব্যাংকগুলোর আমানতের সুদের হার কম এবং পুঁজিবাজারে মন্দার কারণে গত কয়েক বছর ধরে বাড়ছিল সঞ্চয়পত্র বিক্রি। এতে সরকারের ঋণের বোঝা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়। তাই বিক্রির চাপ কমাতে ১ জুলাই থেকে মুনাফার ওপর উৎসে করের হার ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হয়। একইসঙ্গে এক লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র কিনতে টিআইএন (কর শনাক্তকরণ নম্বর) বাধ্যতামূলক করা হয়। ব্যাংক অ্যাকাউন্ট না থাকলে কোনো সঞ্চয়পত্র কেনা যাবে না মর্মে শর্ত আরোপ করা হয়। ফলে কমছে এ খাতে বিনিয়োগ।
সর্বশেষ তথ্য বলছে, চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) পাঁচ হাজার ৫১২ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। গত বছরের একই সময়ে বিক্রির পরিমাণ প্রায় তিন গুণেরও বেশি ছিল; ১৭ হাজার ৮২৯ কোটি টাকা।
নতুন ব্যাংক অনুমোদন : চলতি বছরে ব্যাংক খাতের আরেকটি সমালোচনার বড় জায়গা হলো নতুন নতুন ব্যাংকের অনুমোদন। ব্যাংকার, অর্থনীতিবিদ ও বিশ্লেষকদের বিরোধিতা সত্ত্বেও শুধুমাত্র রাজনৈতিক বিবেচনায় দেয়া হয় নতুন তিন ব্যাংকের অনুমোদন। ব্যাংকগুলো হলো- বেঙ্গল কমার্শিয়াল, পিপলস ও সিটিজেন ব্যাংক। প্রাথমিকভাবে আগ্রহপত্র বা লেটার অফ ইনটেন্ট (এলওআই) পাওয়ার পরও শর্ত অনুযায়ী পর্যাপ্ত মূলধন সংগ্রহসহ বিভিন্ন নির্দেশনা পরিপালনে ব্যর্থ হওয়ায় এখনও চূড়ান্ত লাইসেন্স পায়নি এসব ব্যাংক। তবে চলতি বছর কার্যক্রম চালু করেছে পুলিশের মালিকানাধীন কমিউনিটি ব্যাংক। ব্যাংকটি গত বছর অনুমোদন পেয়েছিল।
বাণিজ্য ঘাটতি : রফতানি আয়ের নিম্নগতির প্রভাবে বৈদেশিক বাণিজ্যে ঘাটতি পড়েছে। চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়ায় ৫৬২ কোটি ডলার; বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ৪৭ হাজার কোটি টাকা। পাশাপাশি বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের চলতি হিসাবেও ঘাটতি দেখা দেয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে ইপিজেডসহ রফতানি খাতে বাংলাদেশ আয় করেছে এক হাজার ২৫১ কোটি ৭০ লাখ ডলার। এর বিপরীতে আমদানি বাবদ ব্যয় করেছে এক হাজার ৮১৩ কোটি ৭০ লাখ ডলার। এ হিসাবে অক্টোবর শেষে দেশে বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়ায় ৫৬২ কোটি ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় (বিনিময় হার ৮৫ টাকা) দাঁড়ায় প্রায় ৪৭ হাজার ৭৭ কোটি টাকা। ২০১৮-১৯ অর্থবছরের একই সময় ঘাটতি ছিল ৫৩২ কোটি ডলার। অর্থাৎ গত অর্থবছরের একই সময়ে তুলনায় এবার ঘাটতি বেড়েছে ২৯ কোটি ৭০ লাখ টাকা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য আরও বলছে, অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত থাকলেও সেপ্টেম্বর থেকে তা ঋণাত্মক হয়েছে। প্রথম চার মাসে চলতি হিসাবে ঘাটতি দাঁড়ায় ১৩০ কোটি ৪০ লাখ ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ২০৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার।
রেমিট্যান্সের পালে সুবাতাস : অর্থনীতির অন্যান্য সূচক নেতিবাচক হলেও সুবাতাস বয়েছে রেমিট্যান্সের পালে। রেমিট্যান্সে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা প্রদান এবং টাকার বিপরীতে ডলারের মূল্য বৃদ্ধিতে বৈধ পথে বেড়েছে রেমিট্যান্সের প্রবাহ। চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) রেমিট্যান্স এসেছে ৭৭১ কোটি ডলার। যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২২ দশমিক ৬০ শতাংশ বেশি। গত বছর একই সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ৬২৯ কোটি ডলার।
পিপলস লিজিং অবসায়ন : অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা আর লুটপাটের অভিযোগে পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস (পিএলএফএসএল)-কে প্রথমবারের মতো অবসায়নের সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। চলতি বছরের ১৪ জুলাই পিপলস লিজিং অবসায়নের জন্য আদালতে মামলা দায়ের করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এছাড়া অনিয়মের দায়ে বহিষ্কার করা হয় প্রতিষ্ঠানের নয় পরিচালককে। বাংলাদেশ ব্যাংকের অভিযোগ, বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে ৫৭০ কোটি টাকা বের করে নেন প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকরা।
এদিকে পিপলস লিজিং বন্ধ হওয়ায় বিপাকে পড়েন প্রতিষ্ঠানের আমানতকারীরা। প্রতিষ্ঠানটির বেশির ভাগ সম্পদ লুটে নেয়ায় আমানত ফেরত নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। আমানতকারীরা ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে টাকা ফেরত পেতে অর্থমন্ত্রী ও গভর্নরের সঙ্গে বৈঠক করেন। কিন্তু এখনও কোনো সুরাহ হয়নি।
অস্থির ডালারের বাজার : চলতি বছরের শুরু থেকে অস্থির ডলারের বাজার। সংকটের কারণে হু-হু করে বেড়েছে ডলারের দাম। অন্যদিকে দুর্বল হয়েছে টাকার মান। বছরের প্রথম আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলারের দর নির্ধারণ ছিল ৮৩ টাকা ৯০ পয়সা। অর্থাৎ পণ্য আমদানিতে প্রতি ডলারে ব্যয় করতে হয় ৮৩ টাকা ৯০ পয়সা। চলতি বছরে দফায় দফায় দাম বেড়ে ডলার ৮৪ টাকা ৯০ পয়সা দাঁড়িয়েছে। তবে সাধারণ মানুষ, যারা ভ্রমণ করতে বিদেশে যাচ্ছেন, তাদের ৮৭ থেকে ৮৮ টাকা দরে কিনতে হচ্ছে ডলার।
ক্যাসিনো অভিযানে জব্দ ব্যাংক হিসাব : চলতি বছরের আলোচিত ঘটনা ছিল ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান। বিভিন্ন ক্লাবে চলে অভিযান। ক্লাবের নামে অসামাজিক কার্যকলাপ, ক্যাসিনো, সন্ত্রাস, ঘুষ, টেন্ডারবাজির ঘটনায় অর্জিত অর্থ ও সম্পদের উৎস জানতে চতুর্মুখী তদন্ত চলছে। নজর রাখা হয়েছে আলোচিত ব্যক্তিদের ব্যাংক হিসাব, ব্যাংকের লকারে থাকা সম্পদ, তাদের প্রতিষ্ঠান ও নামে-বেনামে থাকা সম্পদ ও আয়কর নথির ওপর। এরই মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে রাজস্ব ফাঁকি ও অর্থ পাচারের বিষয়ে খোঁজ নেয়া হচ্ছে। একই ইস্যুতে মাঠে আছে দুর্নীতি দমন কমিশনও (দুদক)। কোটি কোটি টাকা পাচারের তথ্য সংগ্রহে কাজ করছে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা। আর বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এ তিন সংস্থার চাহিদামাফিক তথ্য সরবরাহ করা হচ্ছে। একই সঙ্গে তিন সংস্থার নির্দেশনা মতো বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব স্থগিত করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান আবু হেনা মোহা. রাজি হাসান জানান, ক্যাসিনো, সন্ত্রাস, মানিলন্ডারিং, ঘুষসহ বিভিন্ন অপরাধে যাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে তাদের ব্যাংক হিসাব স্থগিত করা হয়েছে। ব্যাংকগুলোতে চিঠি দিয়ে তাদের তথ্য সংগ্রহ করে তা অনুসন্ধান করা হচ্ছে। যাদের বিরুদ্ধে আইনি পরিপন্থী কোনো তথ্য পাওয়া যাচ্ছে বিএফআইইউ নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থাও নেয়া হচ্ছে।
শেয়ারবার্তা / আনিস