বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেছেন, শেয়ারবাজারে ঝুঁকি থাকবেই। তাই এ ঝুঁকি বুঝতে হবে এবং জানতে হবে। শেয়ারবাজারে ঝুঁকি এড়াতে সবার বিনিয়োগ শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়া খুবই প্রয়োজন। এজন্য আমরা নিয়মিত বিভিন্ন প্রশিক্ষণ আয়োজন করছি। প্রতিদিনই হাজার হাজার মানুষের সাথে আমরা যুক্ত হচ্ছি। আমরা সবাইকে বিনিয়োগ শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে কাজ করছি।
রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন ও বাংলাদেশ একাডেমি ফর সিকিউরিটিজ মার্কেটসের (বিএএসএম) যৌথ উদ্যোগে জেলাপর্যায়ে দেশব্যাপী বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে রংপুর জেলায় আয়োজিত হয়েছে ‘বিনিয়োগ শিক্ষা কনফারেন্স’। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, আপনাদের নিজেদের ও স্বশিক্ষিত ও সচেতন হতে হবে। শুধু বিনিয়োগকারী নয়, বাজার অংশীজনদেরও আমরা প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি। যার জন্য বিএসইসি, বিআইসিএম, বিএএসএম কাজ করছে। বন্ড মার্কেটের উন্নয়নে আমরা ব্যাপক কাজ করছি। পাশাপাশি শেয়ারবাজারে আরো বিভিন্ন ধরণের প্রোডাক্ট নিয়ে আসতে কাজ করছি। বিএসইসি আগামী বছরে লিস্টেড প্রোডাক্ট বাড়ানো এবং শেয়ারবাজার কেন্দ্রিক কর্মকাণ্ডগুলোকে ডিজিটালইজেশন এই দুটি লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। বিএসইসি শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে ও তাদের সুরক্ষায় সদা সচেষ্ট আছে।
তিনি আরও বলেন, সত্যিকার অর্থেই আমাদের দেশের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। আগামীতে উন্নয়নকে অব্যাহত রাখতে আমাদের কাজ করতে হবে। ২০৪১ সালের মাঝেই বাস্তবের সোনার বাংলা পাবো। তাই আমরা এ জন্য পরিকল্পনামাফিক কাজ করতে হবে। সোনার বাংলা গড়তে আমাদের বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। আপনাদের সঞ্চয় যেন দেশ ও দশের এবং আপনাদের নিজেদের উন্নয়নে কাজে আসে তা নিশ্চিত করতে হবে।
কনফারেন্সে স্বাগত বক্তব্যে বিএসইসির কমিশনার ড. রুমানা ইসলাম বলেন, শেয়ারবাজারে ঝুঁকি আছে। শেয়ারবাজারে আসার আগে দরকার কিভাবে বিনিয়োগ করবেন তা বোঝা। শেয়ারবাজারে অলস অর্থ বিনিয়োগ করবেন। কিভাবে আর্থিক ব্যবস্থাপনা করবেন তা জানা খুবই জরুরি। যদি জেনে বুঝে বিনিয়োগ করেন তবে তা থেকে দীর্ঘমেয়াদী রিটার্ন আসবে।
তিনি পুঁজিবাজারে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং নারীদের পুঁজিবাজারে আসার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রংপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মো. আকবর আলী বলেন, বিনিয়োগের ক্ষেত্রে রংপুরের অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। রংপুর জেলাকে আগামীতে আরও এগিয়ে নিতে সবার উদ্যোগ, সহযোগিতা ও দায়িত্বশীল ভূমিকা প্রয়োজন। বিনিয়োগ শিক্ষা কনফারেন্সের আয়োজনের জন্য বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন ও সংশ্লিষ্টদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।
কনফারেন্সে ‘ফান্ডামেন্টাল অব ফাইন্যান্সিয়াল লেকচার’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ শফিউল আজম। তিনি বিনিয়োগ শিক্ষার নানাদিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন এবং কনফারেন্সে উপস্থিত অংশগ্রহণকারীদের সকলকে বিনিয়োগ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে বিনিয়োগ করার পরামর্শ দেন।
অনুষ্ঠানে ‘ইনভেস্টমেন্ট রিস্ক অ্যান্ড ইনভেস্টরস প্রোটেকশন’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম। তিনি পুঁজিবাজারের ঝুঁকিসমূহ, বিনিয়োগের বিভিন্ন ধরনের ঝুঁকি, রিটার্ন ও ঝুঁকির মধ্যকার সম্পর্ক, বিনিয়োগের ঝুঁকি হ্রাসের কৌশলসমূহ, বিনিয়োগের বৈচিত্রায়ন, বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা ইত্যাদি বিষয়ে তথ্যবহুল আলোচনা উপস্থাপন করেন।
প্রবন্ধ উপস্থাপনার পর বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিমের সঞ্চালনায় একটি প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। প্যানেল আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন বিআইসিএমের নির্বাহী প্রেসিডেন্ট ড. মোহাম্মদ তারেক, রংপুর মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’র সভাপতি মো. রেজাউল ইসলাম, প্রাইম ব্যাংক ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ এম ওমর তৈয়ব এবং ডিএসইর পরিচালক রিচার্ড ডি রোজারিও।