অর্থবছরের ছয় মাস না যেতেই রেমিটেন্সের পরিমাণ প্রায় হাজার কোটি ডলারে পৌঁছবে। চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) রেমিটেন্স এসেছে ৭৭১ কোটি (৭.৭১ বিলিয়ন) ডলার। যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ২২ দশমিক ৬৬ শতাংশ বেশি।
এদিকে, চলতি বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরের ১৯ দিনেই ১২২ কোটি ৩৪ লাখ ডলার রেমিটেন্স এসেছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে ডিসেম্বরে রেমিটেন্স ২০০ কোটি ডলারের কাছাকাছি গিয়ে পৌঁছবে। আর তা হবে এক মাসের হিসাবে রেকর্ড।
আর রেমিটেন্স প্রবাহের এই ইতিবাচক ধারায় রপ্তানি আয়ে বড় ধাক্কার পরও বিদেশী মুদ্রার রিজার্ভও সন্তোষজনক অবস্থায় রয়েছে।
বাংলাদেশের অর্থনীতি বেশ চাপের মধ্যে রয়েছে। অর্থনীতির প্রায় সব সূচক নিম্নমুখী। এই ‘বৈরি হাওয়ার’ মধ্যে একমাত্র রেমিটেন্সই আশার আলো ছড়াচ্ছে বলে মনে করছেন অর্থনীতির গবেষক এবং পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর।
অর্থনীতিবিদ ও ব্যাংকাররা মনে করছেন, দুই শতাংশ হারে প্রণোদনা, জনশক্তি রপ্তানি বৃদ্ধি এবং বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় রেমিটেন্স প্রবাহ বাড়ছে।
প্রতিবেশি দেশ ভারতসহ অন্যান্য দেশের মতো যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রা ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমালে অর্থনীতির অন্যতম প্রধান সূচক রেমিটেন্স আরও বাড়বে বলে মনে করছেন তারা।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ আশা করছেন চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছর শেষে রেমিটেন্সর পরিমাণ ২১ বিলিয়ন ড৪লার ছাড়িয়ে যাবে।
১৭ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী বলেন, গত অর্থবছরে সাড়ে ১৬ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স এসেছিল। এবার প্রথম ৫ মাসে সাড়ে ২২ শতাংশ বেশি এসেছে।
“এই ইতিবাচক ধারা অব্যাহত থাকবে প্রত্যাশা করছি। আর সেক্ষেত্রে অর্থবছর শেষে রেমিটেন্স ২১ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে।”
বর্তমানে এক কোটির বেশি বাংলাদেশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছেন। জিডিপিতে তাদের পাঠানো অর্থের অবদান ১২ শতাংশের মত।
“সে কারণেই বলা যায়, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সই এখন সচল রেখেছে বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকা।”
রিজার্ভ ফের ৩২.৪ বিলিয়ন ডলার
রেমিটেন্স বাড়ায় বাংলাদেশ ব্যাংকের বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়নও (রিজার্ভ) সন্তোষজনক অবস্থায় রয়েছে।সোমবার দিন শেষে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৩২ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার।
নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে রিজার্ভ ৩২ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলারে উঠিছিল।এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মেয়াদের ৯৮ কোটি ৭০ লাখ ডলারের আমদানি বিল পরিশোধের পর রিজার্ভ ৩১ দশমিক ৬০ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছিল। গত এক মাসে তা বেড়ে আবার সেই আগের অবস্থানে উঠেছে।
বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, ইরান, মিয়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপ- এই নয়টি দেশ বর্তমানে আকুর সদস্য। এই দেশগুলো থেকে বাংলাদেশ যে সব পণ্য আমদানি করে তার বিল দুই মাস পর পর আকুর মাধ্যমে পরিশোধ করতে হয়
শেয়ারবার্তা / আনিস