1. [email protected] : শেয়ারবার্তা প্রতিবেদক : শেয়ারবার্তা প্রতিবেদক
  2. [email protected] : শেয়ারবার্তা : nayan শেয়ারবার্তা
  3. [email protected] : news uploder : news uploder
কোম্পানি বন্ধ, তবু লাফিয়ে বাড়ছে শেয়ারদর
বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:৩৫ এএম

কোম্পানি বন্ধ, তবু লাফিয়ে বাড়ছে শেয়ারদর

  • আপডেট সময় : শনিবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২৩
share

সরকারি সিদ্ধান্তে ২০২০ সালে থেকে বন্ধ রয়েছে দেশের ছয়টি চিনিকল। তার মধ্যে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত রংপুরের শ্যামপুর সুগার মিলসও একটি। তিন বছর ধরে কোম্পানিটি উৎপাদনে নেই; বরং বিপুল লোকসানে জর্জরিত। বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশও দিতে পারছে না অনেক বছর ধরে। অথচ গত ছয় মাসে বাজারে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বেড়েছে প্রায় ২০০ শতাংশ।

একই অবস্থা খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিংয়েরও। এই কোম্পানিরও কার্যক্রম নেই বললেই চলে। অনিয়মের কারণে সরকারি নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্দেশে কোম্পানিটি ও তার মালিক আমজাদ হোসেনের ব্যাংক হিসাব এখনো জব্দ। অথচ গত ছয় মাসে এটিরও শেয়ারের দাম ১২৫ শতাংশের বেশি বেড়েছে।

এ ছাড়া গত সাত মাসে বন্ধ আরেক কোম্পানি খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগের শেয়ারের দাম বেড়েছে প্রায় ৬০০ শতাংশ।

এভাবে শেয়ারবাজারে বন্ধ কোম্পানির শেয়ারের দাম রকেট গতিতে বাড়ছে। মূল্যবৃদ্ধির পাশাপাশি লেনদেনেও এসব কোম্পানির দাপট চলছে মাসের পর মাস ধরে। অথচ পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ (বিএসইসি), ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সবাই নিশ্চুপ। সরব শুধু এসব শেয়ারের কারসাজিকারীরা, যারা নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও স্টক এক্সচেঞ্জের নীরবতার সুযোগে বাজারে কিছু বাজে ও নিম্ন মানের কোম্পানির শেয়ারের ইচ্ছেমতো দাম বাড়াচ্ছে। এর ফলে একদিকে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হতাশা ও ক্ষোভ বাড়ছে, অন্যদিকে শেয়ারবাজার সম্পর্কে সব মহলে নেতিবাচক বার্তা যাচ্ছে।

এ বিষয়ে বিএসইসির মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, বাজারে যখন মন্দাভাব থাকে, তখন স্বল্প মূলধনি শেয়ারের দাম বাড়ে। সাম্প্রতিক সময়ে অস্বাভাবিকভাবে যেসব শেয়ারের দাম বাড়ছে, সেগুলোর লেনদেন পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। অনিয়ম পাওয়া গেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিম্নমানের শেয়ারের বেশি লেনদেন ও কারসাজির উদাহরণ হিসেবে ডিএসইর গতকাল বৃহস্পতিবারের বাজারচিত্র তুলে ধরা যেতে পারে। এদিন ঢাকার বাজারে লেনদেনের শীর্ষ পাঁচ কোম্পানির তালিকায় ছিল যথাক্রমে ফু–ওয়াং ফুড, এমারেল্ড অয়েল, মুন্নু সিরামিক ইন্ডাস্ট্রিজ, খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং ও বিডি থাই। এ পাঁচ কোম্পানির মধ্যে মুন্নু সিরামিক ছাড়া বাকি চারটিই ‘বি’ শ্রেণিভুক্ত। কোনো প্রাতিষ্ঠানিক বা বিদেশি বিনিয়োগকারী যদি গতকালের এ বাজার চিত্র দেখেন, তাহলে তিনি কী বার্তা পাবেন, সেটিই এখন বড় প্রশ্ন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি ব্রোকারেজ হাউসের মালিক বলেন, ‘শেয়ারবাজারের ইতিহাসে এমন অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মুখোমুখি কখনো হতে হয়নি। বিনিয়োগকারীদের প্রশ্নের উত্তর দিতে পারি না। নতুন কোনো বিনিয়োগকারীকে বাজারে আসার পরামর্শ দিতে পারি না। অনেক বিনিয়োগকারী বাজার ছেড়ে যেতে প্রতিদিন শেয়ার বিক্রির চাপ দিচ্ছেন। ফ্লোর প্রাইস বা সর্বনিম্ন মূল্যস্তরের কারণে অনেক কোম্পানির ক্ষেত্রে সেটিও সম্ভব হবে না।’

বন্ধ শ্যামপুরের মূল্যবৃদ্ধি কেন
২০২০ সালে কোম্পানিটি বন্ধ করে দেওয়ার পর সম্প্রতি রংপুরের এক জনসভায় সরকারের পক্ষ থেকে এটি চালুর আশ্বাস দেওয়া হয়। আবার শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি হওয়ায় নিয়ন্ত্রক সংস্থার দিক থেকেও কোম্পানিটিকে চাপ দেওয়া হচ্ছে। সরকারি ওই ঘোষণার পর থেকে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বাড়তে শুরু করে। গত ১৮ মে এটির শেয়ারের দাম ছিল মাত্র ৮০ টাকা। গতকাল দিন তা বেড়ে দাঁড়ায় ২৩৬ টাকায়। সেই হিসাবে ছয় মাসে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বেড়েছে ১৫৬ টাকা বা প্রায় ২০০ শতাংশ।

এদিকে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্যশিল্প করপোরেশনের (বিএসএফআইসি) অধীন এ কোম্পানিকে সরকারি আর্থিক সহায়তা ছাড়া চালু করা সম্ভব নয় বলে মনে করেন খোদ করপোরেশনের কর্তাব্যক্তিরা। জানতে চাইলে বিএসএফআইসির সচিব চৌধুরী রুহুল আমিন কায়সার বলেন, ‘কোম্পানিটি চালু করা যায় কি না, সেই বিষয় খতিয়ে দেখতে সম্প্রতি করপোরেশনের পক্ষ থেকে আমরা একটি কমিটি গঠন করেছি।’

খুলনা প্রিন্টিংয়ের ১২৫% মূল্যবৃদ্ধি
অনিয়মের দায়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) নির্দেশে ২০২১ সাল থেকে কোম্পানিটির ব্যাংক হিসাব জব্দ। এরপর থেকে এই কোম্পানির কার্যক্রম চলছে নামকাওয়াস্তে। তা সত্ত্বেও কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ছয় মাসে ১২৫ শতাংশের বেশি বেড়েছে। গত ১৭ মে এটির শেয়ারের মূল্য ছিল ৯ টাকা, যা গতকাল বেড়ে দাঁড়ায় ২০ টাকায়। কোম্পানিটি ২০২০ সালের পর কোনো লভ্যাংশও দেয়নি। তারপরও বাজারে শেয়ারের এমন মূল্যবৃদ্ধি কেন, সেই প্রশ্ন খোদ কোম্পানি মালিকেরই।

কোম্পানিটির চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন বলেন, ‘যে কোম্পানি ঠিকমতো ব্যবসা করতে পারছে না, লভ্যাংশ দেয়নি কয়েক বছর, সেই কোম্পানির শেয়ারের দাম কেন এভাবে বাড়ছে তা আমার কাছেই আশ্চর্য লাগছে। আমার কাছে এর কোনো উত্তর নেই। সব ধরনের ব্যাংক হিসাব জব্দ থাকায় কয়েক বছর ধরে আমি কোনো ব্যবসা করতে পারছি না।’

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:

ভালো লাগলে শেয়ার করবেন...

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ