বর্তমানে সিমেন্টের কাঁচামাল আমদানির ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ অগ্রীম আয় কর বা এআইটি দিতে হয়, যা সমন্বয়যোগ্য নয়। এটি ২ শতাংশ কমিয়ে ৩ শতাংশ নির্ধারণ করেছে এনবিআর। এই শিল্পের কাঁচামাল আমদানির ক্ষেত্রে বিদ্যমান আগাম আয়কর (Advance Income Tax-AIT) ২ শতাংশ কমানো হচ্ছে। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এর ফলে প্রচণ্ড আর্থিক চাপে থাকা সিমেন্ট খাত একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলার সুযোগ পাবে। এনবিআর সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, সিমেন্ট শিল্পের কাঁচামাল আমদানিতে বেশ কয়েক বছর ধরেই ৫ শতাংশ এইআইটি প্রযোজ্য ছিল। তবে ওই কর কোম্পানির বার্ষিক করের সঙ্গে সমন্বয়েরও সুযোগ ছিল। কিন্তু চলতি অর্থবছরের বাজেটে বিদ্যমান করটিকে অসমন্বয়যোগ্য বা চুড়ান্ত হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
অন্যদিকে গত কয়েক মাস ধরে দেশের বাজারে নির্মাণ উপকরণের চাহিদা কমে গেছে। এই বিপরীতমুখী দুটি বিষয় প্রচণ্ড চাপে ফেলে দেয় সিমেন্ট শিল্পকে। কোম্পানিগুলোর মুনাফায় এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। সবগুলো কোম্পানির মুনাফা কমে যায়। ছোট কোম্পানিগুলোর অবস্থা হয়ে উঠে নাজুক। এগুলোর কোনো কোনোটি লোকসানের কবলে পড়ে।
এমন অবস্থায় বাংলাদেশ সিমেন্ট ম্যানুফেকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট ও এমআই সিমেন্ট ফ্যাক্টরি লিমিটেডের (ক্রাউন সিমেন্ট) ভাইস-চেয়ারম্যান মোঃ আলমগীর কবির গত ১ ডিসেম্বর সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে সিমেন্ট শিল্পের নাজুক অবস্থার চিত্র তুলে ধরেন। তিনি এই খাতের কাঁচামাল আমদানিতে অগ্রীম আয় কর বা এআইটি সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করার দাবি জানান। এর প্রেক্ষিতে এনবিআর বিষয়টি পর্যালোচনা করে ২ শতাংশ কর কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়।
বাংলাদেশ সিমেন্ট ম্যানুফেকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট ও এমআই সিমেন্ট ফ্যাক্টরি লিমিটেডের (ক্রাউন সিমেন্ট) ভাইস-চেয়ারম্যান মোঃ আলমগীর কবির প্রজ্ঞাপনটির বিষয়ে এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, সিমেন্ট শিল্পের নাজুক অবস্থার প্রেক্ষিতে আমরা ৫ শতাংশ অগ্রীম আয় করের পুরোটাই প্রত্যাহার চেয়েছিলাম।
এনবিআর এটি ২ শতাংশ কমিয়ে ৩ শতাংশ নির্ধারণ করেছে। এর মধ্য দিয়ে বুঝা যাচ্ছে এনবিআর এবং সরকার সিমেন্ট শিল্পের গুরুত্ব এবং বর্তমান সংকটের বিষয়টি উপলব্ধি করতে সক্ষম হয়েছেন। এ জন্য আমরা তাদেরকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। তবে এই শিল্পে বিরাজমান পরিস্থিতিতে ২ শতাংশ অগ্রীম আয় কর প্রত্যাহার মোটেও পর্যাপ্ত নয়। কারণ ৩ শতাংশ অগ্রীম আয় কর চুড়ান্ত দায় কোনোভাবেই বাস্তবসম্মত নয়। ]
তাছাড়া বিষয়টি আয়করের দর্শন পরিপন্থী। এটি বিশ্বে প্রচলিত আয়কর আইনের সঙ্গে, এমনকি বাংলাদেশের আইনের সঙ্গেও অসঙ্গতিপূর্ণ। ব্যবসার লাভ-লোকসান নিরুপন হওয়ার আগে আয় কর দেওয়ার বিষয়টি কোনোভাবেই আইনসঙ্গত হতে পারে না। তাই আমরা পুরো অগ্রীম আয়কর প্রত্যাহারে আবারও দাবি জানাই।
শেয়ারবার্তা/ সাইফুল