পুঁজিবাজারে কোনটা ভালো শেয়ার তা বাছাই করতেই অনেক বিনিয়োগকারী হিমশিম খান। কারণ ভালো শেয়ারের সংজ্ঞা কী। কীভাবে চিনবেন। নানা প্রশ্ন খেলে। যারা ভালো শেয়ার বাছাই করতে জানেন- তাদের জন্য বাজার খারাপে কিছু আসে যায় না। তারা জানেন কীভাবে মুনাফা করতে হবে।
সিডিবিএলের তথ্য অনুযায়ী, এখন বিও অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ২৭ লাখের উপরে। এর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।
আর বিপুল সংখ্যক এ বিনিয়োগকারীদের অধিকাংশেরই পুঁজিবাজার সম্পর্কে বেশি ধারণা নেই। ধারণা না থাকায় মূলধন হারিয়ে নিঃশ্ব হচ্ছেন তারা। তাই সাধারণ বিনিয়োগকারীর মধ্যে সব সময়ই এক ধরণের অজানা আতঙ্ক কাজ করে। এর মধ্যে আবার অনেকেই গুজবের পেছনে ছুটেন। তারা শেয়ার কি সেটাই বুঝে না। পুঁজিবাজার মূলত বিনিয়োগের জায়গা। যা দীর্ঘ মেয়াদী। কিন্তু অনেকেই এটাকে প্রতিদিনের লাভের বাজার মনে করে। তারাই বেশিরভাগ সময় লুজার হচ্ছেন।
তাই শেয়ারে বিনিয়োগ করতে বেশকিছু বিষয়ে ধারণা থাকতে হবে। যার মধ্যে রয়েছে ফান্ডামেন্টাল এবং টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস। ফান্ডামেন্টাল অ্যানালাইসিসের মধ্যে কোম্পানির মৌলভিত্তির ধারণা মিলবে। আর টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিসে কোম্পানির শেয়ারের মুভমেন্ট বলে দেবে। এভাবে বিশ্লেষণ করে বাজারের ভালো শেয়ার সম্পর্কে একটি ধারণা পাওয়া যাবে।
ভালো মৌলভিত্তি সম্পন্ন শেয়ারের বেশকিছু বৈশিষ্ট্য আছে। যার মধ্যে বিনিয়োগের জন্য প্রথমত শেয়ারের সম্পদ মূল্য দেখতে হবে। সংক্ষেপে বলা হয়, নিট অ্যাসেট ভ্যালু (এনএভি) প্রকৃত সম্পদ মূল্য ভালো শেয়ার সম্পদ মূল্য বেশি থাকে।
দ্বিতীয় শেয়ার প্রতি আয় বা ইপিএস। একটি কোম্পানি প্রতিটি শেয়ারের বিপরীতে কী পরিমাণ আয় করছে, বিনিয়োগের জন্য তা অবশ্যই বিবেচনা করা উচিত। এরপর শেয়ারের মূল্য ও আয়ের অনুপাত (পিই রেশিও) : কোম্পানির শেয়ারপ্রতি আয় এবং শেয়ারের বর্তমান বাজারমূল্যের অনুপাত। এটি বাজারের সবচেয়ে বড় মাপকাঠি। এ অনুপাত যত কম, শেয়ার তত ঝুঁকিমুক্ত।
বিশ্লেষকদের মতে, বাজারের অন্যতম আরেক মাপকাঠি হল কোম্পানির লভ্যাংশ বা ডিভিডেন্ড। এ লভ্যাংশ কখনও নগদ বা বোনাস শেয়ার হতে পারে। তবে ভালো কোম্পানিগুলো নগদ লভ্যাংশ বেশি দেয়।
এ ছাড়া রয়েছে কোম্পানির বুক ভ্যালু ও প্রবৃদ্ধির হার। অন্যদিকে কোম্পানির উদ্যোক্তা হিসেবে কারা রয়েছে, তাদের পেছনের রেকর্ড অবশ্যই বিনিয়োগের জন্য বিবেচনায় নিতে হবে।
বিনিয়োগকারীরা কোনো কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ করলে ঝুঁকির মাত্রা কম থাকবে সেটি কয়েকটি বিষয় বিশ্লেষণ করে জানতে হবে। এর মধ্যে কোম্পানির ফান্ডামেন্টাল এবং টেকনিক্যাল এনালাইসিস করতে হবে। কোন কোম্পানি আর্থিকভাবে কত বেশি শক্তিশালী তা কোম্পানির মৌলভিত্তি দিয়ে জানা যাবে।
যে কোম্পানির শেয়ার কেনা হবে, তার বর্তমান আয়, বার্ষিক আয়, কোম্পানি নতুন কোনো পরিবর্তন আসছে কিনা, কোম্পানির পণ্য সরবরাহ কেমন, নেতৃত্বে কারা আছে, কোম্পানির শেয়ারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ কেমন এবং সবশেষে ওই কোম্পানির পণ্যের বাজারে চাহিদা কেমন আছে।
যিনি পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে আগ্রহী তার প্রথম কাজ হবে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির আর্থিক বিবরণ সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা নেয়া। প্রতিটি কোম্পানি প্রতি বছর বার্ষিক আয় -ব্যয় সংবলিত একটি প্রতিবেদন পেশ করে। ওই প্রতিবেদন সংগ্রহ করে কোম্পানির আর্থিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে হবে।
শেয়ারবার্তা/ সাইফুল