টানা দরপতন চলছে শেয়ারবাজারে। চলতি সপ্তাহের প্রথম তিন কার্যদিবসের দরপতনে ফ্লোর প্রাইসে থাকা শেয়ার সংখ্যা ৮টি বেড়ে ২২৩টিতে উন্নীত হয়েছে। এর মধ্যে গতকাল মঙ্গলবারের দরপতনে ৫টি শেয়ার পুনরায় ফ্লোর প্রাইসে নেমেছে।
গত সপ্তাহ শেষে ফ্লোর প্রাইসে থাকা শেয়ার ছিল ২১৫টি। গত দুই মাসের দরবৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে অনেক শেয়ার ফ্লোর প্রাইস ছেড়ে ওপরে উঠে এসেছিল। গত ৫ জুন এ সংখ্যা ২০৭-এ নামে। পুনরায় সব শেয়ারে ফ্লোর প্রাইস আরোপের পর গত ১৯ মার্চ সর্বোচ্চ ৩০৪ শেয়ার ফ্লোর প্রাইসে নেমেছিল। গতকাল ফ্লোর প্রাইসে নেমেছে ন্যাশনাল হাউজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স, ফিনিক্স ইন্স্যুরেন্স, বিএসআরএম স্টিল, আর্গন ডেনিম ও হামিদ ফেব্রিকস। বিপরীতে পিএফ প্রথম মিউচুয়াল ফান্ড ফ্লোর প্রাইসের সামান্য বেশি দরে কেনাবেচা হয়েছে।
এদিকে টানা দরপতনে প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স প্রায় ৫৪ পয়েন্ট হারিয়ে ৬২৯৯ পয়েন্টের নিচে নেমেছে। গত ২৩ মে ৬৩০০ পয়েন্ট ছাড়ানোর ১৬ কার্যদিবস পর সূচকটি ফের এর নিচে নামল। কয়েকটি ব্রোকারেজ হাউসের শীর্ষ কর্মকর্তারা জানান, কিছু বড় বিনিয়োগকারী শেয়ার বিক্রি করে মুনাফা তুলে নিচ্ছেন। বীমার শেয়ারে এ প্রবণতা বেশি। কয়েক সপ্তাহ ধরে বীমা খাতের শেয়ার কেনাবেচাও হচ্ছে বেশি। ফলে এসব শেয়ারের দরপতন পুরো বাজারে প্রভাব ফেলেছে।
শেয়ারদরের পড়তি ধারায় শেয়ার কেনায় সতর্কতা অবলম্বন করছেন বিনিয়োগকারীরা। এর প্রভাবে লেনদেনও কমছে। ডিএসইর লেনদেন ৩১২ কোটি টাকা কমে ৬৬৯ কোটি টাকায় নেমেছে। প্রকৌশল খাত ছাড়া বাকি সব খাতের লেনদেন কমলেও বেশি কমেছে বীমা খাতের।
সোমবার বীমা খাতের ৫৬ কোম্পানির প্রায় ২৯১ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়। এক দিনের ব্যবধানে তা ১১৫ কোটি টাকা কমে ১৭৫ কোটি টাকায় নেমেছে। তবে সার্বিক লেনদেনে এখনও এ খাত সবার ওপরে আছে। গতকালের লেনদেনে বীমা খাতের অংশ ছিল ২৬ শতাংশের বেশি। সাড়ে ৮৬ কোটি টাকার লেনদেন নিয়ে এর পরের অবস্থানে ছিল ওষুধ ও রসায়ন খাত, যা মোট লেনদেনের ১৩ শতাংশের কম।
সার্বিক হিসাবে ডিএসইতে গতকাল তালিকাভুক্ত ৩৯২ শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৩৩৪টির কেনাবেচা হয়েছে। ক্রেতার অভাবে ৫৮ শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের কোনো লেনদেন হয়নি। কেনাবেচা হওয়া শেয়ারগুলোর মধ্যে ৪৫টির দর বেড়েছে, কমেছে ১২১টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ১৬৮টির দর।
একক কোম্পানি হিসেবে ১০ শতাংশ দর হারিয়ে দরপতনের তালিকায় শীর্ষ দশের শীর্ষে ছিল আল-আরাফাহ্ ব্যাংক। বাকি ৯টি শেয়ারের মধ্যে ৭টি ছিল বীমার শেয়ার। বিপরীতে ৯ শতাংশ দর বেড়ে দরবৃদ্ধির শীর্ষে ছিল নাভানা ফার্মা। গত দুই মাসে শেয়ারটির দর ৮০ শতাংশের বেশি বেড়ে ১১৮ টাকায় উঠেছে।