চলতি ২০২২-২৩ হিসাব বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সেবা ও আবাসন খাতের অধিকাংশ কোম্পানির ব্যবসার পরিধি বেড়েছে। আলোচ্য সময়ে এসব কোম্পানির ব্যবসা বাড়ার পাশাপাশি কর-পরবর্তী নিট মুনাফায়ও প্রবৃদ্ধি হয়েছে। তবে চলতি হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে (জুলাই-মার্চ) অধিকাংশ কোম্পানির ব্যবসা কমলেও নিট মুনাফা বাড়তে দেখা গেছে।
দেশের পুঁজিবাজারে সেবা ও আবাসন খাতের চারটি কোম্পানি তালিকাভুক্ত রয়েছে। সেগুলো হলো ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেড, সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেড, শমরিতা হসপিটাল লিমিটেড ও সামিট অ্যালায়েন্স পোর্ট লিমিটেড। এর মধ্যে সাইফ পাওয়ারটেক এখনো চলতি হিসাব বছরের জানুয়ারি-মার্চ সময়ের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি।
চলতি হিসাব বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে ইস্টার্ন হাউজিংয়ের আয় হয়েছে ৬৭ কোটি ১৯ লাখ টাকা, যেখানে আগের বছরের একই সময়ে আয় ছিল ৬২ কোটি ১১ লাখ টাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির আয় বেড়েছে ৮ দশমিক ১৮ শতাংশ। আলোচ্য প্রান্তিকে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ১৫ কোটি ৬৮ লাখ টাকা, যেখানে আগের বছরের একই সময়ে এ মুনাফা ছিল ১২ কোটি ১০ লাখ টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানির নিট মুনাফা বেড়েছে ২৯ দশামিক ৫৯ শতাংশ। মুনাফা বাড়ার কারণ হিসেবে কোম্পানিটি জানিয়েছে, আলোচ্য প্রান্তিকে তাদের ব্যবসা উল্লেযোগ্য হারে বেড়েছে। আর এ ব্যবসা বাড়ার ধারাবাহিকতায় কোম্পানির নিট মুনাফায়ও ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
এদিকে চলতি হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে ইস্টার্ন হাউজিংয়ের আয় হয়েছে ১৬৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ২৫৩ কোটি ৮১ লাখ টাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানির আয় কমেছে ৩৩ দশমিক ৫৪ শতাংশ। তবে আয় কমলেও আলোচ্য তিন প্রান্তিকে কোম্পনির নিট মুনাফায় ২২ দশমিক ২০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। আলোচ্য সময়ে কোম্পানির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ৪৪ কোটি ৮৬ লাখ টাকা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ৩৬ কোটি ৭১ লাখ টাকা।
তালিকাভুক্ত সেবা ও আবাসন খাতের কোম্পানি সামিট অ্যালায়েন্স পোর্টের চলতি হিসাব বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে সমন্বিত আয় হয়েছে ৪২ কোটি ২৭ লাখ টাকা, যেখানে আগের বছরের একই সময়ে এ আয় ছিল ৪৯ কোটি ৮১ লাখ টাকা। এ সময়ে কোম্পানিটির সমন্বিত আয় কমেছে ১৫ দশমিক ১৪ শতাংশ। আয় কমার পাশাপাশি আলোচ্য প্রান্তিকে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী সমন্বিত নিট মুনাফায়ও কমেছে। সর্বশেষ তৃতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির সমন্বিত নিট মুনাফা হয়েছে ৫ কোটি ৪৭ লাখ টাকা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে এ মুনাফা ছিল ১১ কোটি ৪০ লাখ টাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী সমন্বিত নিট মুনাফা কমেছে ৫২ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ।
তবে চলতি হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে সামিট অ্যালায়েন্স পোর্টের সমন্বিত আয় ও নিট মুনাফা দুটোই বাড়তে দেখা গেছে। আলোচ্য সময়ে কোম্পানির সমন্বিত আয় হয়েছে ১৩৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ১৩৪ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির সমন্বিত আয় বেড়েছে ১ দশমিক ৪২ শতাংশ। চলতি হিসাব বছরের তিন প্রান্তিকে কোম্পানির সমন্বিত কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ২৬ কোটি ৩৫ লাখ টাকা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ২১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির নিট মুনাফা বেড়েছে ২১ দশমিক ১৫ শতাংশ।
সেবা ও আবাসন খাতের আরেক কোম্পানি শমরিতা হসপিটালের চলতি হিসাব বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে আয় হয়েছে ৮ কোটি ২৫ লাখ টাকা, যেখানে আগের বছরের একই সময়ে আয় ছিল ৭ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির আয় বেড়েছে ১২ দশমিক ৫৫ শতাংশ। আলোচ্য প্রান্তিকে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ২০ লাখ টাকা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে এ মুনাফা হয়েছিল ২ লাখ টাকা।
অন্যদিকে চলতি হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে শমরিতা হসপিটালের আয় হয়েছে ২৫ কোটি ৩৪ লাখ টাকা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ২৭ কোটি ৪১ লাখ টাকা। সে হিসাবে বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির আয় কমেছে ৭ দশমিক ৫৫ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে কোম্পানির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ৮৭ লাখ টাকা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে এ আয় হয়েছিল ২ কোটি ৪১ লাখ টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির নিট মুনাফা কমেছে ৬৩ দশমিক ৯০ শতাংশ।