শেয়ারবাজারে বর্তমানে তালিকাভুক্ত কোম্পানির সংখ্যা ৩৯৩টি। এরমধ্যে বেশিরভাগ কোম্পানিরই রিজার্ভ পরিশোধিত মূলধনের আশেপাশে। আবার রিজার্ভ নেই বা নেগেটিভ রিজার্ভের কোম্পানির সংখ্যাও নেহায়েত কম নয়। তবে পরিশোধিত মূলধনের বেশি রিজার্ভ রয়েছে, এমন কোম্পানির সংখ্যা তিনভাগের দুই ভাগের বেশি। তারমধ্যে পরিশোধিত মূলধনের ৫ গুণের বেশি রিজার্ভ রয়েছে, এমন কোম্পানির সংখ্যা ৩০-৩৫টির বেশি হবে না।
শেয়ারবাজার বিশ্লেষকদের মতে, রিজার্ভ একটি কোম্পানির আর্থিক ভিতকে মজবুত ও শক্তিশালী করে। কোম্পানির রিজার্ভ যদি বেশি থাকে, তাহলে কোম্পানিটি যেকোনো আর্থিক বিপর্যয়ের মোকাবেলা শক্তভাবে করতে পারে। সেক্ষেত্রে কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের ডিভিডেন্ড দেয়ার ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতাও রক্ষা করতে সক্ষম হয়।
অন্যদিকে, কোনো কোম্পানির রিজার্ভ যদি কম থাকে, তাহলে কোম্পানিটি কখনো যদি অবাঞ্চিতভাবে আর্থিক বিপর্যের সম্মুখীন হয়, তাহলে সেই বিপর্যয় শক্তভাবে মোকাবেলা করতে সক্ষম হয় না। আবার শেয়ারহোল্ডারদের ডিভিডেন্ড দেয়ার ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতাও রক্ষা করতে সক্ষম হয় না।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তথ্যমতে, বর্তমানে শেয়ারবাজারের চার খাতের স্বল্প মূলধনী ৭ কোম্পানির পাহাড়সম রিজার্ভ রয়েছে। কোম্পানিগুলোর রিজার্ভ পরিশোধিত মূলধনের ৭ গুণের বেশি। খাত চারটি হলো-সিরামিক খাত, খাদ্য খাত, পেপার খাত ও পাট খাত। আর কোম্পানি ৭টি হলো-মুন্নু সিরামিক, ইউনিলিভার, অ্যাপেক্স ফুডস, এএমসিএল-প্রাণ, সোনালী পেপার, সোনালী আঁশ ও নর্দার্ন জুট লিমিটেড।
সিরামিক খাত : মুন্নু সিরামিক
সিরামিক খাতের কোম্পানিগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ রিজার্ভের কোম্পানি মুন্নু সিরামিক। কোম্পানিটির পরিশোধিত মুলধন ৩৭ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। বিপরীতে রিজার্ভ রয়েছে ২৭৫ কোটি ৪১ লাখ টাকা। যা পরিশোধিত মুলধনের ৭.৩০ গুণের বেশি। এতে দেখা যায়, কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি রিজার্ভ রয়েছে ৭৩ টাকার বেশি।
খাদ্য খাত : ইউনিলিভার
বহুজাতিক কোম্পানি ইউনিলিভারের পরিশোধিত মুলধন ১৯ কোটি ২৮ লাখ টাকা। বিপরীতেরিজার্ভ রয়েছে ১৪৮ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। যা পরিশোধিত মুলধনের ৭.৭২ গুণের বেশি। অর্থাৎ কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি রিজার্ভ রয়েছে ৭৭ টাকার বেশি।
খাদ্য খাত : অ্যাপেক্স ফুডস
রপ্তানিমুখী অ্যাপেক্স ফুডসের পরিশোধিত মুলধন ৫ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। বিপরীতে রিজার্ভ রয়েছে ৪৩ কোটি ২৬ লাখ টাকা। যা পরিশোধিত মুলধনের ৭.৫৫গুণ। অর্থাৎ কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি রিজার্ভ রয়েছে ৭৫ টাকার বেশি।
খাদ্য খাত : এএমসিএল-প্রাণ
ভোগ্যপণ্যের কোম্পানি এএমসিএল-প্রাণের পরিশোধিত মুলধন ৮ কোটি টাকা। বিপরীতে রিজার্ভ রয়েছে ৫৭ কোটি ২৭ লাখ টাকা। যা পরিশোধিত মুলধনের ৭.১৫গুণ। অর্থাৎ কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি রিজার্ভ রয়েছে ৭১ টাকার বেশি।
পেপার খাত : সোনালী পেপার
সোনালী পেপারের পরিশোধিত মুলধন ৩২ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। বিপরীতে রিজার্ভ রয়েছে ৬০৮ কোটি ৩ লাখ টাকা। যা পরিশোধিত মুলধনের ১৫.৪২ গুণ। অর্থাৎ কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি রিজার্ভ রয়েছে ১৫৪ টাকার বেশি।
পাট খাত : সোনালী আঁশ
সোনালী আঁশের পরিশোধিত মুলধন ৫ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। বিপরীতে রিজার্ভ রয়েছে ৫৬ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। যা পরিশোধিত মুলধনের ১০.৪২ গুণ। অর্থাৎ কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি রিজার্ভ রয়েছে ১০৪ টাকার বেশি।
পাট খাত : নর্দার্ন জুট
নর্দার্ন জুটের পরিশোধিত মুলধন ২ কোটি ১৫ লাখ টাকা। বিপরীতে রিজার্ভ রয়েছে ১৫ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। যা পরিশোধিত মুলধনের ৭.১৬ গুণ। অর্থাৎ কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি রিজার্ভ রয়েছে ৭১ টাকার বেশি।