কভিড-১৯-এর নেতিবাচক প্রভাব কাটিয়ে টানা দুই বছর পর মুনাফায় ফিরেছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত চামড়া খাতের বাটা শু কোম্পানি (বাংলাদেশ) লিমিটেড। মূলত কভিড-১৯-এর প্রভাবে ২০২০ হিসাব বছরে বড় লোকসান গুনতে হয়েছে কোম্পানিটিকে। এর ধারাবাহিকতায় ২০২১ হিসাব বছরেও সামান্য লোকসান হয়েছিল। তবে সর্বশেষ ২০২২ হিসাব বছরে এ নেতিবাচক প্রভাব কাটিয়ে মুনাফায় ফিরেছে কোম্পানিটি। ফলে এ হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের জন্য বড় লভ্যাংশের সুপারিশ করেছে বহুজাতিক কোম্পানিটির পর্ষদ।
কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন বিশ্লষণে দেখা যায়, ২০২০ হিসাব বছরে বাটা শুর কর-পরবর্তী নিট লোকসান হয়েছিল ১৩২ কোটি ৬২ লাখ টাকা। আগের হিসাব বছরে কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছিল ৪৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা। ২০২০ হিসাব বছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছিল ৯৬ টাকা ৮৩ পয়সা। আগে হিসাব বছরে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছিল ৩৬ টাকা ১১ পয়সা। ২০২০ হিসাব বছরে বড় লোকসান হওয়ার কারণে বাটা শু শেয়ারহোল্ডারদের শুধু ২৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। আগের হিসাব বছরে কোম্পানিটির শেয়ারহোল্ডাররা ১২৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ পেয়েছিলেন।
২০২০ হিসাব বছরের ধারাবাহিকতায় পরের বছর অর্থাৎ ২০২১ হিসাব বছরে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট লোকসান হয়েছে ৬ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। অবশ্য আগের হিসাব বছরের তুলনায় আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটির নিট লোকসান কমেছে ১২৫ কোটি ৭৭ লাখ টাকা বা ৯৪ দশমিক ৮৪ শতাংশ। ২০২১ হিসাব বছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৫ টাকা ১ পয়সা। এ হিসাব বছরের জন্য ২৫ শতাংশ চূড়ান্ত নগদ লভ্যাংশ ও ৭৫ শতাংশ অন্তর্বর্তীকালীন নগদ লভ্যাংশ পেয়েছিলেন শেয়ারহোল্ডাররা।
সর্বশেষ ২০২২ হিসাব বছরে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ৪১ কোটি ১ লাখ টাকা। আলোচ্য হিসাব বছরে ইপিএস হয়েছে ২৯ টাকা ৯৮ পয়সা। এ হিসাব বছরে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১০৫ শতাংশ চূড়ান্ত নগদ লভ্যাংশের সুপারিশ করেছে কোম্পানিটির পর্ষদ। এর আগে আলোচ্য হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকের (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) আর্থিক প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে শেয়ারহোল্ডারদের ২৬০ শতাংশ অন্তর্বর্তীকালীন নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে বাটা শু। সে হিসাবে ২০২২ হিসাব বছরের জন্য মোট ৩৬৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ পাবে শেয়ারহোল্ডাররা। গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ২৫২ টাকা ১৬ পয়সায়, আগের হিসাব বছর শেষে যা ছিল ২৫২ টাকা ৩৩ পয়সা।
১৯৮৫ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বাটা শুর বর্তমান অনুমোদিত মূলধন ২০ কোটি ও পরিশোধিত মূলধন ১৩ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। রিজার্ভে রয়েছে ৩৩৫ কোটি ২৮ লাখ টাকা। কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ১ কোটি ৩৬ লাখ ৮০ হাজার। এর মধ্যে ৭০ শতাংশ উদ্যোক্তা পরিচালক বাফিন নেদারল্যান্ডস (বিভি), ১৯ দশমিক ৯৬ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী, ১ দশমিক ৩৫ শতাংশ বিদেশী বিনিয়োগকারী ও বাকি ৮ দশমিক ৬৯ শতাংশ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে।
ডিএসইতে গত বৃহস্পতিবার বাটা শুর শেয়ার সর্বশেষ ৯৬৫ টাকায় লেনদেন হয়েছে। এদিন শেয়ারটির সমাপনী দর ছিল ৯৭৪ টাকা ৮০ পয়সা। গত এক বছরে শেয়ারটির সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ দর ছিল যথাক্রমে ৮৭১ টাকা ৯০ পয়সা ও ১ হাজার ৫৬ টাকা।