বর্তমান বাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় ও পুঁজিবাজারের উন্নয়নের স্বার্থে মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউজগুলোকে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ থেকে অনাদায়ী ক্ষতির বিপরীতে প্রভিশন সংরক্ষণে আরো দুই বছর ছাড় দিয়ে নির্দেশনা জারি করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এ দফায় ২০২৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়েছে। গতকাল এ বিষয়ে নির্দেশনা জারি করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। এ নিয়ে নবমবারের মতো প্রভিশন সংরক্ষণের সময় বাড়াল কমিশন।
এর আগে ১৫ মার্চ বিএসইসির ৮৫৯তম কমিশন সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন সংস্থার চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। আগের নির্দেশনা অনুসারে, মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউজের নিজস্ব ও গ্রাহকের পোর্টফোলিওতে পুনর্মূল্যায়নজনিত অনাদায়ী ক্ষতির বিপরীতে প্রভিশন সংরক্ষণে ছাড়ের এ সুযোগ আগামী ৩১ ডিসেম্বর শেষে হওয়ার কথা। নতুন এ নির্দেশনার ফলে প্রভিশন সংরক্ষণে ছাড়ের সুযোগ ২০২৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাবে মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউজগুলো।
অনাদায়ী ক্ষতির বিপরীতে প্রভিশন সংরক্ষণে সর্বপ্রথম ২০১৩ সালে ছাড় দেয় বিএসইসি। সে সময় বিএসইসির নির্দেশনায় বলা হয়, মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো এখন পুনর্মূল্যায়নজনিত ক্ষতির ক্ষেত্রে নিয়মানুযায়ী ১০০ ভাগের পরিবর্তে ২০ শতাংশ হারে প্রভিশন রাখতে পারবে। তবে তা ২০১২ সালের ৩১ ডিসেম্বর থেকে ২০১৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সমান পাঁচটি ত্রৈমাসিক অংশে রাখতে হবে। এ সুযোগ পরবর্তী সময়ে আরো কয়েক ধাপে বাড়ানো হয়। সর্বপ্রথম এ সুযোগ বাড়ানো হয় ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এক বছরের জন্য। এরপর বাজার পরিস্থিতি উন্নতি না হওয়ায় এর মেয়াদ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৫ পর্যন্ত বাড়ানো হয়।
কিন্তু ২০১৫ সালে বাজার পরিস্থিতিতে আরো মন্দা ভাব থাকায় মার্চেন্ট ব্যাংকারদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রভিশন সংরক্ষণের মেয়াদ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৬ পর্যন্ত বাড়ায় বিএসইসি। এরপর ২০১৭ সালে বাজার পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়। তবে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, যে ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে তা পূরণ করতে আরো সময়ের প্রয়োজন। এজন্য প্রভিশন সংরক্ষণের মেয়াদ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭ পর্যন্ত বাড়ানোর দাবি করা হয়। বিএসইসি সেই দাবি মেনে নিয়ে এক বছর সময় বাড়ায়। তবে ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগেই আরেক দফা বাড়িয়ে প্রভিশন সংরক্ষণের সুযোগ ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়।
এরপর আরো এক দফা বাড়িয়ে ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর করা হয়। পরে তা দুই বছর বাড়িয়ে ২০২২ সাল পর্যন্ত করা হয়। ওই মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই আরো এক বছর বাড়িয়ে ২০২৩ সাল পর্যন্ত সুযোগ দেয়া হয়। এখন তা আরো বাড়িয়ে ২০২৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হলো।