অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ‘১৯৭১ সালের এই দিনে চূড়ান্ত বিজয়ের মধ্য দিয়ে অভ্যুদয় ঘটে বাঙালির স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশের। বিজয়ের অনুভূতি সবসময়ই আনন্দের। তবে একই সঙ্গে দিনটি বেদনারও, কেননা অগণিত মানুষের আত্মত্যাগের ফসল আমাদের স্বাধীনতা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধীন বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হয়েছিল একরাশ স্বপ্ন বুকে নিয়ে।’
সোমবার বিকালে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত নগরীর রামঘাট এলাকায় দলীয় কার্যালয়ের সামনে মহান বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি এ সময় আরও বলেন, ‘যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনের কঠিন দিনগুলোয় রাষ্ট্রের প্রশাসনযন্ত্র চালু করতে হয়েছিল। এরপর অনেক চড়াই-উতরাই মোকাবেলা করতে হয়েছে। জাতির পিতার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার শর্ত পূরণ করেছে। আমাদের সামনে সম্ভাবনা অসীম। তবে অর্থনৈতিকভাবে আমাদের আরও এগিয়ে যেতে হবে।’
অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অবস্থার প্রেক্ষাপটে এখন সবচেয়ে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের অর্থনীতি এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ ক্রমাগতভাবে অর্থনৈতিক খাতে উন্নতি সাধন করে চলেছে। আমাদের প্রবৃদ্ধি বাড়ছে। গত অর্থবছরে আমরা ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছি। চলতি অর্থবছরেই আমরা ৮ দশমিক ২৫ শতাংশ থেকে ৮ দশমিক ৩০ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের প্রত্যাশা করছি, যা ২০২৪ সাল নাগাদ দাঁড়াবে ১০ শতাংশ এবং সেটা অব্যাহত থাকবে। বিশ্বে যে কয়েকটি দেশের রপ্তানি আয় খুব দ্রুত বাড়ছে, তার মধ্যে বাংলাদেশ একটি।’
মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের গড় আয়ু বেড়েছে এবং ক্ষুধা ও দারিদ্র্যের হার কমেছে পূর্বের তুলনায় অনেক। আমাদের আর্থিক খাতে এই মুহূর্তে কোনরকম ঝুঁকি নেই ২০৩০ সাল নাগাদ ৩ কোটি যুবকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে এবং তখন কারোর কর্মসংস্থানের অভাব থাকবে না। প্রবৃদ্ধি অর্জনে বাংলাদেশ হবে বিশ্ব সেরা।’
এ সময় সাবেক রেলমন্ত্রী ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মুজিবুল হক মুজিব বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তি দেশের উন্নয়ন অগ্রগতি চোখে দেখতে পায় না। তারা আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। মহান বিজয়ের এ দিনে স্বাধীনতা বিরোধীদের চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রকে রুখে দিতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার শপথ নিতে হবে।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি জসিম উদ্দিন চৌধুরী, সহ-সভাপতি হাজী ইলিয়াস মিয়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন স্বপন, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মুন্নি আক্তার মুন্নি, এবং জেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি হাসিনা আক্তার প্রমুখ।
এর আগে অর্থমন্ত্রী কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে ওই উপজেলায় ক্যান্সার, কিডনি, লিভার সিরোসিস, জন্মগত হৃদরোগসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসার সহায়তায় অর্থ অনুদান চেক বিতরণ করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সদর দক্ষিণ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম সারওয়ার, লালমাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক, সদর দক্ষিণ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিয়া মোহাম্মদ কিয়াম উদ্দিন প্রমুখ।
শেয়ারবার্তা / আনিস