1. [email protected] : শেয়ারবার্তা প্রতিবেদক : শেয়ারবার্তা প্রতিবেদক
  2. [email protected] : শেয়ারবার্তা : nayan শেয়ারবার্তা
  3. [email protected] : news uploder : news uploder
১১ বছরের মধ্যে পুঁজিবাজার থেকে সর্বনিম্ন অর্থ সংগ্রহ
সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১:০৬ এএম

১১ বছরের মধ্যে পুঁজিবাজার থেকে সর্বনিম্ন অর্থ সংগ্রহ

  • আপডেট সময় : শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৯
BSEC

শিল্পায়নে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নে পুঁজিবাজারের ভূমিকা অনস্বীকার্য হলেও চলতি বছরে শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহে ধস নেমেছে। যা বিগত ১১ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে গেছে। যাতে পুঁজিবাজারের আকার বৃদ্ধিতে নেতিবাচক ভূমিকা পড়েছে। একইসঙ্গে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী, ব্রোকারেজ হাউজ, সাধারন বিনিয়োগকারী, মার্চেন্ট ব্যাংক ও সরকার ক্ষতির কবলে পড়েছে। তবে এই ক্ষতির পেছনে কোম্পানিগুলোর দূর্বল আর্থিক হিসাব নিয়ে আইপিওতে আসতে চাওয়ার প্রবণতাকে দুষছেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) পর্ষদসহ অন্যান্যরা।

বিগত ১১ বছরের মধ্যে ২০১৯ সালে পুঁজিবাজারে শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে সর্বনিম্ন অর্থ সংগ্রহ করা হয়েছে। এ বছরে পুঁজিবাজারের মাধ্যমে ৬৪১ কোটি ৯৩ লাখ টাকা সংগ্রহ করা হয়েছে। যার পরিমাণ ২০১৮ সালেও ছিল ৬৫৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা। এ হিসাবে বছরের ব্যবধানে পুঁজিবাজার থেকে অর্থসংগ্রহ কমেছে ১৩ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। তবে এই ব্যবধানটা অনেক বড় হতে পারত, যদি রিং সাইন একাই ১৫০ কোটি টাকা উত্তোলন না করত।

বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, দেশের অর্থনীতি এগিয়ে যাচ্ছে এবং অনেক বড় হয়েছে। কিন্তু দেশের পুঁজিবাজার সেভাবে এগোচ্ছে না। এই সমস্যা কাটিয়ে তুলতে পুঁজিবাজারের অংশগ্রহণ বাড়ানো দরকার। এক্ষেত্রে বেশি বেশি করে ভালো কোম্পানি পুঁজিবাজারে আনতে হবে।

বিএসইসির আরেক সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, পুঁজিবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহের ক্ষেত্রে সময়ক্ষেপন একটি বড় বাধা। কিন্তু কোন ডায়নামিক উদ্যোক্তা পুঁজিবাজার থেকে ফান্ড সংগ্রহের জন্য ২ বছর অপেক্ষা করবে না। তাদের জন্য ব্যাংক ঋণ দেওয়ার জন্য বসে রয়েছে। এমতাবস্থায় তারা ব্যাংক ঋণ নিয়ে কোম্পানিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। তাই ভালো কোম্পানিকে পুঁজিবাজারে আনার জন্য এই সমস্যার বিষয়টি গভীরভাবে চিন্তার প্রয়োজন।

চলতি বছরে ফিক্সড প্রাইস পদ্ধতিতে ৫টি কোম্পানি ২৪৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে। আর বুক বিল্ডিংয়ে ৩টি কোম্পানি ৩০৭ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে। এই ২ পদ্ধতিতে ৮টি কোম্পানি মোট ৫৫২ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে।

আগের বছরে ফিক্সড প্রাইস পদ্ধতিতে ১১টি কোম্পানি ২৬৬ কোটি টাকা সংগ্রহ করে। আর বুক বিল্ডিংয়ে ২টি কোম্পানি ২৮০ কোটি টাকা সংগ্রহ করে। এই ২ পদ্ধতিতে ১৩টি কোম্পানি মোট ৫৪৬ কোটি টাকা সংগ্রহ করে।

ডিএসইর পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন বলেন, প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে (আইপিও) ভাল ও মন্দ উভয় কোম্পানি আসে। ডিসক্লোজারস ভিত্তির আইপিওতে অনেক ফাকঁফোকড় থাকার সুযোগে কিছু দূর্বল কোম্পানি পুঁজিবাজারে চলে এসেছে। তাই বলে আইপিও বাজারে আসা বন্ধ করা যাবে না। বন্ধ করতে হবে মন্দ আর্থিক প্রতিবেদন। তবে আশার কথা হচ্ছে, ডিএসই এরইমধ্যে একটি আইপিও রিভিউ টিম গঠন করেছে। এই রিভিউ কমিটির প্রধানতম কাজ হবে প্রসপেক্টাসে প্রদত্ত বিভিন্ন তথ্যাদি ও আর্থিক প্রতিবেদন যাছাই-বাছাই করে অবজারবেশন দেওয়া। যা পরবর্তীতে ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদে মাধ্যমে কমিশনে প্রেরণ করা হবে। যা বিএসইসির আইপিও অনুমোদনের প্রক্রিয়ায় সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

তিনি বলেন, আমরা কথায় কথায় পুঁজিবাজারে ভাল মানের আইপিও আসছে না বলে থাকি৷ আসলে ভাল মানের আইপিও বলতে কিছু নেই৷ আইপিওতে যেসব কোম্পানি আসে তাদের আর্থিক প্রতিবেদনের মান নিয়ে আমরা বলতে পারি৷ প্রসপেক্টাসে যে আর্থিক প্রতিবেদন থাকে, সেটা কোম্পানি তৈরি করে৷ ইস্যু ম্যানেজার তা নিয়ে আসে এবং অডিটর সেটায় স্বাক্ষর করে।

এএএ ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের প্রধান নির্বাহি কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ ওবায়দুর রহমান বলেন, অনেকে বাজারের মন্দার জন্য আইপিওকে দায়ী করে। কিন্তু প্রায় ৮ মাস ধরে আইপিও বন্ধ থাকলেও বাজারের কোন উন্নতি হয়নি। বরং আরও বেশি তলানিতে গিয়েছে। তাই পুঁজিবাজারের স্বার্থে আইপিও চলমান রাখা দরকার। এতে যোগ্য বিনিয়োগকারীসহ সাধারন বিনিয়োগকারীরা আইপিও শেয়ারে যেমন কয়েকগুণ লাভবান হয়, একইভাবে ব্রোকারেজ হাউজগুলোর কমিশনবাবাদ আয় বাড়ে। এছাড়া তালিকাভুক্তির কারনে স্টক এক্সচেঞ্জ বড় ধরনের ফি পেয়ে থাকে। আর নতুন শেয়ারের আগমনে বাজারে কম্পোন (ভাইব্রেন্ট) তৈরী হয়।

নিম্নে পুঁজিবাজার থেকে বিগত ১১ বছরে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহের তথ্য তুলে ধরা হল-

বিগত ১১ বছরের মধ্যে বিভিন্ন কোম্পানির পক্ষে শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে ২০১০ সালে সবচেয়ে বেশি অর্থ সংগ্রহ করা হয়। ওই বছরে মোট ৩ হাজার ৩৯০ কোটি ৩৩ লাখ টাকা সংগ্রহ করা হয়। এরপরের অবস্থানে থাকা ২০১১ সালে ৩ হাজার ২৩৩ কোটি ৬৫ লাখ টাকা সংগ্রহ করা হয়।

ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, দেশে ট্রেক রেকর্ড ভালো এমন ১ শত’র বেশি কোম্পানি আছে। এসব কোম্পানিকে পুঁজিবাজারে আনার পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।

এদিকে পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের মূলধন জিডিপির তুলনায় অনেক পিছিয়ে। এমনকি পাকিস্তানের থেকেও পিছিয়ে বাংলাদেশ। এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সমালোচনা রয়েছে। এ সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পুঁজিবাজারে বিভিন্ন কোম্পানির তালিকাভুক্তি বাড়ানো দরকার হলেও ২০১৯ সালে তা আরো কমেছে।

শেয়ারবার্তা / আনিস

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:

ভালো লাগলে শেয়ার করবেন...

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ