1. [email protected] : শেয়ারবার্তা প্রতিবেদক : শেয়ারবার্তা প্রতিবেদক
  2. [email protected] : শেয়ারবার্তা : nayan শেয়ারবার্তা
  3. [email protected] : news uploder : news uploder
প্লেসমেন্ট শেয়ার নিয়ে বিএসইসির প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকা
রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:২৪ এএম

প্লেসমেন্ট শেয়ার নিয়ে বিএসইসির প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকা

  • আপডেট সময় : রবিবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২২
bsec-banco-sonarbangla-capita-sharebarta

লাভেলো আইসক্রিম, নাহি অ্যালুমিনিয়াম, সি পার্ল ও বিবিএস ক্যাবলস কোম্পানিতে শেয়ার ধারণ না করেও ১০ কোটি টাকা জরিমানা ও ৫ বছরের নিষেধাজ্ঞায় পড়েছেন বানকো ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ হামদুল ইসলাম। এছাড়া বানকো ফাইন্যান্সের মালিকানায় জড়িত না থেকেও কেবলমাত্র ওসব কোম্পানির প্লেসমেন্ট শেয়ার কেনার দায়ে তার স্বজনদেরকে ১৬ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

তবে, প্রত্যক্ষভাবে মালিকানায় সম্পৃক্ত থাকার পরও ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্সকে শেয়ারবাজারে আনার জন্য ইস্যু ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করেছে সোনার বাংলা ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট। একইভাবে বিডি থাই ফুডের শেয়ার ধারণ করা সত্বেও বিএলআই ক্যাপিটাল কোম্পানিটির ইস্যু ব্যবস্থাপনার কাজ করেছে। এক্ষেত্রে এই দুই ইস্যু ব্যবস্থাপককে জরিমানা করা হয়নি।

বানকো ইস্যু ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করা কোম্পানিগুলোতে হামদুল ইসলামের আত্মীয়-স্বজন প্লেসমেন্ট শেয়ার ধারন করায়, ২০১৫ সালের পাবলিক ইস্যু রুলসের ৩(২)(ডি) লঙ্ঘন হয়েছে বলে বিএসইসির দাবি। এ কারনে হামদুল ইসলাম ও তার পরিবারকে জরিমানা করেছে বিএসইসি। কিন্তু বিএসইসির আইনে কোন ইস্যু ম্যানেজার প্রতিষ্ঠানের এমডির আত্মীয়-স্বজন শেয়ার ব্যবসা করতে পারবে না, এমনটি নেই।

২০১৫ সালের পাবলিক ইস্যু রুলসের ৩(২)(ডি)-তে বলা হয়, ইস্যু ম্যানেজার ইস্যুয়ারের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে পারবে না এবং শেয়ার ধারন করতে পারবে না। যা ২০১৭ সালের ১৮ জুলাই সংশোধনীতে বলা হয়, ইস্যু ম্যানেজার ও এর সঙ্গে সম্পৃক্ত কোন ব্যক্তি ইস্যুয়ারের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে পারবে না এবং শেয়ার ধারন করতে পারবে না।

ইস্যু ম্যানেজারের সংজ্ঞায় সিকিউরিটিজ ও এক্সচেঞ্জ কমিশন (মার্চেন্ট ব্যাংকার ও পোর্টফোলিও ম্যানেজার) বিধিমলিা ১৯৯৬ এর ২(ঞ) ধারায় বলা হয়েছে, মার্চেন্ট ব্যাংকার অর্থ এমন ব্যক্তি যিনি এই বিধিমালার অধীন করপোরেট উপদেষ্টা, পোর্টফোলিও ম্যানেজার, অবলেখক এবং ইস্যু ব্যবস্থাপক হিসেবে যাবতীয় কাজ করার জন্য নিবন্ধন সনদ প্রাপ্ত হইয়াছেন। আর ব্যক্তি অর্থ কোম্পানী, সংবিধিবদ্ধ সংস্থা।

বিএসইসির সংজ্ঞা অনুযায়ি, ইস্যু ম্যানেজার বানকো ফাইন্যান্স। যার সঙ্গে সম্পৃক্ত ওই প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও মালিকগন। কিন্তু বিএসইসি বানকো ফাইন্যান্সের ইস্যুয়ার কোম্পানির শেয়ার হামদুল ইসলামের আত্মীয়-স্বজন কেনার জন্য জরিমানা করেছে। যার কোনটি থেকেই হামদুল ইসলাম শেয়ার কিনেন নাই।

এছাড়া পাবলিক ইস্যু রুলসের ২০১৭ সালের ১৮ জুলাই সংশোধনীর আগে শেয়ারবাজারে আসা নাহি অ্যালুমিনিয়াম ও বিবিএস ক্যাবলসের শেয়ার কিনেছিল বা মালিকানায় ছিল হামদুল ইসলামের আত্মীয়-স্বজন। যে সংশোধনীর আগে শুধুমাত্র ইস্যু ম্যানেজার ইস্যুয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত বা শেয়ার কিনতে পারবে না বলে আইন ছিল।

অথচ এই বিএসইসিই ইস্যু ম্যানেজার সোনার বাংলা ক্যাপিটালের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্সকে সম্প্রতি শেয়ারবাজার থেকে অর্থ উত্তোলনের অনুমোদন দিয়েছে। সেক্ষেত্রে কোন সমস্যা হয়নি।

ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্সের খসড়া প্রসপেক্টাস অনুযায়ি, এই কোম্পানিটি থেকে সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্সে বিনিয়োগ করা হয়েছে। যার সাবসিডিয়ারি কোম্পানি সোনার বাংলা ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট। অর্থাৎ ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্সের মালিকানা সোনার বাংলা ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্টেও রয়েছে।

এ বিবেচনায় মালিকানাধীন ইস্যু ম্যানেজারের তত্ত্বাবধানে শেয়ারবাজারে এসেছে ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স। সেটা কোন বাধাঁ বা আইনগত সমস্যা হয়নি।

এদিকে আরেক কোম্পানি বিডি থাই ফুড অ্যান্ড বেভারেজও রয়েছে একই ধরনের ঘটনা। চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারি লেনদেন শুরু হওয়া কোম্পানিটিকে শেয়ারবাজারে আনতে ইস্যু ব্যবস্থাপনার কাজ করেছে বিএলআই ক্যাপিটাল লিমিটেড। যার হোল্ডিং কোম্পানি বে লিজিং অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট। অন্যভাবে বললে, বে লিজিংয়ের সাবসিডিয়ারি বা অধীনস্থ কোম্পানি বিএলআই ক্যাপিটাল। এই বে লিজিং, বিএলআই ক্যাপিটাল ও সাউথইস্ট ব্যাংকের কিছু পরিচালকের কমন শেয়ার ধারন রয়েছে। যারা আবার বিডি থাই ফুডেরও শেয়ার ধারন করেছে। এরমধ্য দিয়েই শেয়ারবাজারে এসেছে বিডি থাই ফুড।

বিডি থাই ফুডে আইপিও পূর্ব বা প্লেসমেন্ট শেয়ারহোল্ডার হিসেবে রয়েছেন- ইস্যু ম্যানেজার প্রতিষ্ঠান বিএলআই ক্যাপিটালের পরিচালক হূমায়ন কবির, তার ভাই আয়নুল কবির, ভাতিজা আদনান কবির, সাউথইস্ট ব্যাংক, সাউথইস্ট ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. আলমগীর কবিরের শ্যালক মফিজুর রহমান ও সাউথইস্ট ব্যাংক ক্যাপিটাল সার্ভিসেস। যাদের শেয়ার ৩ বছর লক-ইন থাকবে।

ওই ৬ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বিডি থাই ফুডের ১ লাখ শেয়ার ড. হূমায়ুন কবির, ১ লাখ শেয়ার আয়নুল কবির, ১ লাখ শেয়ার আদনান কবির, ১৫ লাখ শেয়ার মফিজুর রহমান, ৬২ লাখ শেয়ার সাউথইস্ট ব্যাংক ও ৩২ লাখ শেয়ার সাউথইস্ট ব্যাংক সার্ভিসেস ধারন করে আসছে। আর তাদেরই নেতৃত্বাধীন বা সম্পৃক্ত বিএলআই ক্যাপিটাল ইস্যু ব্যবস্থাপনার কাজ করেছে বিডি থাই ফুডের।

আলমগীর কবির সাউথইস্ট ব্যাংকের চেয়ারম্যান হলেও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বে-লিজিং অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের বড় শেয়ারহোল্ডার ছিলেন। যিনি সম্প্রতি কোম্পানিটির শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন। তাঁর স্ত্রী সুরাইয়া বেগম বে-লিজিংয়ের উদ্যোক্তা পরিচালকদের একজন, পরিচালক তারিক সুজাত ভাগনে আর পরিচালক জুবায়ের কবির তাঁর ভাতিজা। স্বতন্ত্র পরিচালক জাইদি সাত্তার সাউথইস্ট ব্যাংক ফাউন্ডেশনের পরিচালক। আবার শেয়ারহোল্ডার হিসেবে বে-লিজিংয়ের ইভিপি এম মনিরুজ জামান খান সাউথইস্ট ব্যাংকের পরিচালক পদেও আছেন।

এছাড়া সাউথইস্ট ব্যাংক এবং ব্যাংকটির মালিকানাধীন সাউথইস্ট ব্যাংক ক্যাপিটাল সার্ভিসেস বে-লিজিংয়ের শীর্ষ শেয়ারহোল্ডার। ২০১০ সাল থেকে গত ডিসেম্বর পর্যন্ত সাউথইস্ট ব্যাংক এবং সাউথইস্ট ব্যাংক ক্যাপিটাল সার্ভিসেস বে-লিজিংয়ের প্রায় ২০ শতাংশ শেয়ারের মালিক ছিল। বর্তমানে সাউথইস্ট ব্যাংকের মালিকানায় আছে ১ কোটি ৪০ লাখ ১২ হাজার ৪০৫টি শেয়ার, যা আর্থিক প্রতিষ্ঠানটির মোট শেয়ারের ৯ দশমিক ৯৫ শতাংশ। সাউথইস্ট ব্যাংক ক্যাপিটাল সার্ভিসেসের মালিকানায় গত ডিসেম্বর পর্যন্ত বে-লিজিংয়ের ১ কোটি ৩৬ লাখ ৬৫ হাজার ২০৯টি শেয়ার ছিল। যা ছিল ওই সময়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠানটির মোট শেয়ারের ৯ দশমিক ৬৫ শতাংশ। এখন আছে মাত্র ৩০ লাখ শেয়ার। গত জানুয়ারিতে মার্চেন্ট ব্যাংকটি ৪১ লাখ ৫৫ হাজার এবং ফেব্রুয়ারিতে ৬১ লাখ ৩০ হাজার শেয়ার প্রায় ৩৫ কোটি টাকা মূল্যে বিক্রি করে।

এ ছাড়া সাউথইস্ট ব্যাংকের চেয়ারম্যান আলমগীর কবির তাঁর ব্যক্তিগত বিও হিসাবে থাকা বে লিজিংয়ের প্রায় ৪০ লাখ শেয়ারের পুরোটাই বিক্রি করেন। তিনি নিজের নামে থাকা বে-লিজিংয়ের সব শেয়ার গত এপ্রিল থেকে জুনের মধ্যে। এসব শেয়ার তিনি এক যুগেরও বেশি সময় রেখেছিলেন।

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:

ভালো লাগলে শেয়ার করবেন...

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ