দেশের পুঁজিবাজারে অব্যাহত রয়েছে সূচকের পতন। পরপর দুই দিন বড় পতনের পর বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা ছিল পরের কার্যদিবসে (গতকাল) বাজার ঘুরে দাঁড়ানোর পাশাপাশি বাড়বে সূচক। কিন্তু গতকাল দিন শেষে বিনিয়োগকারীদের সে প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। সকালে সূচক ঊর্ধ্বমুখী থাকলেও দিন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচকের পতন হয়েছে ২৬ পয়েন্ট। দিন শেষে সূচকের অবস্থান হয় চার হাজার ৫০৬ পয়েন্টে।
এদিকে সূচকের পতন অব্যাহত থাকায় বিনিয়োগকারীদের হতাশা আরও ভারী হচ্ছে। বাড়ছে লোকসান। পুঁজি বাঁচাতে ঘনঘন পোর্টফলিওতে পরিবর্তন আনছেন তারা। কিন্তু এতেও কোনো কাজ হচ্ছে না। একযোগে সব ধরনের শেয়ারদর পতনের কারণ কৌশলী হয়েও লাভ হচ্ছে না তাদের। সংশ্লিষ্টদের মতে বিনিয়োগকারীদের এ ধরনের আচরণ তাদের পতনকে আরও উসকে দিচ্ছে।
সপ্তাহের তৃতীয়দিন মঙ্গলবার দিনের শুরু থেকে বিক্রির চাপ থাকায় আরও তলানিতে নেমে যায় সূচক। তবে এ পতনের পেছনে সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না বাজারসংশ্লিষ্টরা। এর জন্য তারা বিনিয়োগকারীদের মনোগত কারণ উল্লেখ করেন। তাদের অভিমত বাজার স্থিতিশীল করার জন্য বিভন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। কিন্তু তারওপর বাজারের সার্বিক অবস্থার পরিবর্তন হচ্ছে না। এর মূল কারণ বিনিয়োগকারীদের আস্থাহীনতা। প্রতিনিয়ত যার প্রতিফলন পড়ছে বাজারে।
মঙ্গলবার ২৬ পয়েন্ট সূচক পতনের মধ্যে দিয়ে তিন বছর পাঁচ মাস অর্থাৎ ৪১ মাস বা ৮২৭ কার্যদিবসের মধ্যে সর্বনি¤œ অবস্থানে নেমে যায়। এর আগে ২০১৬ সালের ১১ জুলাই মঙ্গলবারের চেয়ে নিম্ন অবস্থান করছিল ডিএসইর ডিএসইএক্স সূচকটি। ওই দিন ডিএসইএক্স অবস্থান করছিল চার হাজার ৫০৫ পয়েন্টে। ডিএসইতে টাকার পরিমাণে লেনদেন হয়েছে ৩০৫ কোটি ৮৭ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট, যা আগের দিন থেকে ৩০ কোটি ৫৮ লাখ টাকা বেশি। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ২৭৫ কোটি ২৯ লাখ টাকার।
এদিকে মঙ্গলবারের লেনদেন চিত্রে দেখা যায় এদিন এককভাবে কোনো খাতের কোম্পানির আধিপত্য ছিল না। সব খাতেরই বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারদর হ্রাস পাওয়ার প্রবণতা দেখা গেছে। তবে মোট লেনদেনে সবচেয়ে বেশি অবদান ছিল ব্যাংক খাত। এ খাতের মোট অবদান ছিল ১৩ দশমিক ৩১ শতাংশ। পরের অবস্থানে ছিল ওষুধ ও রসায়ন খাত। এ খাতের অবদান ছিল ১৩ দশমিক ২২ শতাংশ। এর পরের অবস্থানে ছিল বিমা খাত। এ খাতের অবদান ছিল ১২ দশমিক ৯৮ শতাংশ। এছাড়া প্রকৌশল খাতের ৯ দশমিক ৮৬ শতাংশ, জ্বালানি ও শক্তির পাঁচ দশমিক ৬৬ শতাংশ, বিবিধ খাতের ছয় দশমিক ১৭ শতাংশ এবং খ্যাদ্য খাতের অবদান ছিল চার দশমিক ৪৯ শতাংশ।
অন্যদিকে মঙ্গলবার টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে স্কয়ার ফার্মার। এদিন কোম্পানিটির ১২ কোটি ৫২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেনে দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসা সায়হাম কটনের আট কোটি ৪৪ লাখ টাকার এবং আট কোটি ৪৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে উঠে আসে সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্স।
ডিএসইর সার্বিক লেনদেনে উঠে আসা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে-সিনোবাংলা, ড্যাফোডিল কম্পিউটার্স, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, নিউলাইন ক্লোথিংস, খুলনা পাওয়ার, লাফার্জহোলসিম এবং ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকো।
শেয়ারবার্তা / আনিস