পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির বিমা কোম্পানির অগ্রগতি জানতে আগামী ১৭ ডিসেম্বর ২৮ বিমা কোম্পানির সঙ্গে বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। এর আগে গত ১৫ নভেম্বরের মধ্যে কোম্পানিগুলোকে এ সংক্রান্ত রোডম্যাপ জমা দেয়ার নির্দেশ দেয় আইডিআরএ। ২৭ অক্টোবর তালিকাবহির্ভূত বিমা কোম্পানিগুলোর সঙ্গে আইডিআরএ, অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) প্রতিনিধিদের বৈঠকে এ নির্দেশনা দেয়া হয়।
আইডিআরএ সদস্য বোরহান উদ্দীন আহমেদ – কে বলেন, ‘তালিকাবহির্ভূত বীমা কোম্পানিগুলো কীভাবে, কোন প্রক্রিয়ায় পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হবে সে বিষয়েই আগামী বৈঠকে আলোচনা করা হবে। এরই মধ্যে তালিকাভুক্তির জন্য বেশ কিছু কোম্পানি ইস্যু ম্যানেজার নিয়োগ করেছে। তবে অর্থমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী তালিকাভুক্তির সময়সীমা বেধে দেয়া হলেও কোম্পানিগুলোর আবেদনের প্রেক্ষিতে তা বাড়ানো হতে পারে।
বীমা খাতের কোম্পানিগুলোকে অনুমোদন পাওয়ার তিন বছরের মধ্যে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হতে হয়। কিন্তু তিন বছর সময়সীমা পার হওয়ার পরও পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়নি ২৮টি বীমা কোম্পানি। এর মধ্যে পুরনো কোম্পানি ১৩টি ও নতুন ১৫টি। গত ১৬ সেপ্টেম্বর পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির বিষয়ে অর্থমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক তালিকাবহির্ভূত কোম্পানিগুলোকে এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার নির্দেশ দেয় আইডিআরএ। অন্যথায় বিমা আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানায় নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থাটি। তবে সময় বেধে দেয়ার পরও গত আড়াই মাসে মাত্র দু’টি কোম্পানি বিএসইসি’র কাছে তালিকাভুক্তির আবেদন করেছে। অবশিষ্ট কোম্পানিগুলো এখনো কোনো সাড়া দেয়নি। অর্থমন্ত্রীর নির্দেশের পর যে দু’টি কোম্পানি তালিকাভুক্তির জন্য আবেদন করেছে, সেগুলো হলো- সাধারণ বীমা খাতের দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড ও এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড।
উল্লেখ্য, পুরনো যেসব কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির বাধ্যবাধকতা পরিপালনে ব্যর্থ হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে হোমল্যান্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স, গোল্ডেন লাইফ ইন্স্যুরেন্স, মেঘনা ইন্স্যুরেন্স, ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স, ইসলামী কমার্শিয়াল ইন্স্যুরেন্স, দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স, সাউথ এশিয়া ইন্স্যুরেন্স, এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স ও বাংলাদেশ কো-অপারেটিভ ইন্স্যুরেন্স। এর মধ্যে দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স ও এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স তালিকাভুক্তির আবেদন করলেও এখন পর্যন্ত তারা নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছ থেকে অনুমোদন পায়নি।
২০১৩ সালে নতুন ১৫টি বীমা কোম্পানির লাইসেন্স দেয় আইডিআরএ। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার নির্ধারিত সময় পার হওয়ার পর কয়েকটি কোম্পানি দু’বছর সময় বাড়িয়ে নেয়। কিন্তু সে সময় পার হওয়ার পরও কোম্পানিগুলো এখন পর্যন্ত পুঁজিবাজারের বাইরেই রয়েছে। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির বাইরে থাকা নতুন জীবন বিমা কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে আলফা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, বেস্ট লাইফ ইন্স্যুরেন্স, চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ডায়মন্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স, গার্ডিয়ান লাইফ ইন্স্যুরেন্স, যমুনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, এনআরবি গ্লোবাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স, প্রটেকক্টিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্স, সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, স্বদেশ লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ট্রাস্ট লাইফ ইন্স্যুরেন্স ও জেনিথ লাইফ ইন্স্যুরেন্স। এছাড়া নতুন সাধারণ বীমা কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে সিকদার ইন্স্যুরেন্স ও সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্স।
শেয়ারবার্তা/ সাইফুল ইসলাম