পেশাদার অ্যাকাউন্ট্যান্টের সংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশ এখনো অনেক পিছিয়ে। বর্তমানে দেশে পেশাগত অ্যাকাউন্ট্যান্টের সংখ্যা প্রায় চার হাজার, যা প্রয়োজনের তুলনায় অপর্যাপ্ত। অন্যদিকে নিরীক্ষকের স্বাক্ষরসহ কোম্পানিগুলোর যেসব আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়, ৬০ শতাংশ মানুষেরই সেগুলোর ওপর আস্থা নেই। এ মুহূর্তে আমাদের প্রয়োজন দক্ষ ও সৎ পেশাদার অ্যাকাউন্ট্যান্ট। আর এ ধরনের অ্যাকাউন্ট্যান্ট তৈরিতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখতে পারেন অ্যাকাউন্টিং শিক্ষকরা।
শুক্রবার ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএমএবি) আয়োজিত ‘দ্বিতীয় অ্যাকাউন্টিং এডুকেটরস কনফারেন্স’-এ বক্তারা এসব কথা বলেন। কনফারেন্সের উদ্বোধনী পর্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইসিএমএবির ভাইস প্রেসিডেন্ট ও এডুকেশন কমিটির চেয়ারম্যান জামাল আহমেদ চৌধুরী। প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ও আইসিএমএবির একাডেমিক অ্যাফেয়ার্সের কনসালট্যান্ট নিখিল চন্দ্র শীল। এছাড়া এতে বক্তব্য রাখেন আইসিএমএবির প্রেসিডেন্ট এম আবুল কালাম আজাদ মজুমদার ও আইসিএমএবির সেক্রেটারি মো. আবদুর রহমান খান।
আইসিএমএবির প্রেসিডেন্ট এম আবুল কালাম আজাদ মজুমদার তার বক্তব্যে অ্যাকাউন্টিং পেশার বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরেন। এছাড়া তিনি এ পেশার চ্যালেঞ্জ ও বাধাগুলো সম্পর্কেও জানান। আইসিএমএবির ভাইস প্রেসিডেন্ট ও এডুকেশন কমিটির চেয়ারম্যান জামাল আহমেদ চৌধুরী তার বক্তব্যে পরিবর্তনের সঙ্গে পেশাদার অ্যাকাউন্ট্যান্টদের খাপ খাওয়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
প্রথম টেকনিক্যাল সেশনে টেলিকমিউনিকেশন প্রতিষ্ঠান রবি আজিয়াটা লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাহতাব উদ্দীন আহমেদ ‘ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন: ইজ দ্য অ্যাকাউন্টিং প্রোফেশন রেডি?’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। এতে তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়নের মাধ্যমে বৈশ্বিক পরিস্থিতির পরিবর্তন ও আসন্ন চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের ফলে বিভিন্ন পেশায় এর প্রভাব কীভাবে পড়বে, তার ধারণা দেন। তিনি সব পেশার মতো অ্যাকাউন্টিং পেশাজীবী ও শিক্ষকদেরও এ পরিবর্তনের জন্য প্রস্তুত হতে এবং প্রয়োজনীয় নতুন দক্ষতা ও জ্ঞান লাভের তাগিদ দেন। গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন বাংলাদেশ লিমিটেডের ফিন্যান্স ডিরেক্টর হাসনাইন তৌফিক আহমেদ সেশনটিতে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সেশন পরিচালনা করেন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) নির্বাহী পরিচালক পার্থপ্রতীম দেব।
দ্বিতীয় টেকনিক্যাল সেশনের মূল বিষয়বস্তু ছিল ‘ইমার্জিং করপোরেট রিপোর্টিং ফ্রেমওয়ার্কস’। ‘সাসটেইনেবিলিটি রিপোর্টিং: অ্যালাইনিং উইথ দ্য ২০৩০ এজেন্ডা’ শিরোনামের সেশনটি পরিচালনা করেন আইসিএমএবির সহসভাপতি এবং আইডিএলসি ফিন্যান্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফ খান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের অধ্যাপক ড. ইউসুফ কামাল এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। এর ওপর বক্তব্য প্রদান করেন প্রাইম ব্যাংক লিমিটেডের চিফ বিজনেস অফিসার তৌহিদুল আলম খান।
তৃতীয় টেকনিক্যাল সেশন পরিচালনা করেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের কমিশনার ড. স্বপন কুমার বালা। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেডের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) আব্দুল মতিন পাটওয়ারী এ সেশনে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। ম্যারিকো বাংলাদেশ লিমিটেডের সিএফও ইলিয়াস আহমেদ প্রবন্ধের ওপর বক্তব্য প্রদান করেন।
শেয়ারবার্তা / হামিদ