নিয়ন্ত্রক সংস্থা পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ভ্রমণ ও অবকাশখাতের কোম্পানি ইউনাইটেড এয়ারওয়েজকে (বিডি) বিগত চার অর্থবছরের (২০১৮, ২০১৯, ২০২০ ও ২০২১ সালের) আর্থিক প্রতিবেদন নীরিক্ষা করার অনুমোদন দিয়েছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) নিরীক্ষক প্যানেল থেকে অডিট ফার্মের মাধ্যমে এই নিরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে কোম্পানিটির বিগত চার বছরের বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) নিয়মিত করার অনুমোদন দিয়েছে কমিশন।
সম্প্রতি ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে পাঠানো চিঠিতে এই অনুমোদন দেয়া হয়। বিষয়টি ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই-সিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালককে অবহিত করা হয়েছে।
এর আগে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ বিএসইসির কাছে চার বছরের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ ও অডিট করার অনুমোতি চেয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির আবেদন পরিপ্রেক্ষিতে বিগত চার বছরের আর্থিক প্রতিবেদন নিরীক্ষা করা এবং মুলতবি থাকা এজিএম নিয়মিতকরণের অনুমোদন দিয়েছে বিএসইসি।
বিএসইসি’র চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ইউনাইটেড এয়ারের অডিটর নিয়োগ এবং এজিএম নিয়মিতকরণ সংক্রান্ত চিঠি পেয়েছি। এই বিষয়ে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজকে বিএসইসি’র নিরীক্ষকদের প্যানেল থেকে একটি অডিট ফার্মের দ্বারা ২০১৮, ২০১৯, ২০২০ ও ২০২১ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত চারটি আর্থিক বছরের আর্থিক বিবরণীর অডিট সম্পন্ন করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। একইসঙ্গে কোম্পানি আইন, ১৯৯৪ এর প্রয়োজনীয়তা মেনে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের মুলতবি থাকা এজিএম নিয়মিত করার পরামর্শ দেওয়া হলো।
এই বিষয়ে জানত চাইলে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের পুনর্গঠিত পর্ষদের দায়িত্বপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান কাজী ওয়াহিদ উল আলম বলেন, ‘কোম্পানিটির বিগত চার হিসাব বছরের অডিট এবং মুলতবি থাকা এজিএম সম্পন্ন করার জন্য বিএসইসি’র কাছে অনুমোদন চেয়েছিলাম। বিএসইসি আমাদেরকে এ বিষয়ে অনুমোদন দিয়েছে। অডিটের কাজ আমরা শুরু করেছি। আশা করছি, দ্রুত সময়ের মধ্যে আমরা অডিটের কাজ শেষ করতে পারব। একইসঙ্গে আমরা টেকনিক্যাল অডিটও করছি। আর মুলতবি থাকা এজিএম নিয়মিত করার উদ্যোগ নিয়েছি। এ জন্য শিগগিরই উচ্চ আদালতের কাছে অনুমোদন চেয়ে আবেদন করা হবে। উচ্চ আদালতের অনুমতি পেলেই বিগত চার বছরের এমজিএম করা হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘বিএসইসি’র নির্দেশে ইতোমধ্যে ডিএসই থেকে আমরা ২০ লাখ টাকা ঋণ পেয়েছি। ঋণের টাকা দিয়ে নিরীক্ষার কাজ করা হচ্ছে। তবে টেকনিক্যাল অডিটের জন্য বিদেশি ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগ দেওয়াগ হয়েছে। তারা বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। তবে ১০টি এয়ারক্রাফট ইন্সপেকশন করা এবং সেই সংক্রান্ত রিপোর্ট রেডি করা একটু সময় সাপেক্ষ। তারপরও এসব কাজ দ্রুত গতিতে চলছে।
সম্প্রতি ইউনাইটেড এয়ারওয়েজকে আর্থিক সহায়তা প্রদানের উদ্যোগ নেয় বিএসইসি। এর ধারাবাহিকতায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জকে (ডিএসই) তাদের ইনভেস্টর প্রোটেকশন ফান্ড (বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা তহবিল) বা অন্য কোনো উৎস থেকে কোম্পানিটিকে ২০ লাখ টাকা দেওয়ার নির্দেশ দেয় কমিশন। ওই নির্দেশ পরিপ্রেক্ষিতে ডিএসই কোম্পানিটিকে ২০ লাখ টাকা ঋণ দেয়।
দীর্ঘ ৫ বছর ব্যবসায়িক কার্যক্রম বন্ধ থাকা ইউনাইটেড এয়ারওয়েজকে পুনরায় চালু করার উদ্যোগ নেয় বিএসইসি। এ লক্ষ্যে কোম্পানির পুরনো উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের বাদ দিয়ে নতুন আট জন স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানিটিতে মনোনীত স্বতন্ত্র পরিচালকদের মধ্যে রয়েছে কাজী ওয়াহিদ উল আলম, এম সাদিকুল ইসলাম, মাসকুদুর রহমান সরকার, এটিএম নজরুল ইসলাম, প্রফেসর ড. বদরুজ্জামান ভূঁইয়া, মুহাম্মদ ইউনুস, মোহাম্মদ শাহ নেওয়াজ ও সৈয়দ এরশাদ আহমেদ। কোম্পানির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন কাজী ওয়াহিদ উল আলম।
সম্প্রতি বিএসইসি ওটিসি মার্কেট বাতিল করে বিএসইসি। এরই ফলে ওটিসি মার্কেটে থাকা ইউনাইটেড এয়ারকে অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ডে স্থানান্তর করা হবে। শিগগিরই অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ড চালু করা হবে বলে জানাজায় বিএসইসি সূত্রে।