এখন থেকে ব্যাংকগুলো উপশাখা খুলতে পারবে। ব্যাংকিং সুবিধাবঞ্চিত এলাকায় আগে ব্যাংকিং বুথ নামে কার্যক্রম পরিচালনার অনুমোদন ছিল। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যাংকিং রেগুলেশন অ্যান্ড পলিসি ডিপার্টমেন্ট (বিআরপিডি) থেকে উপশাখা রূপান্তর করার নির্দেশনা জারি করেছে। এছাড়া মোবাইল ব্যাংকিং, এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মতো নতুন করে উপশাখার অনুমোদনও দেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। যেসব ব্যাংক এরই মধ্যে ‘ব্যাংকিং বুথ’ নামে ব্যবসা কেন্দ্র খুলেছে, সেই কেন্দ্রগুলোকে ‘উপশাখা’ নামে অভিহিত করতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারে বলা হয়েছে, এখন থেকে ‘ব্যাংকিং বুথ’ নামের ব্যবসা কেন্দ্রগুলো ‘উপশাখা’ নামে পরিচিত হবে। একইসঙ্গে ‘ব্যাংকিং বুথ’ শব্দগুচ্ছ এবং ‘ব্যাংকিং বুথ’ বোঝাতে ব্যবহৃত সব শব্দ বা শব্দগুচ্ছ ‘উপশাখা’ শব্দ দ্বারা প্রতিস্থাপিত হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, ব্যাংকের ভল্টের নিরাপত্তার মতো উপশাখার নগদ টাকা জমা ও ভল্টে থাকা টাকার পূর্ণ বিমা নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনে উপশাখায় ভল্টও স্থাপন করতে পারবে। তবে ওই ভল্ট নিয়ন্ত্রণকারী শাখার ভল্ট হিসেবে গণ্য হবে। ব্যাংকের কোনো পূর্ণাঙ্গ শাখার নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত স্বল্পব্যয়ী ‘ব্যবসা কেন্দ্র’ এখন থেকে উপশাখা নামে পরিচালিত হবে।
উপশাখায় নিরবচ্ছিন্ন ব্যাংকিং সেবা নিশ্চিত করতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তাসহ তথ্যপ্রযুক্তি কাঠামো থাকার কথা বলা হয়েছে। উপশাখায় যেসব সেবা পাওয়া যাবে তার একটি তালিকা দৃশ্যমান স্থানে প্রদর্শন করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি গ্রাহকদের জন্য অভিযোগ কেন্দ্র রাখার কথাও বলা হয়েছে।
ব্যাংকের শাখার মতো উপশাখাগুলোতেও বেশকিছু সুবিধা পাওয়া যাবে। এসব ব্যবসা কেন্দ্র চালু করতে হলে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া উপশাখার আকার এক হাজার বর্গফুটের বেশি ও কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অন্তত দু’জন কর্মকর্তা নিয়োগ করার কথা বলা হয়েছে।
উপশাখায় খোলা যেকোনো ব্যাংক হিসাব, মূল ব্যাংক শাখায় খোলা হিসাব বলে বিবেচিত হবে। হিসাব খোলার ক্ষেত্রে গ্রাহক পরিচিতি তথ্যসহ (নো ইউর ক্লাইন্ট-কেওয়াইসি) প্রচলিত বিধি-বিধান যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে। উপশাখার লেনদেন নিয়ন্ত্রণকারী শাখার বুকস অব অ্যাকাউন্টসে অন্তর্ভুক্ত হবে।
ব্যয়ের বিষয়ে বলা হয়েছে, স্বল্পব্যয়ী ব্যাংকিং আউটলেট বিবেচনায় প্রচলিত শাখা স্থাপনের জন্য নির্ধারিত বিভিন্ন ব্যয়সীমার চেয়ে উপশাখা স্থাপনের ব্যয় এবং প্রচলিত শাখা থেকে দেয়া ব্যাংকিং সেবার জন্য নির্ধারিত ফি, চার্জ, কমিশনের চেয়ে উপশাখার সেবা দেয়ার ফি, চার্জ, কমিশন সবই কম হতে হবে।
জানা গেছে, উপশাখায় সব লেনদেন রিয়েল টাইম বেসিসে সম্পাদিত হবে এবং গ্রাহকদের তাৎক্ষণিকভাবে এসএমএস ও প্রিন্ট করে অর্থপ্রাপ্তির রশিদ দিতে হবে। উপশাখার সেবার পরিসর এবং যেকোন লেনদেনের ঊর্ধ্বসীমা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক অনুমোদিত হতে হবে। তবে উপশাখায় বৈদেশিক বাণিজ্যসংক্রান্ত কোন কার্যক্রম সম্পাদন করা যাবে না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ইন্টারনাল কন্ট্রোল অ্যান্ড কমপ্লায়েন্স নীতিমালা এবং সংশ্লিষ্ট নির্দেশনার আলোকে ব্যাংকের নিরীক্ষা কার্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত রাখতে হবে। অর্থপাচারের ঝুঁকি মোকাবিলায় প্রচলিত বিধি-বিধান মেনে চলতে হবে। উপশাখার সেবা দেয়ার সময় হবে স্বাভাবিক ব্যাংকিং সময়।
তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন সাপেক্ষে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করে ব্যাংক তার ব্যবসা ও গ্রাহকসেবার স্বার্থে অন্য সময়েও খোলা রাখতে পারবে।
শেয়ারবার্তা/ সাইফুল ইসলাম