বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) ডিএসইর নিকুঞ্জ কার্যালয়ে বেক্সিমকো সুকুক বন্ডের লেনদেনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম পুঁজিবাজারের উন্নয়ন ও দেশের অর্থনীতিতে অবদান বাড়ানোর পথে কোনো বাধা থাকলে তা প্রতিহত করে কাজ করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন ।
বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, নতুন পণ্য বাজারে এনে বাজারকে আরও বেশি সমৃদ্ধ করার চেষ্টা করে যাচ্ছে বিএসইসি। বেক্সিমকো সুকুক বন্ডের মাধ্যমে সেই চেষ্টা আরও একধাপ এগিয়ে গেল। এভাবেই বাজার লংটার্মের দিকে এগিয়ে যাবে। আমরা শুরু থেকে বাজারে পণ্য ডারভাইসিফাই করার কথা বলে আসছি। বেক্সিমকো সুকুকের মাধ্যমে তার যাত্রা শুরু হয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি বাণিজ্য বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। এতে সভাপতিত্ব করেন ডিএসইর চেয়ারম্যান মোঃ ইউনুসুর রহমান। অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তব্য দেন ডিএসইর এমডি তারিক আমিন ভূঁইয়া।
এর আগে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) অনুমোদন নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি বাজার বন্ড ইস্যু করে ৩ হাজার কোটি টাকা উত্তোলন করেছে। গত বছরের ডিসেম্বর মাসে টাকা উত্তোলনের সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে কোম্পানিটি। সুদবিহীন সুকুক বন্ডের এই ৩ হাজার কোটি টাকা দিয়ে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর ইউনিয়নের খোদ্দা ও লাঠশালার চরে এক হাজার একর জমির ওপর ২০০ মেগাওয়াটের সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের পাশাপাশি পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় আরও ৩০ মেগাওয়াটের করতোয়া সোলার লিমিটেড বিদ্যুৎকেন্দ্র করবে বেক্সিমকো লিমিটেড।
সুকুকের ৩ হাজার কোটি টাকার মধ্যে ২৬টি প্রতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী দিয়েছে ২ হাজার ১০৩ কোটি টাকা। বাকি টাকার মধ্যে আন্ডাররাইটার দিয়েছে ১৩৫ কোটি টাকা, সাধারণ বিনিয়োগকারীরা দিয়েছেন ৪২৩ কোটি টাকা। এছাড়া ৩৩৬ কোটি ৯২ লাখ টাকা দিয়েছে করপোরেট প্রতিষ্ঠান। সুকুকটির ট্রাস্টি ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) এবং ইস্যু ম্যানেজার সিটি ব্যাংক ক্যাপিটাল রিসোর্সেস ও অগ্রণী ইক্যুইটি অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট।
উল্লেখ্য, সুকুক বন্ড হলো সুদবিহীন বন্ড। এটি শরীয়াহ ভিত্তিক ট্রাস্টির মাধ্যমে পরিচালিত হয়। এই বন্ডের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করে মূলত বড় বড় প্রকল্পে বিনিয়োগ করা হয়। এসব প্রকল্পের মালিকানার অংশীদার হন সুকুক বন্ডের বিনিয়োগকারীরা, অন্য বন্ডে এই সুযোগ নেই। সুকুক বন্ডের বিনিয়োগ ব্যর্থ হলে ওই প্রকল্পের সম্পদ বিক্রি করে বিনিয়োগকারীদের অর্থ ফেরত দেওয়ার সুযোগ রয়েছে।
বেক্সিমকোর প্রত্যাশা, সুকুক বন্ডটির ভিত্তি মুনাফা হবে কমপক্ষে ৯ শতাংশ। এর বাইরে সুকুকটি অংশগ্রহণমূলক হওয়ায় বেক্সিমকো লিমিটেডের ঘোষিত ডিভিডেন্ডের সঙ্গে সুকুকের মুনাফার যে ফারাক থাকবে তার ১০ শতাংশ অতিরিক্ত মুনাফা হিসেবে যুক্ত হবে।