নাভানা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য বুক-বিল্ডিং পদ্ধতির অধীনে প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিও’র মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে ৭৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করতে চায়।
বুক-বিল্ডিংয়ের মানদণ্ড অনুযায়ী, কোম্পানিটি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে নিজেদের পরিচয় করিয়ে দেবার জন্য আজ (২১ ডিসেম্বর) একটি রোডশোর আয়োজন করে।
রাজধানীর সেরাটন হোটেলে আয়োজিত এ রোড শোতে কোম্পানিটি তাদের প্রসপেক্টাসে বিগত ৫ অর্থাবছরের ফিন্যান্সিয়াল প্রতিবেদন তুলে ধরেছে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত নাভানা ফার্মাসিউটিক্যালসের চেয়ারম্যান আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, নাভানা ফার্মাসিউটিক্যাল সব সময় মান সম্মত প্রোডাক্ট তৈরি করে যাচ্ছে। ফার্মাসিউটিক্যাল সেক্টরে কোম্পানিটি শক্ত অবস্থানে রয়েছে। ২০২১ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত নাভানা কোম্পানি টেক্স পরবর্তী ২০ কোটি টাকা মুনাফা করেছে।
তিনি আরও বলেন, নাভানা ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেড ৩০ বছর অতিক্রম করেছে। এর মধ্যে আমরা মানুষের আস্থা অর্জন করেছে। আমরা দেশের চাহিদা পূরণ করে বিদেশেও রপ্তানি করবো। এছাড়াও বাংলাদেশে আমরা ভ্যাকসিন তৈরির করার পরিকল্পনা আছে।
উক্ত রোড-শো তে আরও উপস্থিত ছিলেন নাভানা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড এর ব্যাবস্থাপনা পরিচালক জুনায়েদ শফিক, ডিরেক্টর অফ সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং ড. সাঈদ আহমেদ, এশিয়ান টাইগারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফুয়াদ হোসেনসহ আরও অনেকে।
নাভানা ফার্মাসিউটিক্যালস ৩১ মার্চ ১৯৮৬ সালে গঠিত হয়। কোম্পানিটি মূলত পশুচিকিৎসা এবং মানব স্বাস্থ্য এই দুটি বিভাগের অধীনে তাদের ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। কোম্পানীর ভেটেরিনারি বিভাগ পোল্ট্রি, দুগ্ধ এবং জলজাত পণ্য সহ বিভিন্ন বিভাগের জন্য ১২৩ টিরও বেশি উচ্চ-মানের ওষুধ এবং ফিড সাপ্লিমেন্ট তৈরি করে এবং বাজারজাত করে।
অন্যদিকে, মানব স্বাস্থ্য বিভাগ ২৭৭ টিরও বেশি ওষুধ তৈরি করে। যার ট্যাবলেট, ক্যাপসুল, ওরাল লিকুইড, অ্যাম্পুল, শুকনো পাউডার শিশি, সাসপেনশনের জন্য পাউডার, চোখের ড্রপ, ক্রিম ও মলম ইত্যাদি রয়েছে। নাভানা ফার্মা প্রায় ৩০০০ কর্মী নিয়ে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে প্রায় ১৫ টি দেশে এসব পণ্য রপ্তানি করে থাকে।
কোম্পানিটির ২০২০-২১ অর্থবছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, কোম্পানির নিট মুনাফা দাঁড়িয়েছে ১৭.৯৮ কোটি টাকা, যা আগের অর্থবছরে ১৩.১৩ কোটি টাকা ছিল। এ সময়ে কোম্পানিটির আয় ছিল ৩৬০.৬৬ কোটি টাকা, যা আগের বছরে ছিল ৩১৪.৯০ কোটি টাকা।
কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় ছিল ২.২৪ টাকা, যা আগের বছরে ছিল ১.৬৪ টাকা। এবং ২১ অর্থবছরে এ এর শেয়ার প্রতি নিট সম্পদের মূল্য ছিল ৪০.৯ টাকা।
কোম্পানিটির কারখানা নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপসী, রূপগঞ্জ, অবস্থিত।
কোম্পানিটির ইস্যু ম্যানেজার হিসেবে কাজ করছে এশিয়ান টাইগার ক্যাপিটাল পার্টনারস ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড, ইউসিবি ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড এবং ইবিএল ইনভেস্টমেন্টস লিমিটেড। অন্যদিকে এএফসি ক্যাপিটাল লিমিটেড নাভানা ফার্মার আইপিও প্রক্রিয়ার রেজিস্ট্রার হিসেবে কাজ করছে।
বাংলাদেশে ওষুধ শিল্পের ব্যাপক বিকাশ ঘটেছে. স্বাধীনতা পরবর্তীকালে বাংলাদেশ প্রায় শতভাগ বিদেশী ওষুধের উপর নির্ভরশীল ছিল। কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশের ওষুধ বিশ্বের ১৮০টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে। স্থানীয় ঔষধ ও রাসায়নিক ক্ষাতের প্রতিষ্ঠানগুলো এখন দেশীয় বাজারের চাহিদার ৯৮ শতাংশ পূরণ করছে। প্রতিষ্ঠানগুলো ভ্যাকসিন, হৃদরোগ ও ক্যান্সার রোগের ওষুধ এবং ইনসুলিন সহ বিভিন্ন জটিল এবং আন্তর্জাতিক মানের ওষুধ তৈরি ও উৎপাদন করছে। তাই এই খাতে বিনিয়োগকে সম্ভাবনাময় মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।