1. [email protected] : শেয়ারবার্তা প্রতিবেদক : শেয়ারবার্তা প্রতিবেদক
  2. [email protected] : শেয়ারবার্তা : nayan শেয়ারবার্তা
  3. [email protected] : news uploder : news uploder
ডেল্টা লাইফের টাকা পাচারের তথ্য চেয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়
মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০২:০১ পিএম

ডেল্টা লাইফের টাকা পাচারের তথ্য চেয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়

  • আপডেট সময় : বৃহস্পতিবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০২১
Delta-Hospital

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের টাকা বিদেশে পাচারসহ আত্মসাৎ ও দুর্নীতির প্রতিবেদন চেয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির কাছে ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারসহ ৩৬৮৭ কোটি টাকার দুনীতির রিপোর্ট পেশ করেছে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। সাবেক সাসপেন্ডেড পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ এর সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ তোলা হয়েছে। আইডিআর এই বিমা কোম্পানির ওপর নিরীক্ষা করলে প্রাথমিকভাবে বড় ধরনের আর্থিক অনিয়ম, দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের তথ্য বেরিয়ে আসে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে পাওয়া গেছে এসব তথ্য।

এর আগে আইডিআরএ কোম্পানির ওপর নিরীক্ষা চালায়। নিরীক্ষা প্রতিবেদনে প্রাথমিকভাবে কোম্পানিটির বড় ধরনের আর্থিক অনিয়ম, দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের তথ্য বেরিয়ে আসে।

এ বিষয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের (এফআইডি) অতিরিক্ত সচিব আব্দুল্লাহ হারুন পাশা গণমাধ্যমকে জানান, ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির ওপর প্রাথমিক অডিট হয়েছে। বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) পক্ষ থেকে এটা জানানো হয়েছে। আমরা পুরো রিপোর্টের সারাংশ আইডিআরএর কাছে চেয়েছি। এরপর তা পর্যালোচনা করা হবে। প্রয়োজনে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। এরপর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখন পর্যন্ত সারাংশ রিপোর্ট পাওয়া যায়নি।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, ব্যাংক ও বিমা খাতে অনিয়ম বেড়েছে। এর সমাধান দরকার। এসব বন্ধ করতে হলে সমাধান বের করতে হবে। ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স থেকে বিদেশে অর্থ পাচার হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে। এ ধরনের প্রমাণ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে।

প্রাপ্ত তথ্যমতে, সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। আইডিআরএ পরিচালক মো. শাহ আলম প্রতিবেদন নোট দেন।

প্রতিবেদন নোটে তিনি বলেন, ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে নিয়োগকৃত অডিট ফার্ম মেসার্স একনবীন চার্টার্ড অ্যাকাউটেন্ট একটি প্রভিশনাল ইনট্রিম রিপোর্ট তৈরি করে আইডিআরএর কাছে পাঠায়।

ওই রিপোর্ট পর্যালোচনায় দেখা গেছে, কোম্পানিটি প্রাথমিকভাবে ৩৬৮৭ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও দুর্নীতি এবং রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ক্ষতি করেছে। এই প্রতিবেদনে মানি লন্ডারিংয়ের মতো অপরাধ সংঘটিত হওয়ার বিষয়ে উল্লেখ রয়েছে।

এসব অপরাধ করেছে ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির স্থগিত পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ। এ সংক্রান্ত একটি চিঠি গত পহেলা ডিসেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগকে পাঠিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

সেখানে আরও বলা হয়, এ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে মানি লন্ডারিংয়ের মতো অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। সেটিও আইডিআরএর পক্ষ থেকে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগকে জানানো হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য সাবেক হুইপ উপাধ্যক্ষ আব্দুর শহিদ গণমাধ্যমকে বলেন, ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের অর্থ পাচার ও আত্মসাতের ঘটনার প্রতিবেদনটি কমিটির পক্ষ থেকে আরও বিশদভাবে খতিয়ে দেখা হবে। ব্যাংক-বিমাসহ আর্থিক খাতে যেসব অনিময় প্রকাশ হচ্ছে তা খতিয়ে দেখতে এর আগেও কয়েক দফা অর্থ মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের বলা হয়েছে। এ বিষয়টিও দেখা হবে।

প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানের গাড়ি খাতে সাবেক চেয়ারম্যান ও সিইও এবং পরিচালকরা তছরুপ করেছে আরও ৫ কোটি ২৬ লাখ টাকা। গাড়ি মেরামত বাবদ ৩২ লাখ ৫০ হাজার টাকা তছরুপ হয়। ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির সিইও-এর মৌখিক নির্দেশে কর অফিসের খরচের জন্য ৩ কোটি ৬৪ লাখ টাকা উত্তোলন করা হয়। ভুয়া আইনি খরচ দেখিয়ে কোম্পানির অ্যাকাউন্ট থেকে ৯২ লাখ টাকা তোলা হয়।

এছাড়া কোম্পানির খুলনা, বগুড়া ও রাজধানীর গুলশানে ডক্টরস ও ডিএলআই টাওয়ারের ফ্লোর ভাড়ার নামে কৌশলে প্রায় ৫৬ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়। আরও দেখা গেছে, চটগ্রাম ও ঢাকার বিভিন্ন হোটেলে প্রায় ৩৮ লাখ টাকার খাবারের ভুয়া বিল বানানো হয়। এছাড়া ভুয়া বিমার পলিসি তৈরি করে প্রথমে ২ লাখ টাকা, পরে ১১ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন সাবেক পরিচালক মো. সাইদুর রহমান।

এছাড়া দরপত্রের যথাযথ প্রক্রিয়া ও শর্ত অনুসরণ না করেই বিদেশি কোম্পানি হানসা সলিউশনস থেকে ৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকা মূল্যের আই-ওয়ান সফটওয়্যার কেনা হয়। একইভাবে কেনা হয় প্রায় ৭৮ লাখ টাকা মূল্যের ভি এমওয়্যার ভিএসপেয়ার সফটওয়্যার। এক্ষেত্রে তথ্যের গরমিল ও কেনায় অব্যবস্থাপনার মাধ্যমে দুর্নীতি হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির হিসাব থেকে প্রায় ১৯ কোটি টাকা দিয়ে পুঁজি বাজার থেকে লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশের শেয়ার কেনা হয়। পরে ওই শেয়ার লেনদেনে টাকা আত্মসাৎ হয়েছে। পাশাপাশি ২০১২ সাল থেকে অদ্যাবধি সরকারের ভ্যাট বাবদ ৩৫ কোটি টাকা এবং ট্যাক্স বাবদ ৩৩০ কোটি টাকা বকেয়া পরিশোধ করা হয়নি। এভাবে নানা কৌশলে এসব অর্থ লুটপাট করা হয়।

গ্রাহকের স্বার্থ ক্ষুণ্নের অভিযোগ তুলে চলতি বছরের অর্থাৎ ২০২১ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের পরিচালনা পর্ষদকে চার মাসের জন্য স্থগিত করে আইডিআরএ। তারপর ১০ জুন ডেল্টা লাইফের পরিচালনা পর্ষদের স্থগিতাদেশের মেয়াদ পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত অব্যাহত রাখার আদেশ জারি করে আইডিআরএ।

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:

ভালো লাগলে শেয়ার করবেন...

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ