গত বছর মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ১০ শতাংশ শেয়ার কেনার কথা জানিয়েছিল দ্য নরওয়েজিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড ফর ডেভেলপিং কান্ট্রিজ বা নরফান্ড। কিন্তু ব্যাংক কোম্পানি আইনানুসারে একক শেয়ারহোল্ডারের ভোটাধিকার সব শেয়ারহোল্ডারের সামগ্রিক ভোটাধিকারের ৫ শতাংশের বেশি হওয়ার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ ছিল। এজন্য ব্যাংকটি অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে ব্যাংক কোম্পানি আইনের সংশ্লিষ্ট ধারা থেকে অব্যাহতি চেয়েছিল। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগের পক্ষ থেকে প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে নরফান্ডকে ১০ শতাংশ শেয়ারের বিপরীতে একক শেয়ারহোল্ডার হিসেবে ১০ শতাংশ ভোটাধিকার দিয়ে ব্যাংক কোম্পানি আইনের সংশ্লিষ্ট ধারা পরিপালন থেকে অব্যাহতি দিয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আহমেদ জামাল স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ব্যাংক কোম্পানি আইন ১৯৯১-এর ১২১ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের উল্লেখযোগ্য শেয়ারধারক নরফান্ড কর্তৃক ব্যাংকটির ১০ শতাংশ শেয়ারে বিনিয়োগের বিপরীতে নরফান্ডকে একক শেয়ারহোল্ডার হিসেবে ১০ শতাংশ ভোটাধিকার দেয়ার জন্য ব্যাংক কোম্পানি আইন ১৯৯১-এর ১৪(১)(চ) ধারার বিধান পরিপালন থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হলো।
উল্লেখ্য, ব্যাংক কোম্পানি আইন ১৯৯১ ১৪(১)(চ) ধারায় বলা হয়েছে, সরকার ব্যতীত অন্য কোনো একক শেয়ারহোল্ডারের ভোটাধিকার সব শেয়ারহোল্ডারের সামগ্রিক ভোটাধিকারের শতকরা ৫ ভাগের বেশি হবে না।
এ বিষয়ে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনিস এ খান বলেন, ব্যাংক কোম্পানি আইনের কারণে প্রথমে নরফান্ড এমটিবির ৫ শতাংশ শেয়ারে বিনিয়োগ করেছিল এবং এর বিপরীতে ভোটাধিকারও পেয়েছিল। আর বাকি ৫ শতাংশ শেয়ারে বিনিয়োগের বিপরীতে ভোটাধিকার পেতে ব্যাংক কোম্পানি আইনের সংশ্লিষ্ট ধারা থেকে অব্যাহতি চেয়ে আমরা অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে আবেদন করেছিলাম। অর্থ মন্ত্রণালয় আমাদের আবেদন একবার প্রত্যাখ্যানও করেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমরা মন্ত্রণালয়কে নরফান্ডের বিনিয়োগের গুরুত্ব বোঝাতে সক্ষম হয়েছি। এখন বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনের ফলে এমটিবির শেয়ারে নরফান্ডের বিনিয়োগে আর কোনো জটিলতা থাকবে না। অবশ্য সর্বশেষ সমাপ্ত হিসাব বছরে ১১ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ প্রদানের কারণে নরফান্ডের শেয়ার সংখ্যা ১০ শতাংশের কিছু কম হবে বলে জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, গত বছরের সেপ্টেম্বরে এমটিবিতে বড় ধরনের বিনিয়োগের ঘোষণা দেয় নরফান্ড। নরওয়ের সরকারি তহবিল নরফান্ড এমটিবির বিদ্যমান শেয়ারের বাইরে নতুন করে ৬ কোটি ৩৭ লাখ ৭ হাজার শেয়ার ইস্যু করে ১৭৩ কোটি ২৩ লাখ ৭৪ হাজার ৮১৮ টাকার সমপরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করার কথা জানায়। প্রিমিয়ামসহ ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের প্রতি শেয়ারের দাম নির্ধারণ করা হয় ২৭ টাকা ১৯ পয়সা। এজন্য ব্যাংকটির সংঘস্মারকের কিছু ধারা পরিবর্তন, যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তরের (আরজেএসসি) অনুমোদন ও বিশেষ সাধারণ সভায় (ইজিএম) শেয়ারহোল্ডারদের মতামত গ্রহণের পাশাপাশি বিএসইসির কাছ থেকে শেয়ার ইস্যুর অনুমোদন নেয় এমটিবি।
২০১৮ হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ১১ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ দিয়েছে এমটিবি। আলোচ্য সময়ে ব্যাংকটির সম্মিলিত ইপিএস হয়েছে ৩ টাকা ৩ পয়সা। ৩১ ডিসেম্বর সম্মিলিত এনএভিপিএস দাঁড়ায় ২৩ টাকা ১৬ পয়সা।
শেয়ারবার্তা / হামিদ