বিদ্যুতের সঞ্চালন মূল্যহার ৫০ দশমিক ৭৭ শতাংশ দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব দিয়েছে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি)। এদিকে নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি ৬ দশমিক ৯২ শতাংশ মাশুল বৃদ্ধি যুক্তিযুক্ত মনে করেছে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) অডিটোরিয়ামে পিডিবি ও পিজিসিবির প্রস্তাবিত পাইকারি বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবের ওপর শুনানিতে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) এ প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়।
শুনানির শুরুতে সঞ্চালন মাশুল বৃদ্ধির পক্ষে প্রস্তাব উপস্থাপন করেন পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি)-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম কিবরিয়া। তিনি বলেন, প্রস্তাব অনুমোদন না পেলে সম্ভাব্য ক্ষতির শিকার হবে পিসিজিবি। এতে নেটওয়ার্ক পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজের গুণগত মানে প্রভাব পড়বে। তখন অপারেশন ও রক্ষণাবেক্ষণ খাতে বাজেট কাটার প্রয়োজন হবে।
পিজিসিরি’র এমডি আরো উল্লেখ করেন, অনুমোদন না পেলে সরকার ও দাতা সংস্থাগুলোর ঋণ ও সুদের বিশাল অঙ্কের টাকা নিয়মিতভাবে পরিশোধ করা সম্ভব হবে না। ফলে অদূর ভবিষ্যতে পিজিসিবির ঋণ পরিশোধে অক্ষম একটি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে মূল্যায়ন কমিটির উপ-পরিচালক (ট্যারিফ) মো. কামরুজ্জামান জানান, ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে পিজিসিবির নিট রাজস্ব চাহিদা প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টায় শূন্য দশমিক ২৯৮০ টাকা। বিদ্যমান গড় সঞ্চালন মূল্যহার প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টায় শূন্য দশমিক ২৭৮৭ টাকা। রাজস্ব চাহিদা মূল্যয়ন করে কারিগরি কমিটি মনে করছে, ২০২০ সালে পিজিসিবির সঞ্চালন চার্জ প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টায় শূন্য দশমিক ০১৯৩ টাকা বা ৬ দশমিক ৯২ ভাগ বাড়ানো যেতে পারে।
এ সময় ক্যাবের উপদেষ্টা অধ্যাপক শামসুল আলম, মুঠোফোন গ্রাহক সমিতির সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, বিজিএমইএ’র প্রতিনিধি আনোয়ার হোসেন চৌধুরী, বিকেএমইএর সজিব হোসেন, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, সিপিবি নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্সসহ আরও কয়েকজন ভোক্তা প্রতিনিধি দাম বাড়ানোর প্রস্তাবের বিরোধিতা করে বক্তব্য দেন। এছাড়া ইআরসির চেয়ারম্যান মনোয়ার ইসলাম, সদস্য মিজানুর রহমান, আব্দুল আজিজ, রহমান মুরশেদ ও মাহমুদউল হক ভূইয়া শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে আজ পাইকারি বিদ্যুতের ওপর শুনানি হলেও আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে শুরু হবে গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের মূল্য বাড়ানোর জন্য বিতরণ কোম্পানিগুলোর প্রস্তাবিত দামের ওপর শুনানি। প্রথমদিন সকাল ১০টায় শুরু হবে পিডিবির গ্রাহক পর্যায়ের মূল্যহার পরিবর্তনের ওপর শুনানি। একই দিন দুপুর ২টায় শুরু হবে নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের (নেসকো) শুনানি। ২ ডিসেম্বর সকালে অনুষ্ঠিত হবে ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ডিপিডিসি) এবং দুপুরে ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের (ডেসকো) শুনানি। এরপর ৩ ডিসেম্বর সকালে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) এবং দুপুরে ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ওজোপাডিকো) গ্রাহক পর্যায়ের মূল্যহার পরিবর্তনের ওপর গণশুনানি হবে।
শেয়ারবার্তা / হামিদ